লিফট নাকি মরণফাঁদ!

প্রকাশ : ১৫ অক্টোবর ২০১৮, ২৩:১৬

১৩ অক্টোবর রাত থেকে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি যে প্রশ্নের সম্মুখীন হয়েছি সেটা হচ্ছে, 'এখন ঠিক আছো তো?'। এই প্রশ্ন করার কারণ ইতোমধ্যেই অনেকে জানেন। অন্ধকার লিফটে প্রায় ঘন্টাখানেক আটকে থাকার কারণেই সবার এই প্রশ্ন। বলা বাহুল্য সব প্রশ্নই যে আমার বা আমাদের প্রতি সহানুভূতিশীল হয়ে ছিল তা না। অনেকেই লেখা পড়ে পরিস্থিতির বাস্তবতা আঁচ না করেই অদ্ভুত অদ্ভুত সব মন্তব্য ও পরামর্শ দিচ্ছিলেন। সবার এতো প্রশ্ন দেখে গতকালই ঠিক করে রেখেছিলাম আগে ঘটনার যে বর্ণনা দিয়েছিলাম সেটাই আরেকটু বিশদ আকারে লিখবো। কিন্তু আমি যেহেতু এতো সেলিব্রেটিপনায় অভ্যস্ত নই তাই কাল সারাদিন ধরে নিজের দৈনন্দিন কাজের সাথে এতসব ফোন, মেসেজ আর প্রশ্নের বাণ সামলাতে হয়েছে যে আমি সেগুলোর উত্তরই ঠিক করে দিতে পারিনি। সেখানে আবার এ নিয়ে লিখতে ক্লান্ত লাগছিল। তাই দেরীতেই লিখছি।

১৩ অক্টোবর রাত সোয়া ৯টার দিকে আমরা ৩ জন ধানমন্ডি ১ এর হাসপাতাল (আড়ং এর পেছনে) থেকে বের হয়ে কফি খাওয়ার জন্য সায়েন্স ল্যাব মোড় এর আড়ং এর উপরে ফিফথ ফ্লোরের দুয়ারীতে যাই। আমরা যখন ওখানে যাই তখন আমরা ছাড়া আরেকজন ভাইয়া ও আপু ছিল ওখানে। আমরা ৩ জনই কফি খেয়ে ১০টার একটু পরে বের হই। ক্যাশ ক্লোজ হয়ে যাচ্ছে তাই বাকি দুজনও আমাদের সাথেই বেরিয়ে পড়েন। আমরা ৫জন একসাথেই বের হয়ে লিফটে উঠি। কিন্তু ফিফথ ফ্লোর থেকে লিফটে উঠার পর কিছুক্ষণের মধ্যেই ইলেক্ট্রিসিটি চলে যায় এবং লিফটটি ফোর্থ ফ্লোর ও থার্ড ফ্লোরের মাঝামাঝি এসে বন্ধ হয়ে যায়।

লিফট বন্ধ হবার সাথে সাথে আমাদের প্রথম রিয়েকশন ছিল যে নিশ্চয়ই এখনি জেনারেটর ছাড়া হবে এবং লিফট চলতে শুরু করবে। কিন্তু জেনারেটর এর আওয়াজ পাবার পরেও যখন দেখা গেলো লিফট চলছে না তখন আমরা একটু অবাকই হলাম। লিফটের মধ্যে থাকা ইমারজেন্সি অ্যালার্ম বাটনে চাপ দিয়েও কোন কাজ হলো না। চোখ পড়লো লিফটের ভেতরে স্টিকার লাগানো লিফট সংক্রান্ত ইমারজেন্সি সার্ভিসম্যান এর নাম ও ফোন নম্বরের তালিকায়। সেই তালিকা থেকে প্রথমজনকে ফোন দেয়া হলো, তিনি জানান তিনি এখন ডিউটিতে নেই এবং তৃতীয়জনকে ফোন দিতে বলেন। তৃতীয়জনকে ফোন দেয়ার পর তিনি দেখছি বলে ফোন রেখে দেন। তার সেই 'দেখছি' এর উপর খুব একটা ভরসা করা যাচ্ছিল না তাই আমরা ভাবতে লাগলাম দায়িত্বশীল কাউকে জানানো প্রয়োজন। দুয়ারীর কোন কন্ট্যাক্ট নাম্বার ছিল না আমাদের কাছে। চোখ পড়লো আমাদের ৩ জনের সাথেই লিফটে উঠা ঐ আপুর হাতে আড়ং এর ব্যাগ এর দিকে। এরপর আড়ং এর নাম্বারে ও ওখানে গ্রামীণ ইউনিকলো এর নাম্বারে ফোন দেই কিন্তু তারা কেউ কোন সদুত্তর দিতে পারে না। সাথের ঐ ভাইয়া আপু তখন তাদের ড্রাইভারকে ফোন করে সিকিউরিটিকে ইনফর্ম করতে বলেন। কিন্তু দেখা যায় তারাও আসলে তেমন কিছুই করতে পারছে না। তখন আমরা ৯৯৯ এ ফোন দেই। সেখান থেকে ফায়ার সার্ভিস এর সাথে কথা বলা হয়। তারা বলেন তারা দেখছেন কি করা যায়। এরপর আমরা আশা নিয়ে বসে থাকি যে ফায়ার সার্ভিস যেহেতু কাছেই আছে দ্রুতই চলে আসবে অথবা অন্য কোন উপায় হবে এবং শীঘ্রই আমরা মুক্তি পেতে যাচ্ছি।

