শেষ হলো আইপিইউ এ্যাসেম্বলি ফেয়ার-২০১৭
প্রকাশ : ০৬ এপ্রিল ২০১৭, ০০:২০
শেষ হয়ে গেলো গত ১ এপ্রিল থেকে ঢাকায় শুরু হওয়া ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়নের (আইপিইউ) ১৩৬তম এ্যাসেম্বলি উপলক্ষে আয়োজিত আইপিইউ এ্যাসেম্বলি ফেয়ার-২০১৭। উক্ত এ্যাসেম্বলি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ১ এপ্রিল (শনিবার) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এ সম্মেলনের উদ্বোধন ঘোষণা করেন। এ সময় তিনি স্মারক ডাকটিকিট উন্মোচন এবং আইপিইউ ওয়েবটিভি এরও উদ্বোধন করেন।
১৩৬ তম আইপিইউ এ্যাসেম্বলি উপলক্ষ্যে ঢাকায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের পাশে অবস্থিত বাণিজ্য মেলার মাঠে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে এবং রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো এর তত্ত্বাবধানে এ সম্মেলনের জন্য আগত বিদেশি প্রতিনিধিদের জন্য আইপিইউ এ্যাসেম্বলি ফেয়ার-২০১৭ ঢাকা এর আয়োজন করা হয়েছে। গত ১লা এপ্রিল ২০১৭ বিকেলে ৫ দিন ব্যাপী এই মেলা এর উদ্বোধন করেন গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী জনাব তোফায়েল আহমেদ। মাননীয় মন্ত্রী ফিতা কেটে এই মেলা উদ্বোধন করবার সময় তাকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব প্রাপ্ত সচিব জনাব সুভাশীষ বোস এবং রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো এর ভাইস চেয়ারম্যান মাফরুহা সুলতানা। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন ক্যাপ্টেন (অবঃ) এ বি তাজুল ইসলাম এমপি এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মুন্সী শফিউল হক। বাংলাদেশের আর্থ -সামাজিক উন্নয়ন ও রপ্তানিজাত দ্রব্যাদি বিশ্বের দরবারের তুলে ধরাই এই মেলার মূল উদ্দেশ্য।
১৯৭২ সালে আন্তর্জাতিক এই ফোরামে অন্তর্ভুক্ত হয় বাংলাদেশ। এই প্রথমবারের মতো বিশ্বের আইনপ্রণেতাদের দীর্ঘদিনের পুরনো এই সংগঠনের সম্মেলনের স্বাগতিক দেশ হয়েছে বাংলাদেশ। উক্ত এ্যাসেম্বলিতে বিশ্বের সর্বমোট ১৩১টি দেশের ৬৫০ জন সংসদ সদস্য, ৫৩ জন স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার এবং ২০৯ জন নারী পার্লামেন্টারিয়ান সহ মোট ১ হাজার ৩৪৮ জন প্রতিনিধি এই বৃহৎ সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন। উক্ত সম্মেলনে বৈষম্য নিরসন, নারীর ক্ষমতায়নে সংসদের ভূমিকা সহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয় বলে জানা যায়। ১৩৬ তম আইপিইউ অ্যাসেম্বলি এর এবারের সম্মেলনের প্রেসিডেন্ট হিসবে ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারে জাতীয় সংসদের মাননীয় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, এছাড়াও আইপিইউ এর সভাপতি হিসেবে এবার দায়িত্ব পালন করছেন বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরী।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে এই মেলায় গ্রাম বাংলার উন্ননয়ন কর্মকাণ্ড সহ বাংলাদেশের বিভিন্ন রপ্তানিযোগ্য পণ্য উপস্থাপন করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে – সিরামিক, ইলেকট্রনিক পণ্য, হোম টেক্সটাইল, প্রক্রিয়াজাত পণ্য, ঔষধ শিল্প, পাটজাত সামগ্রী, প্লাস্টিক সামগ্রী, হস্ত শিল্প, বস্ত্র শিল্প। এছাড়াও বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী জামদানী, মসলিন, সিল্ক, তাঁত বস্ত্র, মধু, খাদী, উপজাতীয় শিল্প ইত্যাদিও প্রদর্শন করা হয়েছে। রপ্তানিযোগ্য পণ্যের পাশাপাশি মেলায় রয়েছে বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের প্রদর্শনী। এর মধ্যে রয়েছে- ট্যুরিজম বোর্ড, পাওয়ার ডিভিশন, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় পল্লী উন্নয়ন বিভাগ, আইসিটি ডিভিশন, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প, কমিউনিটি ক্লিনিক, ইউনিয়ন তথ্যকেন্দ্র ইত্যাদি। এছাড়াও রয়েছে- বিজিএমইএ, জয়িতা ফাউন্ডেশন, এসএমই ফাউন্ডেশন, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, বাংলাদেশ নিটওয়্যার প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি, বাংলাদেশ চা বোর্ড, চামড়াজাত পণ্য ও পাদুকা ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স বাংলাদেশ এসোসিয়েশন সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। আইপিইউ এ্যাসেম্বলি ফেয়ার ২০১৭ ঢাকা এর সার্বিক পরিচালনায় রয়েছে ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠান ‘ক্রিয়েটো’।
এর আগে ১৩৬ তম আইপিইউ অ্যাসেম্বলিএর প্রেসিডেন্ট গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারে জাতীয় সংসদের মাননীয় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, আইপিইউ এর সভাপতি বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরী, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় ডেপুটি স্পিকার মহাম্মদ ফজলে রাব্বী মিয়া এবং সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী জনাব আসাদুজ্জামান নূর মেলা প্রাঙ্গন ঘুরে যান। মেলায় আগত অতিথিবৃন্দ এবং মেলা আয়োজক কমিটির বিভিন্ন সদস্যগণকেও এই মেলা নিয়ে খুবই উৎসাহী এবং আশাবাদী দেখা যায়।