বোরকা পরায় বাধ্যবাধকতা নেই সৌদি নারীদের

প্রকাশ : ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, ১৮:৩৫

জাগরণীয়া ডেস্ক

নজিরবিহীনভাবে সৌদি আরবের একজন শীর্ষ ধর্মীয় আলেম মত দিয়ে বলেছেন, দেশটির নারীদের নিজেদের ঢেকে রাখতে বোরকা পরতেই হবে, এমন কোনো বাধ্যবাধকতার ব্যাপার নেই। তবে তিনি মেয়েদের আব্রু বজায় রাখার ওপর জোর দিয়েছেন।

নতুন যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের নেতৃত্বে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরবে যে সংস্কারকাজ চলছে, তার মধ্যেই দেশটির ‘কাউন্সিল অব সিনিয়র স্কলারস’ বা সবচেয়ে বয়োজ্যেষ্ঠ ধর্মীয় চিন্তাবিদদের কাউন্সিলের সদস্য শেখ আবদুল্লাহ আল মুতলাক এ কথা বললেন।

সৌদি আরবের নারীরা সাধারণত পুরো শরীর বোরকা দিয়ে ঢেকে রাখে। স্থানীয় ভাষায় একে ‘আবায়া’ বলা হয়। খুব কম নারীই বোরকা ছাড়া রাস্তায় বের হতে পারেন। বোরকা ছাড়া কোনো নারী বাড়ির বাইরে গেলে তাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভর্ৎসনার মুখে পরতে হয়। আর বোরকা নিয়ে সামাজিক ও আইনগত বাধ্যবাধকতাও রয়েছে।

গত শুক্রবার শেখ আবদুল্লাহ আল মুতলাক বলেন, ‘মুসলিম বিশ্বের ৯০ শতাংশ নারীই বোরকা পরেন না। কাজেই আমাদেরও উচিত হবে না, মেয়েদের এটা পরতে বাধ্য করা।’

তবে শেখ আবদুল্লাহ আল মুতলাকের এ মন্তব্য ঘিরে এরই মধ্যে পক্ষে-বিপেক্ষ আলোচনা ও সমালোচনা শুরু হয়ে গেছে। এরই মধ্যে অনলাইনে তীব্র বিতর্ক এবং আলোচনা শুরু হয়েছে। অনেকেই তার সমর্থনে কথা বলছেন। বিরোধিতাও করছেন অনেকে। আবার টুইটারে মাশারি ঘামদি নামে একজন লিখেছেন, ‘এই পোশাক আমাদের অঞ্চলের একটা ঐতিহ্য। এর মধ্যে কোনো ধর্মীয় ব্যাপার নেই।’

২০১৬ সালে রিয়াদের রাস্তায় এক নারী তার বোরকা খুলে ফেলার পর পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করেছিল। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সৌদি আরবে মেয়েদের কেবল কালো রঙের পরিবর্তে উজ্জ্বল রঙের বোরকা পরতে দেখা যায়।

লম্বা স্কার্ট বা জিন্সের সঙ্গে খোলা আবায়া পরাও বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে আধুনিক তরুণীদের মধ্যে।

সৌদি আরবে কিছুদিন ধরেই পরিবর্তনের হাওয়া বইছে। গত বছর সেখানে বাণিজ্যিক সিনেমার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়। এ বছরের মার্চে সেখানে প্রথম সিনেমা হল খুলবে। গত ডিসেম্বরে সেখানে প্রথম কোনো গানের কনসার্টে নারী সংগীতশিল্পীকে গান গাইতে দেখা গেছে।

সৌদি আরবে স্টেডিয়ামে গিয়ে নারীদের খেলার দেখারও অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

সূত্র: বিবিসি

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত