সম্মতিতে সহবাস ধর্ষণ নয়: মুম্বই হাইকোর্ট
প্রকাশ : ০৪ এপ্রিল ২০১৮, ০২:৩৫
গভীর প্রেমের সম্পর্কের জেরে কোনো শারীরিক সম্পর্ক তৈরি হলে, তার বিরুদ্ধে পরে ধর্ষণের অভিযোগ আনা যাবে না-জানিয়েছে মুম্বই হাইকোর্টের গোয়া বেঞ্চ।
২ এপ্রিল (রবিবার) একটি মামলায় সম্প্রতি এমনই রায় দিয়েছে হাইকোর্ট।
রায়ে বলা হয়েছে, গভীর প্রেমের জেরে কোনও শারীরিক সম্পর্ক গড়ে উঠলে, পরে তাকে ‘ধর্ষণ’ বলা হলে, তা আসলে তথ্যের বিকৃতি হয়।
এই রায় যে মামলার প্রেক্ষিতে, তাতে অভিযুক্তকে ৭ বছরের জেল এবং ১০ হাজার টাকা জরিমানার দণ্ড দিয়েছিল নিম্ন আদালত, তা-ও বাতিল করে দিয়েছে হাইকোর্ট। নিম্ন আদালতের ওই রায়ের বিরুদ্ধেই হাইকোর্টে আবেদন জানিয়েছিলেন অভিযুক্ত।
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, যোগেশ গোয়ায় একটি ক্যাসিনোয় শেফ হিসেবে কাজ করতেন। ২০১৩ সালে ক্যাসিনোয় কর্মরত এক নারীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
একদিন পরিবারের লোকজনের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে প্রেমিকাকে তার বাড়িতে নিয়ে যান যোগেশ। কিন্তু কেউ না থাকায় রাতে যোগেশের বাড়িতেই স্বেচ্ছায় থেকে যান ওই তরুণী। সেই সময়েই দু’জনের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক তৈরি হয়। পরের দিন সকালে ওই তরুণীকে তার বাড়িতে পৌঁছে দেন যোগেশ। পরে যোগেশের বাড়িতে আরও তিন থেকে চার বার দু’জনের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক হয়। যদিও, ওই মহিলা নিম্ন বর্ণের বলে তাকে শেষমেশ বিয়ে করেননি যোগেশ।
এরপরেই যোগেশের বিরুদ্ধে আদালতে ধর্ষণের অভিযোগ আনেন ওই মহিলা। তিনি অভিযোগ করেন, যোগেশ বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন বলেই তিনি শারীরিক সম্পর্কে সম্মত হয়েছিলেন।
মামলার রায় দিতে গিয়ে বিচারপতি সি ভি ভাড়ং বলেছেন, যেসব তথ্যপ্রমাণ মিলেছে, তার ভিত্তিতে এটা নিশ্চিত ভাবেই বলা যায়, শুধুমাত্র পুরুষ সঙ্গীর দেয়া বিয়ের প্রতিশ্রুতির বিনিময়েই ঐ তরুণী শারীরিক সম্পর্কে সম্মতি দেননি। বরং দু’জনের মধ্যে গভীর প্রেমের সম্পর্ক ছিল বলেই রাজি হয়েছিলেন তিনি। এমনকি ওই ঘটনার পরেও দু’জনের মধ্যে সম্পর্ক ছিল। যোগেশকে আর্থিক সাহায্যও করতেন ওই নারী। তাই যোগেশ ঐ নারীর উপর জোর করতেন বা তাকে শারীরিক ভাবে শোষণ করতেন, এমন দাবি মেনে নেয়া যায় না।
বিচারপতি ভাড়ং আরও জানান, এক সময়ে মানসিক অবসাদে ভোগা যোগেশের চিকিৎসা শুরু হওয়ায় ধর্ষণের মামলা তুলে নেওয়ার জন্য হলফনামাও জমা দিয়েছিলেন ওই নারী। তখন তিনি জানিয়েছিলেন, ‘আবেগে ও ব্যক্তিগত কারণ’-ওই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি।
সূত্র: আনন্দবাজার