যুক্তরাষ্ট্রে যৌন নির্যাতনের বিচার চাইলেন নারী পুলিশ
প্রকাশ : ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬, ১৬:৫৬
আট বছরের এক শিশুকে যৌন হয়রানির অভিযোগে প্রথম কারাগারে যান যুক্তরাষ্ট্রের লুসিয়ানার নাগরিক এরলিস চেইসন (ছদ্মনাম)। ১৯৯৪ সালে তিনি মুক্তি পান। কিন্তু ৪৭ বছর বয়সী এরলিস হয়তো বাকি জীবনটা মুক্তভাবে কাটাতে পারতন, যদি না টেক্সাসের এক নারী পুলিশ কর্মকর্তা তার বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ না আনতো।
প্রকৃত পক্ষে, তারা দু’জন আত্মীয়। আর তাদের দু’জনের অতীত ভয়ঙ্করভাবে মিলে যায়। ওই নারী পুলিশ কর্মকর্তার বয়স যখন আট তখন থেকে টানা চার বছর তার ওপর যৌন নির্যাতন চালায় চেইসন। এই ঘটনার বেশ কয়েক বছর পর পুলিশ কর্মকর্তা হন ওই নারী। নির্যাতনের ১৫ বছর পর ২০১৪ সালে ওই নারী চেইসনের সঙ্গে দেখা করেন এবং গোপনে তাদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা রেকর্ড করেন। ওই পুলিশ কর্মকর্তা তার বক্ষবন্ধনীর ভেতর টেপ রেকর্ডার রেখে পুরো আলোচনাটি রেকর্ড করে। দুই ঘণ্টার রেকর্ডে চেইসন তার সঙ্গে কী কী করেছিলেন তার বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেন। এই ঘটনার জন্য ওই নারীকেই দোষারোপ করেন চেইসন।
চেইসন নিজের প্রশংসা করে বলেন, ‘এটা তো স্বীকার করো আমি তোমার কুমারিত্ব হরণ করিনি। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, চেইসন একাধিক বার যৌন হয়রানির কথা স্বীকার করেছেন। এই কারণে বাকি জীবন তাকে কারাগারে থাকতে হতে পারে বলে সম্প্রতি বিচারকদের একটি বোর্ড এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।’
যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক গণমাধ্যম দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট ভিকটিম এবং নির্যাতনকারী কারো নামই প্রকাশ করেনি। কয়েক বছর আগে ওই নারী তার কিছু ব্যক্তিগত কারণে থেরাপি নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তিনি এখন অবসেসিভ কম্পালসিভ ডিজঅর্ডারে ভুগছেন। যার কারণে তিনি কারো সঙ্গে রোমান্টিক কোনো সম্পর্কে জড়াতে পারছেন না। এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব বিষয় বলেন।
তিনি বলেন, ‘আমি চাকরি করি আইন প্রয়োগকারী সংস্থায়। আমার দায়িত্ব জনগণকে রক্ষা করা। আমি যদি নিজেকেই রক্ষা করতে না পারি তাহলে মানুষকে কীভাবে রক্ষা করব?’
২০১৪ সালে ২৫ বছর বয়সী নারী পুলিশ কর্মকর্তা যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাকলেনানা কাউন্টি শেরিফের গোয়েন্দা ব্র্যাড বন্ডের কাছে তার নির্যাতনের বিষয়ে সবকিছু খুলে বলেন। পরে তারা দুজন মিলে সিদ্ধান্ত নেন চেইসনের বক্তব্য রেকর্ড করবেন। এরপর চেইসনের বাসায় গিয়ে আলাপ জমান ওই নারী পুলিশ। দুই ঘণ্টা ধরে চলে তাদের আলাপ। নারী পুলিশ কর্মকর্তা কৌশলে চেইসনের কাছ থেকে অতীতের সব কথা রেকর্ড করেন। রেকর্ড করা কথাবার্তা আদালতের বিচারকের সামনে পেশ করা হয়।
গত ২৬ আগস্ট ( শুক্রবার) চেইসনের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণিত হয়। যদিও আদালত এখনও রায় ঘোষণা করেনি। তবে শিশু নির্যাতনের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের আইন অনুযায়ী তার ৪২ বছর কারাদণ্ড হতে পারে বলে ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। ৪২ বছর পর চেইসনের বয়স হবে ৮৯ বছর।