স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত চরাঞ্চলের মানুষ
প্রকাশ : ০৫ জুন ২০১৭, ১৪:৪১
লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার চর সিন্দুর্না ও নয়ার হাটে প্রায় তিন হাজার মানুষের জীবন-জীবিকা নির্ভর করে মাছ শিকার ও কৃষি কাজে। অব্যাহত নদী ভাঙন ও প্রকৃতির সাথে যুদ্ধ করে বেঁচে থাকা এসব মানুষের কপালে জোটে না প্রাথমিক চিকিৎসা সেবাও। তাদের চিকিৎসা সেবায় সরকারিভাবে তেমন কার্যকর উদ্যোগ নেই বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। তাদের মতে ওই এলাকার প্রাথমিক চিকিৎসা সেবার ভরসা এক হাতুড়ে ডাক্তার ও কবিরাজ।
৩ জুন (শনিবার) চর সিন্দুর্না ও নয়ারহাট এলাকায় বাবুল মিয়া, আহেলা বেগম, ছাদেকুল ইসলাম ও জমসের আলী জানান, এখানকার মানুষের অন্যতম সমস্যা হচ্ছে চিকিৎসা সেবা না পাওয়া। চরে বসবাস করায় তাদের বিভিন্ন রোগ-বালাই লেগেই থাকে। বিশেষ করে যখন বন্যার পানিতে বাড়িঘর ডুবে যায় ও পানি নেমে যাওয়ার সময় ডায়রিয়াসহ অন্যান্য রোগ প্রকট আকার ধারণ করে। সে সময় শিশু, নারী ও বৃদ্ধারা বেশি বিপদে পড়েন। চিকিৎসা না পাওয়ায় দুর্ভোগ আর ভোগান্তি চরম পর্যায়ে পৌঁছে। সময় মতো চিকিৎসা না পেয়ে শিশু ও গর্ভবতী মায়ের মৃত্যুর ঘটনাও প্রায় ঘটে।
তারা আরও জানান, তাদের চিকিৎসার জন্য লালমনিরহাট ও হাতীবান্ধা শহর থেকে অনেক দিন পরপর দুই-একটি টিম চরে আসে। তারা কিছু ওষুধপত্র দিয়ে যায়। তবে দীর্ঘদিনে তাদের দেখা মিলে না।
হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেক্স এর পক্ষ থেকে আগে কিছু ওষুধপত্র দেওয়া হলেও এখন সেটিও বন্ধ আছে। তাই তাদের ভরসা এখন স্থানীয় গ্রাম্য চিকিৎসক ও কবিরাজ।
সূত্র জানায়, সরকারি উদ্যোগে ২০০৬ সালে গড়ে ওঠা কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠার পর থেকেই বেশির ভাগ সময় বন্ধ থাকে। যাতায়াতের ভাল ব্যবস্থা না থাকায় ও স্বাস্থ্য কর্মীদের গাফিলতীর কারণে নিয়মিত খোলা হয় না ক্লিনিকটি। নদী ভাঙ্গনের ফলে ক্লিনিকের এই ঘরও নদী গর্ভে বিলীন হওয়ার পথে।
স্থানীয় নারী ইউপি সদস্য আম্বিয়া বেগম বলেন, চরে কোনো চিকিৎসা নেই। নদী পাড় হয়ে শহরে গিয়ে চিকিৎসা নিতে হয়। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বার বার জানিয়েছি। কোনো কাজ হয়নি।
হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রমজান আলী বলেন, আমরা আন্তরিকতার সাথে তাদের চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছি। নানা সীমাবদ্ধতার কারণে আমরা পূর্ণাঙ্গ সেবা দিতে পারি না। সেখানকার মানুষদের শুধু প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়। প্রতি সপ্তাহে তিন সদস্যের টিম ওই চরে যায়। ওষুধ সরবরাহসহ বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসা সেবা প্রদান করেন তারা।