যৌনমিলন এবং নারীর সতীত্বের সংজ্ঞা
প্রকাশ : ০২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ২৩:২৮
প্রায়ঃশই একটি কথা শোনা যায়, "আহারে মেয়েটার এখন কি হবে?" তা সে ধর্ষিতা বা বিয়ের প্রলোভনে দেহসম্পর্কে জড়ানো কেউ হোক না কেন। আচ্ছা যৌনকর্ম কি একা করবার মতন কোন বিষয় যে এহেন সাধনে শুধু নারীর উপর আঙ্গুল ওঠে? নাকি নারীর সতীত্বের মাপকাঠি প্রচন্ড রকমের আঁটসাট? যৌনতার কারনে যদি কোন নারীর সতীত্বের হানি হয় তবে ওই একই কারনে একজন পুরুষেরও হওয়া উচিত। সেই প্রাচীন যুগ থেকে নারীকে দাবিয়ে রাখা হয়েছে তাদের শারীরিক গঠনের দোহাই দিয়ে এবং ধর্ম ব্যাবসাকে পুঁজি করে। তৃতীয় বিশ্বের সব থেকে বড় সাম্রাজ্য আমেরিকা যেখানে নারী নেতৃত্ব মানতে নাকচ সেখানে আর কিই বা বলার থাকে!
নারী তার নিজের অবস্থানের জন্য নিজে যে একেবারে দায়ী নয় তা নয়। নারীর নিজেকে দাসী ভাবা বন্ধ করতে হবে। যদি কখনো কোনভাবে কারো সাথে যৌনকর্মে লিপ্ত হয়ে তার সাথে পরবর্তীতে ক্লেশ হয় তবে নিজেকে ছোট ভাবার বা অচ্ছুত ভাববার কোন কারণ নেই। কারণ সেই একই কর্ম একই সময়ে পুরুষ সঙ্গীটিও করেছে। তাহলে নারীর সতীত্ব এত সস্তা হতে যাবে কোন দুঃখে? ধর্ষণে কারো সতীত্ব যায় এ মানতেও আমার ভীষণ আপত্তি আছে। ধর্ষণ কাপুরুষতার সর্বোত্তম বহিঃপ্রকাশ। নারীর অমতে তার যোনী বক্ষ ভেদ করে নিজের পুরুষাঙ্গ ভেতরে প্রবেশ করিয়ে যৌন স্খলন করানো নিঃসন্দেহে মহাপুরুষের কাজ নয়।
একজন নারী কুমারী কিনা তা মাপবার না হয় উপায় আছে, সতীপর্দা, পাঁচ আঙ্গুল পরীক্ষা এসব আর কি! পুরুষের উপায়টা কি তা কি জানা আছে কারো? নাকি একজন চরমতম চরিত্রহীন পুরুষের বিপরীতে একজন সতীসাদ্ধী নারীই সমাধান?
নারী ঠিক যবে থেকে ভাববে যে তার জীবনের মাপকাঠি কখনই যৌনমিলন বা যৌনসম্পর্ক তথা সতীত্ব নয়; এটা সে মনে প্রানে যবে থেকে মানবে ঠিক তখন থেকে সে শৃঙ্খল ভাঙ্গতে পারবে।
একজন নারীই ঠিক করবে তার চলার পথ, আপনার পুরুষ সঙ্গীটি যদি তার কৃতকর্মের জন্য বিন্দুমাত্র আফসোস না করে তবে আপনার কেন আফসোস হবে শুধুমাত্র সতীত্ব নামক সস্তা কোন বিষয়ের জন্য? মনে রাখবেন যৌনকর্ম যদি দোষের বা পাপের হয়ে থাকে তবে সে দোষে আপনি একা নন আপনার সঙ্গীটিও সমপাপী সমদোষী!
লেখক: প্রতিষ্ঠাতা ও সংগঠক, গ্রিন ওইম্যান