নবজাতককে দত্তক দিতে মায়ের আকুতি
প্রকাশ : ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ১৮:২৯
রেলস্টেশনে ফুটফুটে শিশু নিয়ে বসে আছে এক কিশোরী। কাঁদতে কাঁদতে ওই শিশুটিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য আবেদন জানাচ্ছে যাত্রীদের কাছে।
গত ০৩ ফেব্রুয়ারি (শুক্রবার) রাতে ভারতের রাজস্থান রাজ্যের জয়পুরের নারায়ণগড় রেলস্টেশনে উপস্থিত যাত্রীরা সাক্ষী হন এমনই এক অদ্ভুত ঘটনার।
পুলিশ জানায়, ধর্ষণের শিকার কিশোরী রেলস্টেশনে বসে কাঁদছিল আর সবার কাছে তার সন্তানকে নিয়ে যেতে কাকুতি-মিনতি করছিল। একপর্যায়ে ওই কিশোরী শিশুটিকে স্টেশনে ফেলে চলে যেতে উদ্যত হয়। কিন্তু জনতা ওই কিশোরীকে আটকে স্থানীয় থানায় খবর দেন।
পরে ০৩ ফেব্রুয়ারি (শুক্রবার) রাতেই পুলিশ ওই কিশোরীকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। কিন্তু কিশোরী কিছুতেই তার পরিবারকে খবর দিতে রাজি হচ্ছিল না। পরে স্থানীয় মানবাধিকার সংগঠন রাজস্থান শিশু অধিকার রক্ষা কমিটিকে খবর দেওয়া হয়। তারা ওই কিশোরীর সঙ্গে কথা বলে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে সমর্থ হয়।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ১৪ বছর বয়সী ওই কিশোরী গত ২৯ জানুয়ারি জয়পুরের একটি হাসপাতালে এক সন্তানের জন্ম দেয়। এর পর শুক্রবার কিশোরী ও তার শিশুকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
এর আগে অজয় সিংহ নামের ২৩ বছর বয়সী এক যুবকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ আনেন ওই কিশোরীর বাবা। সেই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ ওই যুবককে গ্রেপ্তার করলেও পরে ছেড়ে দেয়।
রাজস্থান শিশু অধিকার রক্ষা কমিটির চেয়ারপারসন মানান চতুর্বেদি জানান, সমাজের বাধার ভয়ে পিতৃপরিচয়হীন শিশুটিকে রাখতে চাইছে না ‘ধর্ষিতা’ কিশোরীর পরিবার।
এদিকে নারায়ণগড় থানার কর্মকর্তা ভাগওয়ান সাহাই বলেন, ‘যখন মা ও শিশুকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হলো, তখন ওই কিশোরীর পরিবার শিশুটিকে বাড়ি নিতে চায়নি।’
মানান চতুর্বেদি হিন্দুস্তান টাইমসকে জানান, তিনি পুলিশের অনুমতি নিয়ে শিশু ও কিশোরী মাকে তার বাড়িতে নিয়ে আসেন। সে সময় শিশুটির মায়ের শারীরিক ও মানসিক অবস্থা ভালো ছিল না। পর্যাপ্ত স্বাস্থ্যসেবার পর ওই মায়ের শারীরিক অবস্থা এখন কিছুটা উন্নতির দিকে।