ফেসবুকে বন্ধু হয়ে স্কুলছাত্রীকে গণধর্ষণ
প্রকাশ : ১৯ ডিসেম্বর ২০১৬, ১৯:২৭
ফেসবুক-বন্ধুদের গণধর্ষণের শিকার হয়েছে ভারতের এক কিশোরী। রবিবার (১৮ ডিসেম্বর) ভোররাতে ঘটনার অভিযোগে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগনার জগদ্দল থেকে দুই যুবককে গ্রেপ্তার করেছে বিধাননগর উত্তর থানার পুলিশ।
অভিযুক্ত বিরাট ঠাকুর এবং শিবম পাণ্ডেকে এদিন বিধাননগর এসিজেএম আদালতে তোলা হলে পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে বিচারক।
দ্য টেলিগ্রাফ ইন্ডিয়ার খবরে বলা হয়, মেডিকেল পরীক্ষায় গণধর্ষণের প্রমাণ মিলেছে।
কিশোরীটি একটি স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্রী। ফেসবুক তার 'নেশা' বললেই চলে। সেই ফেসবুকের সূত্র ধরেই ধর্ষক বিরাটদের সঙ্গে তার পরিচয়। বিরাট থাকে জগদ্দলের মেঘনা মোড়ে। তার বন্ধু শিবমের বাড়ি স্থানীয় একটি চটকলের আবাসনে। ফেসবুকে বেশ কয়েক মাস কথাবার্তা চালায় ওই তিনজন। বন্ধুত্ব গাঢ় হলে নিজেদের মোবাইল নম্বরও পরস্পরকে দেয়।
পুলিশ জানিয়েছে, বুধবার (৩০ নভেম্বর) ওই কিশোরীকে ফোন করেছিল বিরাট। কিছুক্ষণ কথা বলার পর দেখা করতে চায় সে। প্রথমে রাজি না থাকলেও পরে বিরাটের প্রস্তাবে রাজি হয় ওই কিশোরী। ঠিক হয়, বিধাননগর স্টেশনে দেখা করবে তারা। পরিকল্পনা অনুযায়ী, পড়তে যাচ্ছে বলে দুপুরের পর বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায় ওই কিশোরী।
বিকেলে স্টেশনে নির্ধারিত জায়গায় বিরাটের সঙ্গে দেখা করে ওই কিশোরী। স্টেশনে বসে কিছুক্ষণ গল্পগুজব করার পর কিশোরীকে জগদ্দল যাওয়ার প্রস্তাব দেয় বিরাট। সে প্রস্তাবেও রাজি হয়ে যায় ওই কিশোরী। সন্ধ্যার মুখে জগদ্দল পৌঁছায় তারা। রাত পর্যন্ত জগদ্দলের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে বেড়ায় তারা।
এরই মধ্যে তাদের সঙ্গে দেখা হয় আরেক ধর্ষক শিবমের। তবে শিবমের সঙ্গে এই সাক্ষাৎ নেহাতই ঘটনাচক্রে না কি পরিকল্পনা করেই বিরাট তাকে সেখানে আসতে বলেছিল, তা অবশ্য এখনো স্পষ্ট নয় তদন্তকারীদের কাছে।
পুলিশ জানিয়েছে, জগদ্দলের একটি চটকলের পরিত্যক্ত আবাসনে ওই কিশোরীকে নিয়ে গিয়েছিল বিরাট এবং শিবম। ওই আবাসনেরই কুলি লাইনের একটি পরিত্যক্ত ঘরে নিয়ে গিয়ে বিরাট এবং শিবম একাধিকবার ধর্ষণ করে তাকে। ওই কিশোরীর মোবাইল ফোনও কেড়ে নেয় তারা। কিশোরীর বক্তব্য অনুযায়ী, এরপর তাকে ওখানেই ফেলে রেখে পালিয়ে যায় বিরাট এবং শিবম।
সারারাত ওই কিশোরীর পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন জায়গায় খোঁজখবর করলেও পুলিশের কাছে যাননি। বৃহস্পতিবার (১ ডিসেম্বর) কোনোভাবে বাড়ি ফিরে আসে ওই কিশোরী। পরিবারের কাছে পুরা ঘটনাটি জানায় সে। ওই দিনই বিকেলে বিধাননগর উত্তর থানায় অভিযোগ দায়ের করে ওই কিশোরীর পরিবার।
সেই অভিযোগের ভিত্তিতে গণধর্ষণের মামলা করে তদন্ত শুরু করে বিধাননগর উত্তর থানার পুলিশ। মোবাইল ফোন পরিষেবা দানকারী সংস্থার সাহায্যে কিশোরীর মোবাইল ফোনের 'কল ডিটেলস' জোগাড় করে পুলিশ। দুই অভিযুক্তের মোবাইল নম্বর পায়। ফোনের 'টাওয়ার লোকেশন' দেখে একাধিক জায়গায় হানা দিলেও এত দিন বিরাট এবং শিবমের খোঁজ মেলেনি। অবশেষে এদিন ভোরে দুজনকেই জগদ্দল এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। বিরাটের কাছ থেকে উদ্ধার হয় ওই কিশোরীর মোবাইল ফোনটিও।