ভাবতে পারেন, এটা কত বড় পরাজয়?
প্রকাশ : ২৮ মে ২০১৭, ০১:৪৪
'মূর্তি' বা ভাস্কর্যর শিল্পমূল্য নিয়ে যারা সরু তর্ক করছে, তাদের লক্ষ্য কি একটি শিল্পমূল্যযুক্ত ভাস্কর্য প্রতিস্থাপন করা? যদি তা না হয়, যদি তারা একটি ভাস্কর্য চিরতরে অপসারণ (হেফাজতের দাবীতে, ভুললে চলবে না) সাপোর্টই করে, তাহলে হেফাজতের সাথে চিকনে তাদের পার্থক্য কি? হেফাজত বলার আগে তাদের শিল্পবোধ কি তাদের উদ্বুদ্ধ করেছিল এই ভাস্কর্যর শিল্পমূল্য নিয়ে কথা বলতে?
আমার সামান্য বুদ্ধিতে আমি যা বুঝি তা হচ্ছে, এই ভাস্কর্য সরকারেরই একটি মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে সুপ্রিমকোর্টের সামনে স্থাপিত হয়েছিল। তখন নিশ্চয়ই একটা আদর্শিক কারণ (দিখাওয়া বা লোকদেখানো হলেও) ছিল। এখন সেটা নেই। হেফাজতের দাবীর কারণে সরকার সেই আদর্শিক অবস্থান থেকে সরে এসেছে, ভাস্কর্য সরকার তুলে নিচ্ছে। এই তুলে নেয়ার ভেতর স্পষ্ট হচ্ছে এই কথা যে, সরকার জানাতে চাইছে হেফাজতের নৈতিক অবস্থানকে তারা মেনে নিচ্ছে। (ভাবতে পারেন, এটা কত বড় পরাজয়? রোজার মাসকে এবং ধর্মপ্রাণ মানুষের অনুভূতিকে তুরুপের তাস করে কত বড় হেফাজত-তোষণ?)
এই ঘটনায় শিল্পমূল্য নিয়ে আলাপ করাটা বেহুদা তর্ক। যে মা রান্ধে না সে তপ্ত দেবে না পান্তা দেবে সেই তর্কের মতন বেহুদা।
একটি 'মূর্তি' অপসারণের পর যদি ঐকিক নিয়মে হেফাজত বাকি 'মূর্তি'রও অপসারণ চায়, শুনতে পাচ্ছি তারা তা চাইছেও, সইতে পারবেন তো? অপরাজেয় বাংলা এবং রাজু ভাস্কর্যের গায়ে যখন আঘাত লাগবে, সহ্য হবে তো? হজম হবে তো? যাদুঘরের সব 'মূর্তি'তে ইবরাহীমীয় জোশে কুঠারাঘাত করা হলে সামলাতে পারবেন তো?
সাগুফতা শারমিন তানিয়া'র ফেসবুক থেকে