মেয়ের চেষ্টায় ২২ বছর পর বাবা মায়ের সংসারে জোড়া
প্রকাশ : ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬, ১১:৫১
সংসার টেকে বিশ্বাস আর ভালোবাসায়। সেই বিশ্বাসে চির ধরে সংসার টেকানো দায় হয়ে পড়ে। এমনই এক পরিস্থিতি স্বীকার হয় এক দম্পতি। অবিশ্বাস আর অভিমানে, স্বামী-স্ত্রীর দুজন দুই প্রান্তে। একজন লক্ষ্মীপুরে অপরজন কক্সবাজার। আর এভাবে ২২ বছর কেটে যায়। তাদের এ দূরত্বে কারণে মেয়ে আয়েশা সিদ্দিকা (২৩) এক বছর বয়স থেকেই বাবার আদর-স্নেহ থেকে বঞ্চিত হয়। অবশেষে কলেজ পড়ুয়া মেয়ে আয়েশার প্রচেষ্টায় বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় তার বাবা-মায়ের অভিমানের দেয়াল ভাঙ্গে। আয়েশা ফিরে পায় বাবা সিদ্দিক উল্লাকে (৫০)।
জানা যায়, লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার হাজিরহাট ইউনিয়নের চর জাঙ্গালিয়া গ্রামের সিদ্দিক উল্লাহ ১৯৯৩ সালে কক্সবাজারের বাসিন্দা রহিমা খাতুনকে বিয়ে করেন। বিয়ের এক বছর পর তাদের ঘরে আলো করে আসে কন্যা সন্তান আয়েশা। এর এক বছর পরই তাদের মধ্যে অভিমানের দেয়াল তৈরি হয়। একপর্যায়ে সিদ্দিক মেয়ে ও স্ত্রীকে রেখে লক্ষ্মীপুরে চলে আসেন। আবার বিয়ে করে সংসার করেন। কিন্তু রহিমা খাতুন মেয়ে আয়েশাকে বুকে নিয়ে স্বামীর অপেক্ষায় ২২ বছর কাটিয়ে দেন। সম্প্রতি সময়ে মেয়ে আয়েশা সিদ্দিকা তার বাবাকে ফিরে পেতে কক্সবাজার আইন সহায়তা কেন্দ্রের আশ্রয় নেন।
এরই প্রেক্ষিতে কমলনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ মাহবুবুল আলম মজুমদার ও হাজিরহাট ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিনের মাধ্যমে মেয়ে আয়েশা ফিরে পেয়েছে বাবাকে; স্ত্রী রহিমা খাতুন পেয়েছেন স্বামী। বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) রাতে সিদ্দিক তার মেয়ে আয়েশা ও স্ত্রী রহিমাকে লক্ষ্মীপুরের ঘরে তুলেছেন।
আয়েশা বলেন, ‘২২ বছর পর বাবাকে ফিরে পেয়েছি; আমি বাবা-মাকে সব সময় এক সঙ্গে দেখতে চাই; কাউকে হারাতে চাই না। এসময় রহিমা খাতুন কিছু বলতে চেয়ে আনন্দের কান্নায় বলতে পারছিলেন না।’
সিদ্দিক উল্যাহ বলেন, ‘আমার বিশ্বাস ছিলো একদিন আমার মেয়েকে আমি কাছে পাবো।’
হাজিরহাট ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন বলেন, ‘২২ বছর স্বামী-স্ত্রী অভিমানের দেয়াল ছিলো। এতে আদর থেকে বঞ্চিত হয়েছে মেয়ে। সেই মেয়েই তাদের একত্রিত করেছে। তাদের জন্য অনেক শুভ কামনা।’