মিতু হত্যা: বাবুলকে গ্রেপ্তারের দাবি শ্বশুরের

প্রকাশ : ০৫ জুন ২০১৭, ১৫:৪১

জাগরণীয়া ডেস্ক

মেয়ের হত্যাকারী হিসেবে চট্টগ্রামের সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারকে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন তার শ্বশুর মোশাররফ হোসেন। তার মেয়ে মাহমুদা খানম মিতুকে গত বছরের ৫ জুন চট্টগ্রাম শহরের জিইসি মোড় এলাকায় ছুরিকাঘাত ও গুলি করে হত্যা করা হয়। তখন অবশ্য বাবুল আক্তার শ্বশুরের আশ্রয়ই ছিলেন।

৩ জুন (শনিবার) রাজধানীর মেরাদিয়া ভুইয়াপাড়ার বাড়িতে বসে মাহমুদার বাবা সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেন জামাতা বাবুল আক্তারকে গ্রেপ্তারের দাবি জানান। তিনি বলেন, আমরা শুনেছি হত্যাকাণ্ডে সংশ্লিষ্টতা পাওয়ার কারণে নাকি তাকে (জামাতা) চাকরি ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছে। এটা যদি সত্যি হয়, তাহলে কোনোভাবেই সেটা ন্যায়বিচার হতে পারে না। আমার মেয়ের খুনিকে কেউ কিছুর বিনিময়ে ছেড়ে দিতে পারে না।

মোশাররফ হোসেনের প্রশ্ন, জড়িত না থাকলে বাবুল চাকরি ছাড়লেন কেন? আর মুছা কেন তার মেয়েকে খুন করবেন? মুছা যদি খুন করে থাকেন, সেটা বাবুলের কারণেই করেছেন। এক বছরেও পুলিশ মুছার হদিস বের করতে না পারায় হতাশ তিনি।

মিতুর বাবার এসব অভিযোগের বিষয়ে বাবুল আক্তার বলেন, ঘটনা ভিন্ন খাতে নিতে অনেক রকম অভিযোগ উঠতে পারে। তথ্যপ্রমাণ ছাড়া কারও বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ তোলা ঠিক নয়। এখনও তদন্ত শেষ হয়নি। তবে চাকরি ছাড়া নিয়ে শ্বশুরের তোলা প্রশ্নের বিষয়ে কিছু বলতে চাননি তিনি। তিনি নিজেও স্ত্রী হত্যার বিচার ও সুষ্ঠু তদন্ত চান।

মিতু হত্যার আজ এক বছর পূর্ণ হলো। কিন্তু এত দিনেও আলোচিত এ মামলার কোনো কিনারা করতে পারেনি পুলিশ। মিতু খুনের পর থেকেই বিভিন্ন মহল থেকে বাবুলের জড়িত থাকার অভিযোগ শোনা যাচ্ছিল। কিন্তু প্রথম দিকে মিতুর মা-বাবা এসব অভিযোগ উড়িয়ে দেন। সর্বশেষ গত ২৬ ফেব্রুয়ারি মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেনের বাসায় গেলে এই হতাকাণ্ডে বাবুল জড়িত বলে তিনি অভিযোগ করেন।

মোশাররফ হোসেন বলেন, মাহমুদা খুন হওয়ার পর বাবুল আক্তার ছেলেমেয়েকে নিয়ে মেরাদিয়ার ভূঁইয়াপাড়ার তার বাসায় উঠেছিলেন। কিন্তু বিপদ সরে গেছে মনে করে অন্যত্র চলে যান। এরপর বাবুলের ঘনিষ্ঠ লোকজনের কাছ থেকে তারা তথ্য পান, মিতু হত্যার পরিকল্পনাকারী বাবুল আক্তার নিজেই। একাধিক নারীর সঙ্গে তার সম্পর্ক ছিল। এতে বাধা দেওয়ায় তিনি মিতুকে হত্যার হুমকি দেন। নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে মিতু একবার আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন। খুন হওয়ার আগে মিতু এসব কথা তাদের জানিয়েছিলেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তার কাছে ১৫টি বিষয় চিহ্নিত করে লিখিত দিয়েছিলেন। তা আমলে নেওয়া হয়নি। দুই নারী ও বাবুল আক্তারের দুই ঘনিষ্ঠসহ তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদের দাবি জানালেও পুলিশ তা শোনেনি।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও চট্টগ্রাম নগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার মো. কামরুজ্জামান বলেন, বাবুলের শ্বশুর এসব অভিযোগ তাদের কাছেও করেছেন। তারা সব দিক খতিয়ে দেখছেন। ঈদের পরে বাবুলকে আবার জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. ইকবাল বাহার গত ৩ জুন (শনিবার) বলেন, একটা সময় পর্যন্ত মুছার জন্য অপেক্ষা করা হবে। তাকে পাওয়া না গেলে অভিযোগপত্র দিয়ে দেওয়া হবে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত