নারীকে স্বামী ত্যাগ করলেই সে উচ্ছিষ্ট, নিকৃষ্ট?
প্রকাশ : ০৪ ডিসেম্বর ২০১৭, ২২:১৩
ঢাকাই ছবির নায়িকা অপু বিশ্বাসকে শাকিব খান নামের নায়কটি ডিভোর্স দিয়েছেন। তা তিনি দিতেই পারেন। সমস্যা হচ্ছে- এরপর থেকে একদল সাংবাদিক গিয়ে নায়িকাটির বাসার সামনে থেকে লাইভ টেলিকাস্ট করছেন। নাক গলাতে গলাতে এমন অবস্থা হয়েছে যে দুজন মানুষ ঘরের মধ্যে কি করছেন, কীভাবে সঙ্গম করছেন সেটিও পারলে আমরা দেখিয়ে দেই! কেন রে ভাই? মানুষকে একটু শান্তিতে থাকতে দেওয়া যায় না? বিয়ে কি অপু বিশ্বাস একা করেছিলেন? শাকিব করেননি?
কয়েকজন দেখলাম ডিভোর্সের খবরে লিখেছে- শাকিব অপুকে খেয়ে ছেড়ে দিয়েছে!
কি অশ্লীল মন্তব্য! একজন নারীকে স্বামী ত্যাগ করলে সে উচ্ছিষ্ট, নিকৃষ্ট? সমাজে তার কোনো দাম নেই- এই ভাবাটাই বা কেন?
এরকম অসংখ্য নারীকে আমি চিনি যারা ডিভোর্সড, কেউ দ্বিতীয় বিয়ে করে স্বামী সন্তান নিয়ে সুখে আছে, কেউ বা একা একাই স্বাবলম্বী হয়ে দিন কাটাচ্ছে। সমস্যা কি?
বরং আমার ভালোই লাগছে। কারণ অভিনয় ছেড়ে দিয়ে সংসারে মন দেবেন, হজ করবেন বলে যে ঘোষণা অপু দিয়েছিলেন তা সম্ভবত আর তার করা হবে না। একজন অভিনেত্রীর প্রতিভার মৃত্যু দেখতে ভালো লাগে না!
দুজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ বিয়ে করেছিলেন, এখন বনিবনা না হচ্ছে বলে আলাদা হয়ে যাচ্ছেন। এটা কি খুব কঠিন সমীকরণ? মানুষে মানুষে সম্পর্ক হয়, দিনে দিনে সম্পর্কের রঙ বদলায়, ধরণ বদলায়। কেউ সেই রূপ বদলকে স্বীকার করে নিয়ে একে অপরের হাতটি ধরে রাখে, কেউ হাত ছেড়ে দেয়। কিন্তু এতোদিনের সম্পর্কটিকে অশ্রদ্ধা করাটাই বা কেন?
আপনারা এতো নির্দয় কেন? কলমের খোঁচায় স্বামী-স্ত্রী হওয়া খুব কঠিন না। কিন্তু হৃদয়ের টানে সেই সম্পর্ক বেঁধে রাখা খুব কঠিন। সেলুলয়েডের ফ্রেমে প্রেম দেখানো আর বাস্তবে সেই প্রেমকে টিকিয়ে রাখা ভিন্ন কথা। বিয়ে বা ডিভোর্স- দুজন মানুষের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ দ্বৈত সিদ্ধান্ত নেওয়ার সমান অধিকার তাদের উভয়েরই আছে। সেই রায় আপনি দেওয়ার কেউ না!
দুজন মানুষকে নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করা আর তাদেরকে হেয় করা এক না! অন্যের জীবনের সীমানা নির্ধারণের চেয়ে জরুরী নিজের আচরণের সীমানা নির্ধারণ করা। ঠিক আছে?
জান্নাতুন নাঈম প্রীতির ফেসবুক থেকে