‘রোহিঙ্গা নারীদের ধর্ষণ করেছে মিয়ানমারের সেনারা’
প্রকাশ : ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ১৯:০২
মিয়ানমারের সরকারি বাহিনী রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা নারী ও মেয়েদের ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতন চালিয়েছে। গত বছর রাখাইন রাজ্যে সরকারি বাহিনীর অভিযানের সময় এসব অপরাধ সংঘটিত হয়।
৬ ফেব্রুয়ারি (সোমবার) নিউইয়র্কভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
এইচআরডব্লিউর ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বছরের ৯ অক্টোবর থেকে ডিসেম্বরের মাঝামাঝি পর্যন্ত রাখাইনের মংডুর অন্তত নয়টি গ্রামে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও বর্ডার গার্ড পুলিশের সদস্যরা ধর্ষণ, গণধর্ষণ, আগ্রাসীভাবে দেহ-তল্লাশি ও যৌন হামলায় অংশ নেন।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও বর্ডার গার্ড পুলিশের সদস্যরা একযোগে হামলা চালিয়েছেন। বন্দুকের নলের মুখেও ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে।
রাখাইনে নৃ-তত্ত্ব ও ধর্মের ভিত্তিতে রোহিঙ্গাদের ওপর পদ্ধতিগত হামলা হয়েছে বলে নতুন প্রত্যক্ষদর্শীদের বিবরণে উঠে এসেছে। রাখাইন রাজ্যে সংঘটিত সহিংসতা-পদ্ধতিগত ধর্ষণের অভিযোগের বিষয়ে জরুরি ভিত্তিতে একটি স্বাধীন, আন্তর্জাতিক তদন্ত অনুমোদন করতে মিয়ানমার সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে এইচআরডব্লিউ।
সংগঠনের জ্যেষ্ঠ গবেষক প্রিয়াঙ্কা মোটাপার্থ জানান, নারীদের বিরুদ্ধে যৌন সহিংসতা চালানোর বিষয়ে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর দীর্ঘ ও বিকৃত ইতিহাস রয়েছে। রাখাইনে রোহিঙ্গা নারী ও মেয়েদের বিরুদ্ধে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর চালানো লোমহর্ষক হামলা বর্বরতার নতুন অধ্যায় যুক্ত করেছে। এসব অপরাধ বন্ধ বা জড়িত ব্যক্তিদের শাস্তি দিতে সামরিক ও পুলিশ কমান্ডারেরা যদি সবটা না করে থাকেন, তবে তাদের আইনগতভাবে দায়ী করা উচিত।
মানবাধিকার এইচআরডব্লিউ বলছে, রাখাইনে নিরাপত্তা বাহিনীর সহিংস অভিযানের মুখে ৬৯ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে গেছে।
মানবাধিকার সংগঠনটি আরো বলছে, নিপীড়নের মুখে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে যাওয়া ১৮ জন রোহিঙ্গা নারীর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন এইচআরডব্লিউর গবেষকেরা। গত বছরের ডিসেম্বর থেকে চলতি বছরের জানুয়ারির মধ্যে এই সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়। এই নারীদের মধ্যে ১১ জনই রাখাইনে যৌন হামলার শিকার হওয়ার কথা জানিয়েছেন। ১৭ জন নারী ও পুরুষ তাদের নিকট পরিজনের যৌন সহিংসতা শিকার হতে দেখেছেন। এই ১৭ জনের মধ্যে আবার যৌন সহিংসতার শিকার হওয়া কয়েকজন নারী রয়েছেন। সব মিলিয়ে সংগঠনটি ২৮টি ধর্ষণ ও অন্যান্য যৌন সহিংসতার ঘটনা নথিভুক্ত করেছে।