গোটা পরিবারই একটি দেশের জাতীয় দল!
প্রকাশ : ২৬ নভেম্বর ২০১৭, ২০:১৫
গোটা একটি পরিবারই নির্দিষ্ট একটি খেলায় একটি দেশের জাতীয় দল বিরল এই ব্যাপারটি আপনাকে অবাক করবেই। ২৬ নভেম্বর (রবিবার) থেকে ঢাকায় শুরু হওয়া এশিয়ান আর্চারি খেলায় ইরাকের আর্চারি দলটি যোগদান করেছেন।
বাবা-মা, দুই ছেলে, দুই মেয়ে, মেয়ের জামাতা সবাই মিলে পুরো পরিবারই একটি আর্চারি দল।
বাবা সাদ মাহমুদ দলের ম্যানেজার। তিনি আবার ইরাক আর্চারি ফেডারেশনের সভাপতিই। যুদ্ধবিধ্বস্ত ইরাকে আর্চারির গোড়াপত্তন সাদ মাহমুদের হাত ধরেই। তাঁর স্ত্রী হানান জেসিয়া কোচ। বাকিরা সবাই খেলোয়াড়।
আর্চার পরিবারটির মধ্যমণি ছোট মেয়ে ফাতিমা আল মাশদানি। পরিবারের বড় মেয়েও আর্চার; আর্চার তাঁর স্বামীও। তির-ধনুকেই মজে আছে গোটা পরিবার! এবার নিয়ে তৃতীয়বারের মতো বাংলাদেশে পা রাখল পরিবারটি।
আর্চারির প্রতি পারিবারিক প্রীতিটাই ভাঙা ভাঙা ইংরেজিতে শোনালেন ফাতিমা, ‘আমরা পুরো পরিবারই বাংলাদেশে চলে এসেছি। আমি নিজে খেলব, আমার বড় বোনের জামাই ইশাক রহিমও খেলবেন। আমার মা কোচ, বাবা ফেডারেশনের সভাপতি। বড় বোন এখন না খেললেও আগে খেলতেন। ছোট দুই ভাইও ইতিমধ্যে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে শুরু করেছে।’
ফাতিমা পরে কথায় কথায় বলছিলেন, ‘আমরা এই নিয়ে তিনবার বাংলাদেশে এলাম। ২০১১ সালের পর এ বছর জানুয়ারিতে ইসলামিক সলিডারিটি খেলে গেলাম। আসলে বাংলাদেশ ভালো লাগে বলে সুযোগ পেলেই চলে আসি।’
হানান জেসিয়াকে ইশারা করে ফাতিমা আরও জানালেন, তাঁর মায়ের কাছেও বাংলাদেশ পছন্দের দেশ। ধর্মীয় রীতিতে মিল থাকাতেই যে এই ভালো লাগা, সেটাও বুঝিয়ে দেন ফাতিমা। তাঁর ছোট দুই ভাইয়ের চলাফেরা দেখেও বোঝা কঠিন যে ভিনদেশে খেলতে এসেছে।
আর্চারির সৌজন্যেই পরিবারটির এ দেশে পা রাখা। ইরাকের মতো রক্ষণশীল সমাজে মেয়েদের খেলাধুলা এমনিতেই বেশ কঠিন ব্যাপার। আর সে দেশে আর্চারি তেমন কোনো জনপ্রিয় খেলাও নয়। কিন্তু মানুষ চাইলে কী না পারে! আর্চারির প্রতি এ পরিবারের নিখাদ ভালোবাসা শ্রদ্ধার হাততালি পাওয়ারই যোগ্য।