‘জাস্টিশিয়া’কে খুন করা হয়েছে!
প্রকাশ : ২৬ মে ২০১৭, ১৪:৫৮
‘জাস্টিশিয়া’র ডান হাতে ছিল একটি খোলা তলোয়ার, যা কর্তৃত্ব, শক্তি ও সামর্থ্যের প্রকাশ। এ তলোয়ার আদালতের রায় বাস্তবায়ন ও আইনের আশ্রয় লাভের প্রতীক হিসেবেও পরিচিত। সেই তলোয়ার বসিয়ে দেয়া হয়েছে ‘জাস্টিশিয়া’র কাঁধেই।
ভাস্কর্যের বাঁ হাতে ছিল একটি দাঁড়িপাল্লা, যা ন্যায় ও পক্ষপাতহীনতার প্রতীক। স্বাধীনতাবিরোধী মৌলবাদী শক্তির সাথে হাত মিলিয়ে সেই ন্যায়ের পাল্লাকে সুপ্রিম কোর্ট থেকে বিতাড়িত করা হয়েছে।
বিদেশীদের কাছে বাঙালি সংস্কৃতিকে তুলে ধরতে বিমানবন্দরের কাছে ২০০৮ সালে নির্মাণ করা হচ্ছিল একতারা- দোতারা হাতে লালন এবং পাঁচজন বাউলের ভাস্কর্য। মাদ্রাসা ছাত্রদের হুমকির মুখে লালন ভাস্কর্য ভেঙে, মৌলবাদী শক্তির সভ্যতা ও সংস্কৃতিবিরোধী দাবির কাছে সরকার নতিস্বীকার করেছিল।
মৌলবাদীরা তখন বলেছিল, ‘সব ভাস্কর্য ভেঙে ফেলা হবে। শিখা অনির্বাণ নিভিয়ে দেওয়া হবে।’
ওরা বারবার হামলা করেছে বাঙালির আত্মপরিচয়ের প্রতীক শহীদ মিনারে।
মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্য, শিখা চিরন্তন, শিখা অনির্বাণ, স্মৃতিসৌধ এসব কিছুই ওদের কাছে ‘মূর্তি’।
সত্তরের দশকের শেষার্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কলাভবনের সামনে শিল্পী আবদুলাহ খালেদ নির্মিত ভাস্কর্য ‘অপরাজেয় বাংলা’ ভাঙারও চেষ্টা চালিয়েছিল ইসলামী ছাত্রশিবির ক্যাডাররা। ছাত্র-শিক্ষক-সচেতন মানুষের সম্মিলিত প্রতিরোধের মুখে তাদের অপচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছিল। ছাত্র-শিক্ষক-সচেতন মানুষের সম্মিলিত প্রতিরোধ আজ কোথায়?
যদি প্রতিরোধ করতে না পারি তাহলে আসুন আমরা সরকারের কাছে দাবি তুলি-
চারুকলার ভাস্কর্য বিভাগ বন্ধ করে দেয়া হোক।
বঙ্গবন্ধুর ‘মূর্তি’সহ দেশের সকল মূর্তি গুঁড়িয়ে দেয়া হোক।
শিখা চিরন্তন, শিখা অনির্বাণ নিভিয়ে দেশকে অন্ধকার করে দেয়া হোক।
রাকিবুল হাসান এর ফেসবুক থেকে