সপ্তম শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণ, পরে কৌশলে গর্ভপাত!
প্রকাশ : ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ১৩:৩৩
ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে সপ্তম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীকে জোর করে ধর্ষণ ও পরে স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে নিয়ে কৌশলে গর্ভপাত করানোর অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি গোপন না রাখলে ওই ছাত্রী ও তার মাকে মেরে ফেলারও হুমকি দেওয়া হয়েছে।
এই অভিযোগ উঠেছে, ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার উচাখিলা ইউনিয়নের মোবারক মোড়লের বিরুদ্ধে। তাদের হুমকির কারণে এখনো থানায় অভিযোগ দেয়নি দরিদ্র ওই পরিবারটি।
ওই স্কুলছাত্রীর ভাষ্যমতে, তার বাবা সাত বছর ধরে নিখোঁজ রয়েছেন। মা ঢাকায় অন্যের বাসায় কাজ করেন। পড়াশোনা করার কারণে মা তাকে মোবারক মোড়লের বাড়িতে কাজ করার জন্য রেখে যান। প্রায় তিন মাস আগে বাড়ির মালিক মোবারক তাকে পাশের জঙ্গলে নিয়ে প্রথমবার ধর্ষণ করে। এরপর অন্য দিন বাড়িতে মোবারকের স্ত্রী ও ছেলের বউ না থাকার সুযোগে তাকে ঘরে আটকে দুইবার ধর্ষণ করে। ধর্ষণের পর তাকে বিষয়টি কাউকে জানাতে নিষেধ করে।
ওই ছাত্রীর মা জানান, কয়েক দিন আগে তিনি ঢাকা থেকে বাড়িতে যান। মেয়ের চলাফেরা দেখে তার সন্দেহ হলেও মেয়েকে কিছু বলেননি। এরপর গত ২৪ জানুয়ারি সকালে মেয়ের পেট ব্যথা শুরু হলে তাকে নিয়ে মোবারক তারুন্দিয়া বাজারের পল্লী চিকিৎসক দুলালের কাছে যান। দুলাল তার মেয়েকে ওষুধ খাইয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। পরের দিন ভোরে তার মেয়ের গর্ভপাত ঘটে। অনেক রক্তের সঙ্গে একটা ছোট বাচ্চা বের হয়। এই খবর পেয়ে মোবারকের ছেলে শাহজাদা মুঠোফোনে তাদের হুমকি দিয়ে ঘটনাটি গোপন রাখতে বলেন। এ ঘটনার কঠিন বিচার দাবি করেন ছাত্রীর মা।
এ বিষয়ে পল্লী চিকিৎসক দুলাল বলেন, ‘আমি শুনেছি, মোবারক মেয়েটিকে ধর্ষণ করেছেন।’ তবে ওই ছাত্রীকে তার কাছে নিয়ে যাওয়ার পর তিনি কোনো ওষুধ দিয়েছিলেন তা বলেননি।
উচাখিলা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘ঘটনাটি জানার পর আমি মোবারকের কাছে যাই। তখন তিনি ও তার স্ত্রী ঘটনাটি মীমাংসা করতে চান। কয়েক দিন পর মোবারক ওই ছাত্রীকে ৩৫ হাজার টাকা দিয়ে বিষয়টি গোপন করতে চাইলে আমি আর সেখানে যাইনি।’
উচাখিলা ইউপি চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম শফিক বলেন, ‘ওই ছাত্রী ও তার মা আমার কাছে এসেছিল। আমি তাদের আইনের আশ্রয় নিতে বলেছি।’
এ বিষয়ে মোবারক মোড়লের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তার ছেলে বাহাদুর বলেন, ‘আমার বাবা বাড়িতে নেই। তিনি এমন কাজ করতে পারেন না।’
ঈশ্বরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. বদরুল আলম খান বলেন, ‘ছাত্রীকে ধর্ষণ বা গর্ভপাতের বিষয়ে আমাকে কেউ জানায়নি। অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’