দু’পাশে পা দিয়ে নারীদের মোটর সাইকেলে চড়ায় নিষেধাজ্ঞা!
প্রকাশ : ২৩ অক্টোবর ২০১৬, ১২:৪২
দুই পাশে পা দিয়ে মোটর সাইকেলে আর চড়তে পারবেন না নারীরা! তাদেরকে বসতে হবে এক পাশে পা দিয়ে, যা কিনা বিপজ্জনক। কিন্তু তারপরও কেন এই নিষেধাজ্ঞা?
ইন্দোনেশিয়ার উত্তরপশ্চিমাঞ্চলের প্রদেশ আচে। গত সপ্তাহে সেই প্রদেশে এক নতুন নিয়ম চালু হয়েছে। তা হচ্ছে মেয়েরা মোটর সাইকেলে দু’পা দু’পাশে দিয়ে বসতে পারবেন না। তাদেরকে বসতে হবে একদিকে পা দিয়েই। ইতিমধ্যে এই নিয়ম চালুর তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে নারী অধিকার বিষয়ক সংগঠনগুলো। কিন্তু প্রশাসন কারো প্রতিবাদেই কান দিচ্ছেনা।
আচে প্রদেশের লুকসুমাও নগরের প্রশাসনিক আধিকারিক দসনি ইউসার এই বিষয়ে জানিয়েছেন, ‘‘আমরা এই নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে এগিয়ে যাচ্ছি। এখানে এটার বিরুদ্ধে কোন প্রতিবাদ নেই। আচেতে কোন সমালোচনা শোনা যাচ্ছে না।”
মোটর সাইকেলে বিধিসম্মতভাবে কিভাবে বসতে হবে, তা সাধারণ মানুষকে জানাতে ইতোমধ্যে উদ্যোগও গ্রহণ করেছেন ইউসার। তিনি জানান, লুকসুমাও’য়ে পঞ্চাশটি ব্যানার টাঙানো হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন সরকারি অফিসে এবং গ্রামে এই আইনের বিষয়ে লিফলেট বিলানো হয়েছে।
শহরের মেয়র সুয়াইদি ইয়াহিয়া বলেন, মেয়েরা দু’পাশ দু’দিকে দিয়ে মোটর সাইকেলে বসলে পুরুষ চালকরা উত্তেজিত হয়। তবে মেয়েরা যখন নিজেরা মোটর সাইকেল চালাবেন তখন তাঁরা দু’পা ফাঁক করে সেটিতে বসতে পারবেন। তবে এক্ষেত্রে সম্পূর্ণ ইসলামি পোশাক পরতে হবে তাদেরকে, একথাও বলেছেন ইয়াহিয়া।
এখানে বলা প্রয়োজন, ২০০৯ সালে আচেতে শরিয়া আইনের একটি সংস্করণ চালু করা হয়। ইন্দোনেশিয়ার কোন প্রদেশে এই আইন চালুর ঘটনা এই প্রথম। সেই থেকে অবশ্য জনসাধারণের নৈতিক দায়িত্ব বিষয়ক বিভিন্ন উপবিধি প্রকাশ করছে প্রদেশের কর্তৃপক্ষ। তবে সমালোচকরা বলছে, শরিয়া আইনের প্রয়োগ বৈষম্যমূলক। শুধুমাত্র নারী এবং যুব সম্প্রদায়কে লক্ষ্য করে বিভিন্ন রকম নিয়ম জারি করা হচ্ছে। এগুলোর মধ্যে জনসমক্ষে কি রকম আচরণ করতে হবে কিংবা কি ধরণের পোশাক পরতে হবে তাও আছে।
অনেকে মনে করছেন, ইন্দোনেশিয়ার ভাবাদর্শের সঙ্গে এসব নিয়ম মানানসই নয়। বরং এটা এক উল্টো পথে যাত্রা করার মতো ব্যাপার। জাকার্তায় অবস্থানরত নারী অ্যাক্টিভিস্ট তুঙ্গাল প্রয়েস্ত্রি ইন্দোনেশিয়ার ইতিহাসের দুই নারী যোদ্ধার কথা উল্লেখ করে বলেছেন, “ন’কাক ধিয়েন এবং লাকসামানা কেউমালাহায়াতি ঘোড়ায় চড়ে যুদ্ধ করেছিলেন। তাঁরা কি তখন ঘোড়ার এক পাশে পা দিয়ে বসেছিলেন? এরকম ভাবাটাও অবান্তর।”