এর মধ্যে ঐ ভাইয়া আপু তাদের ড্রাইভার এর সাথে কথা বলেন এবং জানতে পারেন যে লিফটের সাথে জেনারেটর এর কানেকশন নেই শুধু আড়ং এর শোরুমের ভেতরে সার্ভিস আছে। আর যিনি বিল্ডিং এর সুপারভাইজার তিনি লিফট সহ যাবতীয় সকল চাবি নিয়ে বাড়ি চলে গেছেন তাকে ফোনে পাওয়া যাচ্ছে না। ইলেকট্রিসিটি না আসা পর্যন্ত এই সমস্যার সমাধান সম্ভব নয় বলেও নিচ থেকে জানানো হয়। এ কথা শোনার পর আমাদের অভিব্যক্তি ছিল মানে কী? লিফট এর সাথে জেনারেটর এর কানেকশন নেই এই কথাটা অবিশ্বাস্য মনে হচ্ছিল। আর ইলেকট্রিসিটি না আসা পর্যন্ত যদি সমাধান না হয় তার মানে সারা রাতে বিদ্যুৎ না এলে আমরা কী সারারাত এখানেই থাকবো?

আমাদের সামনে তখন একটাই আশার আলো ছিল সেটা হচ্ছে ফায়ার সার্ভিস এর জন্য অপেক্ষা করা। কিন্তু আধা ঘন্টা হয়ে যাওয়ার পরেও যখন ফায়ার সার্ভিস এর আসার কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছিল না, কেউ কোন সমাধান করতে পারছিল না এবং সাফোকেশন বাড়ছিল তখন আমাদের মতো সাহসী মানুষদেরও কিছুটা ভয় জেঁকে ধরলো! ভয় পাওয়ার পেছনে অন্যতম কারণ ছিল এই শহরটাকে আমরা সবাই খুব ভালোমতন জানি। এখানে যে পদে পদে কতরকম মৃত্যুফাঁদ পাতা থাকে আর চাইলেই যে এখানে হাসতে হাসতেও লাশ হয়ে যাওয়া কোন ব্যাপার নয় সেটাও আমাদের ভালো করেই জানা ছিল। আমার হার্ট এর সমস্যার কারণে এরকম সাফোকেশনে আমার তখন অবস্থা খারাপ হয়ে যাচ্ছিল। বড় বড় করে শ্বাস নিচ্ছিলাম, বুকে চাপ লাগছিল। আমরা বাতাস চলাচল এর জন্য লিফটের সামনের দরজাটাও খুলে দিয়েছিলাম। কিন্তু যেহেতু আমরা দুই ফ্লোরের মাঝে আটকা পড়েছিলাম তাই আমাদের সামনে ছিল কংক্রিটের দেয়াল এবং লিফটের দরজা খুলে দেয়ার পরেও আসলে তেমন কোন লাভ হয়নি। আর তখনই আমার মনে হয় এই সমস্যার দ্রুত সমাধান করতে হলে আমাদের অবস্থা সম্পর্কে আরো বেশি মানুষকে জানানো দরকার। তাই তখন আমি ফেসবুকে হেল্প চেয়ে পোস্ট দেই যে যদি কেউ কোনভাবে হেল্প করতে পারেন।  

ফায়ার সার্ভিস তখনো এসে না পৌঁছায় আমরা বুঝে নেই এই অবস্থা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য ইলেক্ট্রিসিটি আসা ছাড়া অন্য কোন উপায় নেই। তখন ঐ ভাইয়া ইলেক্ট্রিক বোর্ডের নাম্বার ম্যানেজ করে সেখানে ফোন দেন। তারা বলে ধানমন্ডি শাখায় ফোন দিতে। আমার সাথে থাকা সাকিল ধানমন্ডি শাখায় ফোন করার পর সেখান থেকে আবার বলা হয় এটা তাদের আওতায় না, আজিমপুর শাখায় ফোন দিতে। আজিমপুর শাখায় ফোন করার পর তারা বলেন এটা তাদের আওতায় না, জিগাতলা শাখায় ফোন দিতে। ততক্ষণে আমাদের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে গেছে। সাকিল ওনাকে বলে, "ভাই আমরা একজনের পর একজনকে ফোন করে যাচ্ছি আর সবাই বলছেন আরেকজনকে ফোন দিতে। কিন্তু কেউ উদ্ধার করছে না, কোন সমাধান দিচ্ছে না। আমরা আর কতজনকে ফোন করবো?" তো এই কথায় হয়তো ওনার মায়া হয় এবং ওনি বলেন যে জিগাতলা অফিসে ফোন দিয়ে দেখতে যদি সমাধান না হয় তাহলে ওনি চেষ্টা করবেন।

এরপর আমরা জিগাতলা শাখায় ফোন দেই কিন্তু সেখানে কেউ ফোন ধরে না। এর মধ্যে আজিমপুর শাখার ব্যক্তি আবারও ফোন দেন এবং জানতে চান সমাধান হয়েছে কিনা। হয়নি শুনে তিনি বলেন তিনি ব্যাপারটা দেখছেন। আরো ১০ মিনিট সময় লাগতে পারে। আমাদের কাছে তখন ১০ মিনিট মানে অনেক সময়।

এর মধ্যে আমাদের ফোন পেয়ে নিচে আমাদের অনেক মানুষ চলে এসেছে। তাদের চিৎকার চেঁচামেচি শোনা যাচ্ছে কিন্তু কেউই কিছু করতে পারছিল না। আমরা নিজেরাও বের হবার কিছু চেষ্টা করি। কিন্তু ব্যর্থ হই। এভাবে আরো ১০/১৫ মিনিট যায়। ততক্ষণে সাকিলের ফোনে চার্জ শেষ, কারো ব্যালেন্স শেষ, আমার ফোনে নেট কাজ করছিল না। অবশেষে রাত ১১টায় আজিমপুর শাখার ঐ ব্যক্তির বদৌলতে বিদ্যুৎ ফিরে আসে এবং লিফট চালু হয়। আমরা লিফট থেকে বের হয়ে গেটে পৌঁছে দেখি তখন ফায়ার সার্ভিস এসে মাত্র পৌঁছেছে। ফায়ার সার্ভিস এর ওনাদের কাছে আমরা তখন পরিস্থিতি সব খুলে বলি। ওনারা এভাবে অভিযোগ গ্রহণ না করলেও আমাদের চাপে ওনারা সিকিউরিটি ইনচার্জকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। কেন লিফটের সাথে জেনারেটর এর কানেকশন নেই? কেন বিল্ডিং এর সকল কর্মী, গ্রাহক চলে যাওয়ার আগেই বিল্ডিং এর সুপারভাইজার চাবি নিয়ে বাড়ি চলে গেলো? ইত্যাদি।

লিফটে আটকা পড়া নিয়ে এর আগে অনেকের গল্প শুনেছি। সেদিন নিজের অভিজ্ঞতার পরে বুঝতে পারলাম দীর্ঘসময় এভাবে আটকে থাকার অনুভূতি আসলে কেমন। লিফটে বসেই আমরা ভাবছিলাম আজ ভাগ্য ভালো যে আমাদের মধ্যে কোন অ্যাজমার পেশেন্ট কিংবা বয়স্ক বা শিশু বা গুরুতর অসুস্থ কেউ ছিলেন না। নইলে পরিস্থিতি আরো ভয়ংকর হতে পারতো। ঐ অবস্থায় যেকোনো দুর্বল চিত্তের মানুষের পক্ষেই প্যানিক অ্যাটাক হওয়া অস্বাভাবিক কিছু না। আমরা তো তবু ৫ জন ছিলাম। কেউ একা আটকা পড়লে তার অবস্থা কেমন হতো কেউ ভাবতে পারেন? রাজধানীর একটা গুরুত্বপূর্ণ স্থানে একটা এতো বড় মার্কেট আর এতো ঝাঁ চকচকে শোরুম অথচ সেখানে লিফটের সাথে জেনারেটর এর কানেকশন থাকবে না এটা কি কেউ ভাবতে পারে! 

