সম্মান নিজের প্রতিবাদ দিয়ে কিনতে হয়
প্রকাশ : ০২ জানুয়ারি ২০১৭, ১৭:২১
প্রাথমিকের বইয়ে ‘ও-তে ওড়না’ নিয়ে বিরাট তোলপাড় হয়ে যাচ্ছে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা বোর্ডকে ধুয়ে দেয়ার চেষ্টা দেখে ভালোই লাগছে। অথচ ‘হা-শো’ নামের অনুষ্ঠানে ভাঁড়ামি করা সাজু খাদেম নামের লোকটি যখন চার-চারটি সাজুগুজু করা মেয়ের সামনে বলল- বরিশালে মেয়েদের দুধের ওপর যেটা দেয় ওটাকে কি বলে? তখন লজ্জায় আপনারাই মুখ লুকালেন। মেয়েগুলিও হেসে বিব্রতকর পরিস্থিতি এড়াবার চেষ্টা করলো। চার-চারটি মেয়ের কেউ একজন একবারের জন্যও বলল না- দুধ আর স্তন একই নয়! মায়ের স্তন্যপান করে এসে অন্য একটা মেয়েকে অপমান করা আর নিজের মাকে অপমান করায় কোনো পার্থক্য নেই। একবারের জন্যও কেউ বলল না- সাজু খাদেম, আপনি মেয়েদের শরীর নিয়ে মজা করছেন!
আমি নিজেই মেয়েদেরকে দেখেছি অন্য মেয়েটা বুকে ওড়না দিয়েছে কিনা সেটা নিয়ে চিন্তিত, এমনকি ছেলেদের চেয়েও। এই মেয়েরাই একদিন রাতের পর রাত ইচ্ছে না করলেও স্বামীর ধর্ষণকে হালাল সেক্স বলে মেনে নেবে। এই মেয়েদের স্বামীরাই ‘বৌ-কে আদর করা’ আর ‘ধর্ষণ করা’ এক করে গুলিয়ে ফেলবে। ছেলেমেয়েদের বাবা-মা হবে এবং শেখাবে- মেয়েদের বুকে ওড়না দিতে হয়, ছেলেদের চোখ বুকের দিকেই যায়!
শোনো মেয়ে- বুক বা স্তন একটা অঙ্গ, ওড়না একটা পোশাক। ইচ্ছে হলে ওড়না পরো না ফেলে দাও। যতদিন তোমার সম্মান যোনীতে আর স্তনে তালাবদ্ধ থাকবে- ততদিন তুমি বারবার ধর্ষিত হবে। পুরুষের ধর্ষণ না সইতে পেরে আত্মহত্যা করা আর নিজের অঙ্গটি নিয়ে সংকোচ করে আত্মসম্মানকে মেরে ফেলানোর মাঝে আমি পার্থক্য দেখিনা!
সম্মান স্তনে, যোনীতে থাকেনা। সম্মান টিকে থাকে প্রতিবাদে, আত্মবিশ্বাসে, মেধায় আর সৃজনশীলতায়। সম্মান পুরুষের সহানুভূতি দিয়ে কেনা যায় না, নিজের প্রতিবাদ দিয়ে কিনতে হয়। বুঝলে?
জান্নাতুন নাঈম প্রীতি'র ফেসবুক থেকে