বৈষম্য ফ্যাক্ট
প্রকাশ : ১৬ জানুয়ারি ২০১৮, ১৫:৫৪
একটা শর্ট ফিল্মেই যে দুটি নাম কমবেশি সবার মুখস্থ হয়ে গেছে তা হল 'রাহাত' এবং 'সাব্বির'। আমার ধারনা সবাই এটাকে ব্যক্তি পর্যায়ের বিপর্যয় হিসেবে দেখছে কারন ওই ছেলে দুটোর ছবিকে এডিট করেই ট্রল করা হচ্ছে। কিন্তু আমি ব্যপারটাকে জাতীয় পর্যায়ের বিপর্যয় হিসেবেই দেখছি। দেহের ভিতরে রোগ থাকলে বাইরে যেমন তার উপসর্গ দেখা দেয় ঠিক তেমনি এটাও জাতীগতভাবে পালিত রোগের উপসর্গ মাত্র।
হয়ত এরকম কাজ অন্য নামে আরো হবে, কারণ ডালপালা ছেঁটে হয়ত গাছের সাময়িক বৃদ্ধি বন্ধ করা যায় কিন্তু খানিক পরেই সে ডালপালা আবার বাড়তে শুরু করে। তবে আশার কথা হল দেরিতে হলেও আমরা সমস্যাটা উপলব্ধি করতে পারছি, যার বড় প্রমাণ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। যতক্ষন না পর্যন্ত একটা বিষবৃক্ষকে সমূলে উৎপাটন করা হচ্ছে ততক্ষন সে বৃক্ষ বিষ ছড়াবেই।
তাহলে এই সমস্যার মূলটা কোথায়? আমি বলব শিক্ষা ব্যবস্থায় আর ভয়ংকর সমাজ ব্যবস্থায়। শিক্ষা ব্যবস্থাই পারে একটা জাতির চেহারা পালটে দিতে। আজকের শান্তির রাষ্ট্র জাপান ২য় বিশ্বযুদ্ধের আগে উগ্র আর চরম যুদ্ধবাজ জাতি হিসেবে পরিচিত ছিলো। কিন্তু পরাজয়ের পর পরিবর্তনের উদ্যোগ নেয় আর এজন্য প্রথমেই শিক্ষা ব্যবস্থায় আনে আমূল পরিবর্তন। এতবড় একটা যুদ্ধের টাটকা ক্ষত নিয়েও তারা জাতীয় বাজেটের ৪০% বরাদ্দ করেছিলো শিক্ষাখাতে। এই পরিবর্তিত শিক্ষা ব্যবস্থার সফল প্রয়োগ ঘটিয়েছিল সমাজ ব্যবস্থায়। ফলাফলটা তারা ২ দশক না যেতেই পেয়েছে।
আমাদের শিক্ষা ও সমাজ ব্যবস্থায় আসি,
> ছেলেরা পড়বে কৃষিশিক্ষা আর মেয়েরা গার্হস্থ্য অর্থনীতি
> ছেলেরা সাইকেলে প্যাডেল মেরে স্কুল কলেজে যাবে, মেয়েদের বেলায় সামাজিকতা
> কিছু মেয়ে প্রথা ভেঙে সাইকেল নিয়ে বের হলেও তাদেরকে আমরা মাঝের রড বিহীন বিশেষ সাইকেল ধরিয়ে দিয়েছি।
> এখনো অধিকাংশ মেয়ে গিয়ারলেস স্কুটি নিয়ে বের হয় কারন আমরাই শিখিয়েছি তুমি ভারি মোটরবাইক চালাতে পারবে না।
> ও তে ওড়নার কথা নাই বা বললাম।
পরিবর্তন যে হচ্ছে না তা বলবো না, তবে মন্থর গতিতে। কারন আমরা এখনকার ছেলেমেয়েরা অধিকাংশই নব্বইয়ের দশকের আর আমাদের বাবা মার (সবাই না) মন মানসিকতা বোধ করি আর বলতে হবে না। তবুও আশা করি একদিন পরিবর্তনের পালে হাওয়া লাগবে, কারণ আজকের আধুনিকারা আগামির মা।
জাগরণীয়ার ইনবক্স থেকে