বের হয়ে আসার পর যখন একটু ধাতস্থ হই, অনেকের সাথে এ নিয়ে কথা বলার পরে মনে হলো, আমাদের কাছে তবু স্মার্টফোন ছিল, ইন্টারনেট ছিল, মোবাইলে ব্যালেন্স ছিল। আর সবচেয়ে বড় কথা আমাদের নিজেদের নেটওয়ার্ক ভালো ছিল মানে অনেক জানাশোনা ছিল। তাই আমরা এতগুলো মানুষের কাছে ফোন করে পৌঁছাতে পেরেছি এবং একটা সমাধান করতে পেরেছি। একজন সাধারণ মানুষ যার এতো জানাশোনা নেই, মোবাইলে ব্যালেন্স নেই সে কাকে ফোন করতো? কয়জনকে ফোন করতো? এতগুলো মানুষকে আমরা ফোন করলাম কেউ নিজ উদ্যোগে এর সমাধানের জন্য কাউকে ফোন করলো না! বরং আমাদেরই বারবার বলা হচ্ছিল একে ফোন করুন, ওকে ফোন করুন। যারা এভাবে ফোন করতে বলছিলেন কিংবা ঐ মার্কেটে যারা ব্যবসা করেন তারা কি নিশ্চিত তারা নিজেরা কিংবা তাদেরই প্রিয়জন কেউ এমন পরিস্থিতিতে পড়বেন না? আর লিফটের মতো ইমারজেন্সি একটা ব্যাপারে জেনারেটর এর সাথে কানেকশন ছাড়া চলে কার অনুমতিতে? কার অবহেলায়?

যাই হোক, শেষ পর্যন্ত যে সবাই নিরাপদে ফিরতে পেরেছি সেটাই এখন অনেক বড় পাওনা মনে হয়। আমরা ধানমন্ডি মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি এই ঘটনায়। জিডি নং ৬৫৫, তারিখ ১৩ অক্টোবর ২০১৮। তদন্ত কর্মকর্তা এস আই হাশেম আলী এর দায়িত্বে আছেন। অনেকে ফোন করেছেন কেন জিডি করেই ছেড়ে দিলাম, মামলা করলাম না? কেউ আবার বলছেন কেন বের হয়েই ওখানের সবাইকে মেরে তক্তা বানালাম না? ভাঙচুর করলাম না? ইত্যাদি। সেসময় আমরা বা আমাদের সাথের যে ক'জন মানুষ নিচে ছিলেন সবাই মিলে সেখানে ভাঙচুর চালানো কিংবা কাউকে মেরে তক্তা বানানো কোন ব্যাপার ছিল না। কিন্তু তাতে কি লাভ হতো? যারা বলছেন আমরা মারামারি না করলে এসব ঘটনা চলতেই থাকবে তারা কি নিশ্চিত সেখানে ভাঙচুর করলে, চুনোপুঁটি কাউকে মেরে তক্তা বানালে এই ধরণের ঘটনা বন্ধ হয়ে যেতো? বরং এর প্রেক্ষিতে সেই চুনোপুঁটিদেরই চাকরি যেতো, রাঘব বোয়ালেরা নিশ্চিন্তেই থাকতো। তার চেয়ে আইনের পথে হাঁটাই কি উত্তম নয়? জিডি না করে কেন মামলা করেছিও এই কারণেই যে তদন্ত কর্মকর্তা এস আই হাশেম আলীও আমাদের যথেষ্ট আশ্বস্ত করেছেন সব ধরণের সহযোগিতার ব্যাপারে এবং এখন পর্যন্ত তিনি তার কথায় অটুট আছেন। তাছাড়া ফায়ার সার্ভিস ও রাজউককেও জানানো হয়েছে এ ব্যাপারে কারণ ভবন নির্মাণ ও এর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তারাই কাজ করেন। মেরে ফেলা, কেটে ফেলা, ভেঙে ফেলা আর যাই হোক কোন সমস্যার সুস্থ সমাধান হতে পারে না।  

শেষে একটা কথাই বলি। ঐ পরিস্থিতিতে আমি প্রথম যখন ফেসবুকে হেল্প চেয়ে পোস্ট দেই তখন আমি ধরেই নিয়েছিলাম হাতে গোণা কয়েকজনের বেশি তেমন কেউ সাড়া দিবেন না। কিন্তু আমি এতো মানুষের কাছ থেকে সাড়া পেয়েছি যেটা অবিশ্বাস্য। এতো মানুষের ভালোবাসা ও আশীর্বাদ যে আমার সাথে জড়িয়ে আছে আমি জানতামই না! যারা বলছেন ফেম সিকিং এর জন্য নিজে উদ্ধারের উপায় না খুঁজে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছিলাম আমি মনেপ্রাণে চাইবো আপনাদের যেন কখনো এমন বিপদে পড়তে না হয় আর পড়লেও ফেসবুকে পোস্ট দিলে যেন আপনার বন্ধু ও ভালোবাসার মানুষেরা আপনার সহযোগিতায় এগিয়ে আসে। যারা দুঃসময়ে খোঁজ নিয়েছেন, সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছেন তাদের সকলের জন্য ভালোবাসা ও কৃতজ্ঞতা। সবাই যেকোনো লিফট ব্যবহারে সতর্ক থাকুন। নিরাপদে থাকুন, সুস্থ থাকুন।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত