সত্যিই কি আমরা সচেতন?
প্রকাশ : ২৯ আগস্ট ২০১৬, ১৮:২৪
আমরা এখন ক্রমাগত এতটাই ভয়াবহ অবস্থার সম্মুখীন হচ্ছি যে প্রতিটা দিন কারও না কারও জন্য শোকের বার্তা বয়ে নিয়ে আসছে। আফসানা হত্যা? সে তো রহস্য! রিশা হত্যা? সেতো নিছক ছুরি নিয়ে খেলা! তনুর কথা না-ই বা বললাম। জানিনা আরও কত তনু, রিশা, আফসানা অপেক্ষা করছে অকাল মৃত্যুর জন্য।
আমরা কেন পেরে উঠছি না? অবহেলা, ভয় নাকি সংকোচ? প্রতিবাদের কোনো সীমারেখা হয় না। ভুক্তভোগী কি শুধু একজন বা দুইজন? তাতো নয়। ব্যক্তি থেকে সমাজ, সমাজ থেকে পুরো রাষ্ট্রে ভাইরাসের মত অতি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে অপরাধ। আর সৃষ্টির শুরু থেকে নারীরা কেবল শোষণের জন্য সৃষ্টি হয়েছে সেই মনোভাব ছিল আর এখন আবার তার প্রতিফলন আমরা একটু বেশিই দেখতে পাচ্ছি।
আমরা সচেতনতার গল্প করি, জাগরণের কথা বলি। সচেতনতা মানে শুধু ব্যাক্তিগত সচেতনতা নয়, বরং ব্যক্তিগত, সামাজিক এবং রাষ্ট্রীয় উপলব্ধির প্রতিফলন। আমরা বলি ইভটিজিং বন্ধে সচেতন হতে হবে, নারীদের সমঅধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। কিন্ত, বাস্তবায়ন? কোথায়? গর্বের সাথে বলা যেতে পারে আমাদের দেশে পরিকল্পনার কোনো অভাব নেই কিন্ত মাথা নিচু করে বলতে হয় বাস্তবায়নের বড়ই অভাব। সমস্যার তো শেষ নেই, আর সমাধানও আলবৎ আছে। যেখানে গোঁড়ায় গলদ সেখানে তো গোঁড়া থেকেই শুরু করতে হবে। গণতন্ত্রের কথা বলেই গণসচেতনতা বাড়ানো যায় না, রাষ্ট্রের ভূমিকাই মূখ্য দাঁড়ায় যখন সাধারণ মানুষ কোনো অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে হুমকির সম্মুখিন হয়। প্রতিষ্ঠিত আইন তো অনেক আছে, শুধু তা প্রয়োগ, কিছু অত্যাবশ্যকীয় আইন প্রণয়ন ও ধারাবাহিকভাবে বাস্তবায়নের জন্য গোঁড়া থেকে সচেতনতা অবশ্যক।
চুপ করে থাকাটা কোনো সমাধান কোনোদিনও দিতে পারেনি। প্রতিবাদ অব্যাহত রাখলে প্রতিরোধ সম্ভব। ভুক্তভোগীরা মুখ বুজে থাকলে তো আইন কোন সহায়তা করতে পারবে না। আইনের কাছ থেকে ন্যায়বিচার আদায় করে নিতে হবে, বাস্তবিকপক্ষে আদায় করে নিতে জানতে হবে।
ঘাড়ে বসে কাঁঠাল ভেঙে খাওয়ার মত লোক যেমন আছে, ঘাড় থেকে সেইসব কুলাঙ্গারদের নামানোর ব্যবস্থাও আমাদের আইনে আছে। আর নয়। দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাবার পর উদ্বুদ্ধ হওয়াটা কাম্য নয়। জাগুন, উঠুন, প্রতিবাদ করুন। কারণ দুনিয়াটা শক্তের ভক্ত নরমের যম!
লেখক: বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী