মনিকা রাধা কি শূন্যে মিলিয়ে গেলেন?
প্রকাশ : ২৮ এপ্রিল ২০১৮, ১৯:৩৯
একজন মানুষ, একজন মা, একজন বড় বোন, একজন মনিকা রাধা দিনে দুপুরে হারিয়ে গেছেন। দীর্ঘ ১৭ টা দিন ধরে তার কোন খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। মা শয্যাশায়ী হয়েছেন। দুটো মেয়ে পথ চেয়ে আছে। বোনেরা এর ওর কাছে ধর্ণা দিচ্ছেন। জিডিও করা শেষ। তবুও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না মনিকা রাধাকে। এ যেন এক ভোজবাজির খেলা।
মনিকা কেন হারিয়ে যাবেন? কোথাও কোন শত্রুতা? কারো কোন হুমকি ধামকি? কারো সাথে ব্যক্তিগত বা পারিবারিক কোন বিরোধ? না, কোনটার কথাই জানা যায় না। মনিকার পরিবার নিশ্চিত করেছে সেটা। তবে কি হয়েছে মনিকা রাধার? কেন এমন করে হারিয়ে যাবে কেউ?
মনিকা রাধার বয়স ৪৫। ছাত্র জীবনে চট্টগ্রাম জেলা ছাত্র ইউনিয়নের কর্মী ছিলেন। যুক্ত ছিলেন সাংস্কৃতিক ইউনিয়নের সাথেও। বোনেরাও ছাত্র ইউনিয়নের রাজনীতির সাথে যুক্ত। বিয়ে করেছেন সাংবাদিক দেবাশিষ বড়ুয়াকে। দেবাশিষ বড়ুয়া চট্টগ্রামের দৈনিক পূর্বকোণ পত্রিকার ক্রীড়া সম্পাদক। শ্বশুর ড. প্রণব কুমার বড়ুয়া আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য। এসব যোগসূত্র বলার হয়তো কোন প্রয়োজন নেই। একজন মানুষ, একজন নাগরিক হারিয়ে গেছেন, সেটাই যথেষ্ট হওয়া উচিত। তবুও আমাদের বলতে হয় অসহায়ত্বের মাত্রা বোঝাতে। এটা বাংলাদেশ। পেশা এবং রাজনৈতিক পরিচয় গুরুত্ব বহন করে বৈকি। সাংবাদিক ও সরকার দলীয় পারিবারিক যোগসূত্র থাকার পরও যখন মানুষটার কোন হদিস পাওয়া যায় না, তখন পুরো বিষয়টা আরো আতঙ্কজনক হয়ে ওঠে।
গত ১২ এপ্রিল ২০১৮ দুপুরে লালখান বাজার বাসা থেকে বের হয়েছিলেন মনিকা গানের টিউশনি করতে। দুপুর ২টা ১৫ মিনিটে ছিলেন ওয়াসা মোড় এলাকায়। ২টা ৪০ মিনিটে কর্ণেল হাট এলাকায়। তারপর আর কোন খবর জানা যায়নি। খুলশী থানায় জিডিও করা হয়েছে (জিডি নং-৬২২)। তার মোবাইল ফোনটিও বন্ধ আছে।
মনিকা রাধার খোঁজ চাই আমি, আমরা। জানতে চাই, বুঝতে চাই, এইদেশে একজন মানুষ হারিয়ে গেলে অন্ততঃ কেন হারিয়ে গেলো সেটা জানা যায়। মনিকা রাধার পরিচয় যাই হোক, তিনি বাংলাদেশের একজন নাগরিক, একজন মানুষ ছিলেন, সেটাই তার সবচেয়ে বড় পরিচয়। এভাবে আর কোন মানুষ হারিয়ে না যাক।
শাশ্বতী বিপ্লব এর ফেসবুক থেকে