পাবনায় স্বামীর নির্যাতনে মরণাপন্ন স্ত্রী
প্রকাশ : ২৫ অক্টোবর ২০১৬, ০১:৩৫
পাবনার বেড়ায় স্বামীর দফায় দফায় নির্যাতনের শিকার হয়ে গুরুতর আহত হয়ে সাতদিন ধরে বেড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ ভর্তি হয়ে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে তিন সন্তানের জননী চস্পা খাতুন, বয়স ৩০। ওই স্বামীর হুমকির কারণে লোকজন মামলা দিতে পারছে না।
এ বিষয়ে গৃহবধুর ভাই আব্দুর রহিম বাদি হয়ে আমিনপুর থানা একটি অভিযোগ করে।
থানার অভিযোগ ও নির্যাতিত পরিবার সুত্র জানায়, বেড়া উপজেলার কৈটলা ইউনিয়নের জয়নগর গ্রামের আব্দুর রশিদের মেয়ে চম্পা খাতুনের প্রায় দশ বছর আগে বিয়ে হয় একই উপজেলার সাতজাকিনী ইউনিয়নের নান্দিয়ারা গ্রামের ময়েজ প্রামানিকের ছেলে আব্দুল মালেকর সাথে। সে পেশায় শিক্ষক। বর্তমানে ধোপাকালা করনেশন উচ্চ বিদ্যালয় এর খন্ড কালিন শিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছে। দীর্ঘ দশ বছরের সংসার জীবনে বহু নির্যাতনের মধ্যেও তাদের ঘরে জন্ম নেয় তিনটি কন্যা সন্তান।
নির্যাতিতের অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই স্বামী আব্দুল মালেক ও তার পরিবারের সদস্যরা গৃহবধু চম্পা খাতুনকে যৌতুকের জন্য নির্যাতন করে। তাদের নির্যাতনে চম্পা বাবার বাড়ি থেকে প্রায় পাঁচ লাখ টাকা আদায় করে শিক্ষক স্বামীর হাতে তুলে দেয়। সে টাকায় একটি সিএনজি কেনা হয়। এরপরও সে আবারও দুই লাখ টাকা যৌতুকের দাবিতে নির্যাতন চালায়।
এর ধারাবাহিকতায় গত ১৭ অক্টোবর (সোমবার) আব্দুল মালেক (৪০), তার বোন নীলা (২২), সীলা (২৫), রাহিমা (৩২), রহিমা (৩৫), তহমিনা (১৯), রিতা (৩৭), বাবা ময়েজ উদ্দিন মিলে চম্পা খাতুনকে ব্যাপক মারধর করে গলায় কাপড় পেচিয়ে প্রাণ নাশের চেষ্টা করে। এসময় চম্পার চিৎকারে প্রতিবেশিরা এগিয়ে আসে তাকে উদ্ধার করে। আহত চম্পা চিকিৎসার জন্য স্বামীর বাড়ি থেকে পাশের খালাত বোনের বাড়িতে আশ্রয় নেয়। স্বামী আব্দুল মালেক সেখানে গিয়ে গত ১৯ অক্টোবর আবারো লাঠি দিয়ে মারধর করে আহত করে। এতে চম্পার অবস্থা আশঙ্কাজনক হলে দ্রুত বেড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভর্তি করা হয়। এখন সে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে।
এ ঘটনায় চম্পার ভাই আব্দুর রহিম জানান, চম্পাকে বিয়ের পর থেকেই টাকার কথা বলে মারপিট করত। এজন্য তাকে ৫লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে। তারপরও তার উপর নির্যাতন থামেনি।
ধোপাকালা করনেশন উচ্চ বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ আবু বকর সিদ্দিক জানান, ঘটনাটি শুনেছি। অপরাধী যেই হোক তার শাস্তি আমরা অবশ্যই চাই। একজন নারী নির্যাতনকারি কখনই শিক্ষাকতার যোগ্য নয়।
এবিষয়ে আমিনপুর থানায় একটি অভিযোগ করা হয়।
আমিনপুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তাজুল ইসলাম জানান, অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।