এরা কবে মানুষ হবে?
প্রকাশ : ০৪ জুলাই ২০১৮, ২২:৫৯
চিরকাল জেনে আসছি ব্রা, প্যান্টি লুকায় রাখার জিনিস। আলমিরার ফাঁকে, কাপড় শুকানো বারান্দার চিপায়, অন্য কাপড়ের নিচে লুকায় রাখাই এর জন্য বরাদ্দ। আবার পরিধানের পরও এর রক্ষে নেই। ব্রা এর স্ট্র্যাপ হইলো এই জগতের সবচেয়ে নিষিদ্ধ দূষিত বস্তু। জামার ফাঁক দিয়া যদি আপনার ব্রার ফিতা দেখা যায়, তবে আপনি খারাপ, আপনার চৌদ্দ গুষ্টি খারাপ এবং আপনার ইজ্জত বলে আর কিছু নাই।
প্যান্টিও তাই। প্যান্টি মেলে দিতে হয় চিপায় গিয়া যাতে কেউ না দেখে। এই চিপায় মেলে দেবার কারণে ছোট্ট ব্রা আর প্যান্টি শুকাতে সময় লাগে দুইদিন, অথচ লাগার কথা এক ঘণ্টা যদি সে ঠিকমত রোদ বাতাস পায়।
তো ব্রা কেন নিষিদ্ধ, কুষিদ্ধ? এ তো এক টুকরো পোশাক ছাড়া আর কিছু নয়! এ তো শরীরের এক জোড়া অঙ্গ ঢেকে রাখে মাত্র। তাহলে ব্রা নিয়ে এত রাখ রাখ ঢাক ঢাক গুড় গুড় কেন?
আচ্ছা, ব্রা তো একটা ইংরেজি শব্দই। ব্রাজিল থেকে ব্রা- এই ট্রলটা তাহলে বিশ্বকাপ দেখা পৃথিবী জোড়া ইংরেজি বোঝা হাজার কোটি মানুষের কারো মাথায় এলো না কেন? শুধু বাঙালির মাথাতেই কেন এল?
ব্রা মানেই বাঙালির এত সুড়সুড়ি লাগে কেন? লাগে তো লাগে, সেই সুড়সুড়িওয়ালাদের কাউকে কাউকে যখন বলতে গেলাম, আপনার আম্মার ব্রা কি আপনের বউয়ের কি বোনের ব্রা...! ব্যাস, কথা বলে শেষ করছি কি করি নাই, তেলে বেগুনে জ্বলে উঠলেন কেন? তবে কি উনার আম্মু আপুদের স্তন নাই? ব্রা নাই?
ব্রা কি তবে শুধু উনার পরিবারের বাইরের মেয়েরাই পরেন? যেহেতু ব্রা মানেই যৌনতা আর সেই যৌনতা উনারা বাইরের কোটি মেয়ের জন্য তুলে রাখেন আর বাসায় লক্ষী সোনা কুতু কুতু ভাল ছেলে হয়ে রন?
বাঙালির যৌনতার চিন্তা দেখলে হাসব কিনা ভাবি। এরা এতটাই সেক্সিস্ট যে যৌনতাটাও ঠিকমত করে উঠতে পারে না। যা করে, সবই বিকৃতি।
এরা গালি দেয়, সেও মেয়েদের যৌন হয়রানিমূলক গালি। এরা ট্রল করে, তাও মেয়েদের যৌনতাকে ঘিরেই তৈরি হয়। আর সবচেয়ে আফসোস হইলো, এরা সাধারণ একটি পোশাককে যৌনতার প্রতীক বানায়া এই ২০১৮ সালেও ফাল পাড়তেসে। পারেও।
দুনিয়াজোড়া ব্রা একটি নিতান্ত পোশাক। আন্ডারগার্মেন্ট। স্তন আকর্ষনীয় হলেও একে নিয়ে চব্বিশ ঘণ্টা যৌনতার কথা কোন সুস্থ জাতি চিন্তা করে না। করে এই উপমহাদেশের অবদমিত বিকৃতরা।
এরা কবে মানুষ হবে? এরা কবে পুরুষ হবে?
শারমিন শামস্ এর ফেসবুক থেকে