অ্যাসাঞ্জের ধর্ষণ মামলা তুলে নিচ্ছে সুইডেন
প্রকাশ : ২০ মে ২০১৭, ২৩:১১
উইকিলিকস প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে আনা ধর্ষণের মামলা তুলে নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে সুইডেন।
১৯ মে (শুক্রবার) বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, সুইডেনের চিফ প্রসিকিউটর মেরিঅ্যান নি স্টকহোম জেলা আদালতের কাছে অ্যাসাঞ্জের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা প্রত্যাহারের আবেদন করেন।
এর মধ্য দিয়ে সাত বছর ধরে চলা অচলাবস্থা কাটার একটি পথ তৈরি হলেও লন্ডনে ইকুয়েডরের দূতাবাসে অবস্থানরত অ্যাসাঞ্জকে এখন তাকিয়ে থাকতে হচ্ছে ব্রিটিশ পুলিশের দিকে। ধর্ষণের অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে এসেছেন তিনি।
নথি ফাঁসের জন্য বিচারের মুখোমুখি করতে যুক্তরাষ্ট্রে প্রত্যর্পণ এড়াতে ২০১২ সালে জামিনের শর্ত ভেঙে পালিয়ে ওই দূতাবাসে উঠেছিলেন তিনি।
উইকিলিকস ২০১০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের বিপুল সংখ্যক কূটনৈতিক নথি ফাঁস করে দিলে স্পর্শকাতর বিভিন্ন ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা ও অবস্থানের তথ্য গণমাধ্যমে চলে আসে। তাতে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বেকায়দায় পড়ে যায় বিশ্বের ‘সবচেয়ে ক্ষমতাধর’ দেশ যুক্তরাষ্ট্র। ওই সময়ই বিশ্বব্যাপী আলোচনায় আসেন অ্যাসাঞ্জ।
ওই বছরই সুইডেনে জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেন দুই নারী। এক পর্যায়ে সুইডিশ পুলিশ অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।
সুইডেনের অনুরোধে যুক্তরাজ্যের পুলিশ ২০১০ সালের ৭ ডিসেম্বর অ্যাসাঞ্জকে গ্রেপ্তার করে। নয় দিন পর কঠিন কয়েকটি শর্তে জামিন পান তিনি।
পাসপোর্ট জমা রেখে দিনরাত গোড়ালিতে ইলেকট্রনিক ট্যাগ পরা অবস্থায় এক বন্ধুর বাড়িতে থাকার এবং প্রতিদিন থানায় হাজিরা দেওয়ার শর্তে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়।
এরপর অ্যাসাঞ্জ উচ্চ আদালতে গেলেও তাকে সুইডেনের কাছে হস্তান্তরের পক্ষে রায় আসে। ওই অবস্থায় ২০১২ সালের ১৯ জুন লন্ডনের ইকুয়েডর দূতাবাসে ঢুকে রাজনৈতিক আশ্রয় নেন অ্যাসাঞ্জ।
তার আহ্বানে ২০১৪ সালে জাতিসংঘের ‘নিবর্তনমূলক গ্রেপ্তার’ বিষয়ক ওয়ার্কিং গ্রুপ লন্ডনে গিয়ে তদন্ত করে। গতবছর প্রকাশিত তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১০ সালে গ্রেপ্তারের পর থেকেই অ্যাসাঞ্জ আসলে নিবর্তনমূল বন্দিদশার শিকার।
বন্দিত্বের অবসান ঘটিয়ে তাকে মুক্তভাবে বেরিয়ে যাওয়ার সুযোগ দেওয়ার পাশাপাশি ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা বলা হয় ওই প্যানেলের প্রতিবেদনে।
অবশ্য যুক্তরাজ্য ও সুইডেন অ্যাসেঞ্জের মানবাধিকার হরণের অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।