দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত হলো সুচিত্রা সেনের বাড়ি
প্রকাশ : ২০ এপ্রিল ২০১৭, ২০:২৯
উপমহাদেশের কিংবদন্তী নায়িকা সুচিত্রা সেনের পাবনার পৈত্রিক বাড়ি অবশেষে দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত হয়েছে। পাবনা জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে স্বল্প পরিসরে স্মৃতি সংগ্রহশালা প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে বড়িটি খুলে দেয়া হয়েছে।
তবে এ বাড়ি নিয়ে জেলাবাসীর প্রত্যাশা একটু বেশি। বাড়িটিতে সম্মৃদ্ধ সংগ্রহশালা ও একটি ফিল্ম ইনস্টিটিউট করার দাবি তাদের।
পাবনা জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, বাড়িটি দীর্ঘদিন ধরে স্বাধীনতা বিরোধী একটি রাজনৈতিক দলের কবলে ছিল। দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়া শেষে ২০১৪ সালের ১৬ জুলাই বাড়িটি দখলমুক্ত করা হয়। উচ্চ আদালত বাড়িটি দখলমুক্ত করার নির্দেশনার পাশাপাশি সেখানে সুচিত্রা সেনের নামে একটি সংগ্রহশালা করতে বলেছেন। কিন্তু বিভিন্ন জটিলতায় সংগ্রহশালার কাজ থেমে থাকায় অরক্ষিত বাড়িটি পরিণত হয়েছিল মাদকসেবীদের আখড়ায়। ফলে জেলা প্রশ্সান বাড়িটি রক্ষার জন্য স্বল্প পরিসরে সংগ্রহশালা করার উদ্যোগ নিয়েছে। সংগ্রহশালায় সুচিত্রার নানা সময়ের তোলা ৪৬টি ছবি স্থান পেয়েছে। বাড়িটি প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়েছে। এ বাড়ির প্রবেশ মূল্য ১০ টাকা।
পাবনার জেলা প্রশাসক রেখা রানী বালো জানান, বাড়িটি অকেজো হয়ে পড়ে থাকায় এর সৌন্দর্য হারাচ্ছিল। মাদকসেবীদের আড্ডাখানায় পরিণত হয়েছিল বাড়িটি। চুরি হচ্ছিল বিভিন্ন মালপত্র। তাই আমরা বাড়িটি সর্বসাধারণের জন্য খুলে রাখার উদ্যোগ নিয়েছি। এজন্য একজন লোক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তিনি প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করবেন। সেই সঙ্গে বাড়ির সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করছি। আশা করছি, এ যাত্রা থেমে থাকবে না, একদিন আধুনিকতার ছোঁয়া পাবে সুচিত্রা সেনের বাড়ি।
এদিকে, আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন না হলেও সীমিত পরিসরের সংগ্রহশালা দেখতে প্রতিদিনই ভিড় করছেন দেশ-বিদেশের দর্শনার্থীরা। মহানায়িকার শৈশব-কৈশরের স্মৃতিধন্য এ বাড়ি দেখার সুযোগ পেয়ে দারুন খুশি তার ভক্তরা।
পাবনা ড্রামা সার্কেলের সভাপতি ফারুক হোসেন চৌধুরী বলেন, সুচিত্রা সেনের বাড়িটি জামায়াতের দখলে ছিল। আমাদের আন্দোলনের ফলে তা দখলমুক্ত হয়েছে। সরকারের প্রতি আমাদের দাবি, সেখানে একটি চলচ্চিত্র কেন্দ্রিক সংস্কৃতি কেন্দ্র বা ইনস্টিটিউট গড়ে তোলা হোক। যাতে আগ্রহীরা এখান থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে অবদান রাখতে পারে।
পাবনা সুচিত্রা সেন চলচ্চিত্র সংসদের সভাপতি কমরেড জাকির হোসেন বলেন, সুচিত্রা সেন চলচিত্র জগতের বিস্ময়, কালজয়ী এই মহানায়িকাকে নিয়ে আমরা পাবনায় তিনবার সপ্তাহব্যাপী চলচ্চিত্র উৎসব করেছি। তার অভিনয় নিয়ে গবেষণা, আলোচনা ও শেখার অনেক কিছু রয়েছে। এজন্য এখানে একটি পূর্ণাঙ্গ ফিল্ম ইনস্টিটিউট করতে হবে।
প্রসঙ্গত, ১৯৩১ সালে ৬ এপ্রিল জন্ম নেন সুচিত্রা সেন। তার শৈশব ও কৈশর কেটেছে পাবনা পৌর এলাকার হেমসাগর লেনের এই বাড়িতে। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর স্বপরিবারে কলকাতা চলে যান তারা।