একটা পুরুষ নির্যাতন দমন আইন বড্ড প্রয়োজন!
প্রকাশ : ২০ নভেম্বর ২০১৬, ২১:৫৭
পুরুষ নির্যাতন দমন আইন প্রণয়নের দাবি নিয়ে প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেছে একদল পুরুষ। ঘরে আটকে রেখে প্রতারক প্রেমিককে বিয়ে করার জন্য ধর্ষণের অভিযোগ এনেছে প্রেমিকা। গ্রাম্য শালিসে বিয়ে হয়েছে। এমন অনেক বাংলা সিনেমাটিক ঘটনা সত্য হিসেবে ইদানীং নাকি প্রকাশ পাচ্ছে। স্বামী মারধর করেনি তবুও এমন অভিযোগ এনে ফাঁসানো হচ্ছে। এমন অভিযোগ খুব কমন। নারীরা পুরুষদের নির্যাতন করছে। এর জন্য আইন দরকার, বেশ ভাল এটা সাধুবাদ পাওয়ার যোগ্য আবদার।
নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে আইন আছে, এতে করে নারীর প্রতি রাষ্ট্রের সহানুভূতি, ভালোবাসা ও প্রেম উথলিয়ে পড়েছে। এখন পুরুষ নির্যাতনের জন্য আইন প্রয়োজন। পুরুষেরা এতদিনে হাতে পাঁচ পেলো। নারীর সবচেয়ে বড় নির্যাতন হলো তার সম্পত্তি হরণ এবং বিয়ের পর তাকে বাড়ি ছাড়া করতে বাধ্য করা। এই দুটো কমলে, নারী পায়ের নিচের মাটি শক্ত হলে বাকি গুলো আপনি ধীরে ধীরে শুধরে যাবে। অন্যান্য লামছাম আইন থাকলেও এসবের বিরুদ্ধে কোন আইন নাই। জোর না করে আইনিভাবে বোনের সম্পত্তির অর্ধেক পাওয়ার মত লুলোপ জিভ মুসলিম পুরুষেরা সামলাতে পারে না। রাষ্ট্র তাকে এমন অন্যায় করতে নির্লজ্জের মত সাহায্য করে। আর মেয়েদের বাবা ভাই স্বামীরা বেহায়ার মত সেই সম্পত্তি ভোগ করে। এমন একটা অলিখিত সিস্টেম তৈরি করেছে, বাবার সম্পত্তির ভাগ মেয়েদের নেওয়া অশোভন এবং অনাচারের নামান্তর।
তাই পুরুষ নির্যাতন দমন আইন প্রয়োজন। কিন্তু কথা হলো এতকাল কি পুরুষেরা নারীর দ্বারা ঘরে বাইরে নির্যাতিত হয়নি? নাকি নারীর দ্বারা নির্যাতিত হয়েছে এমন তথ্য প্রকাশ পেলে মান ইজ্জত সব ধুলায় মিশে যাবে যাবে বলে এতকাল নীরবে মুখ বুঝে সব সয়ে গেছে? এতকাল এমন আইন তৈরির দাবী উঠেনি কেন?
যে পুরুষ জোর করে আইন তৈরি করে, ধর্মের দোহাই দিয়ে, সমাজের দোহাই দিয়ে সিস্টেমেটিক্যালি নারীর সম্পত্তি থেকে শুরু করে তার সমস্ত মানবিক অধিকার হরণ করতে পারে, তারা তাদের বিরুদ্ধে হওয়া অন্যায় মুখ বন্ধ করে সয়ে যাবে? না যাবে না। যায়ও নি। তবে বুঝা যাচ্ছে এতকাল নারীর দ্বারা পুরুষ নির্যাতন হয়নি, হলেও তা অতোটা গুরুতর না। এখন তথ্য প্রযুক্তির যুগে উইম্যান চ্যাপ্টার, জাগরণীয়ার মত নারী জাগরনীয়া পত্রিকা আছে। যেখানে কেবলই নারীরা লেখে। একটা লেখা নিজের ওয়ালে দিলে তা যত মানুষের কাছে না পৌঁছায়, ওসব পত্রিকার বদৌলতে আরে বেশি সংখ্যক মানুষের কাছে পৌঁছচ্ছে। নারীরা তাদের মুখ খুলছে তাদের বিরুদ্ধে হওয়া অন্যায়ের আরও বেশি করে প্রতিবাদ করছে। আমাদের ভাই, বাবা, স্বামীদের এখানেই বদহজম হচ্ছে। এখন তাদের উপর নির্যাতন হঠাত করেই বেড়ে যাচ্ছে। এর জন্য তাই আইন দরকার, সুষ্ঠু আইন!
যৌতুক আইন একটা রথ দেখা কলা বেচা টাইপ আইন। এই নিয়ে আগে একদিন লিখেছিলাম। নারী নিজের ভিটেমাটি ছাড়া করে স্বামীর বাড়ি গেলো, তার সম্পত্তির জন্য অত্যাচারিত হলো, তার বিরুদ্ধে আইন করা হয়েছে। নারী যদি সম্পত্তিতে ভাইয়ের সমান অংশ পেতো, তাকে যদি তার পূর্ণ প্রাপ্য সম্পত্তির অধিকার দেওয়া হতো, তবে তাকে তার বাবার বাড়ি ছাড়ার প্রয়োজন পড়তো না, স্বামীরও বাবার বাড়ি থেকে সম্পত্তি আনার জন্য অত্যাচারের প্রশ্নই আসতো না। যৌতুক আইন নামের চুলের আইন পুরুষের দরকার পড়তো কেন?
এখন বুঝি নারীর দ্বারা পুরুষ এসিডে পুড়ছে, নারীরা স্বামীদের মেরে ফ্যানে ঝুলিয়ে দিচ্ছে-গর্ভবতী স্বামীদের কেটে টুকরো টুকরো করে শীতলক্ষ্যায় ভাসিয়ে দিচ্ছে, নারীর দ্বারা দেশে বিদেশে প্রকাশ্যে বা অপ্রকাশ্যে পুরুষ অবাধে পাচার হয়ে যাচ্ছে, নারীর দ্বারা পুরুষ অপহরণ হচ্ছে, নারীরা পুরুষ আটকে রেখে ধর্ষণ করছে- মুক্তিপণ আদায় করছে, নারীরা ঘরে বাইরে পাটক্ষেতে ধানক্ষেতে ছেলেদের ধরে নিয়ে ধর্ষণ করছে, নারীরা পুরুষদের বা ছেলে শিশুদের প্রতিবার ধর্ষণের পর হত্যা করে ফেলছে, ''পুরুষ ধর্ষিত হলে তার এই সমাজে কোন মূল্য নেই'' এরকম অলিখিত নীতির দ্বারা নারীরা পুরুষদের আত্মহত্যা করতে প্ররোচনা দিচ্ছে, নারীরা পুরুষদের অন্যান্য যৌন নিপীড়ন করছে, স্ত্রীরা স্বামীদের যৌতুকের জন্য হত্যা করে ফেলছে- কখনো কখনো এই হত্যায় তার মা বোন ও অংশ নিচ্ছে, নারীরা পুরুষদের ধরে ধরে পতিত আলয়ে বিক্রি করে দিচ্ছে, নারীরা পুরুষদের ধর্ষণের ফলে জন্ম লাভকারী শিশুর মাতৃত্ব স্বীকৃতি দিচ্ছে না। হ্যাঁ, এবার একটা পুরুষ নির্যাতন দমন আইন বড্ড প্রয়োজন হয়ে পড়েছে!
লেখক: প্রবাসী লেখক