কাতার আদালতে ধর্ষিতাকেই সাজা!

প্রকাশ : ১৫ জুন ২০১৬, ১৫:৫৯

জাগরণীয়া ডেস্ক

ডাচ এক তরুণী কাতারে বেড়াতে গিয়ে সেখানেই এক সিরীয় ব্যক্তি কৌশলে তাঁকে ধর্ষণ করে। পরে সেই তরুণীকেই গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর কাতারের আদালত ব্যভিচারের অভিযোগে জরিমানা করে স্থগিত দণ্ডাদেশও ঘোষণা করেছে কথিত ধর্ষিতার বিরুদ্ধে।

নেদারল্যান্ডসের নাগরিক ২২ বছরের লাউরা ছুটিতে কাতারে বেড়াতে গিয়েছিলেন। সেখানেই এক হোটেলে সন্ধ্যায় নাচছিলেন। নাচের ফাঁকে সামান্য মদ্যপানও করেন। কিন্তু যে পরিমাণ মদ্যপান করেন তাতে সমস্যা হওয়ার কথা নয়, এরপরও অচেতন হয়ে যান লাউরা। পরদিন সকালে তিনি নিজেকে এক অচেনা ঘরে আবিষ্কার করেন, বুঝতে পারেন তাঁকে ধর্ষণ করা হয়েছে।

লাউরার অভিযোগ, তাঁকে মদের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে ধর্ষণ করা হয়েছে। যার রুমে তাঁকে নেওয়া হয়েছিল তার নাম ওমর আব্দুল্লাহ আল-হাসান। তার বিরুদ্ধেই ধর্ষণের অভিযোগ এনেছেন লাউরা। 

কিন্তু সিরীয় নাগরিক ওমরের দাবি, সেই রাতে যৌনমিলন লাউরার সম্মতিতেই হয়েছে৷ যৌনমিলনের জন্য লাউরা তার কাছে টাকা চেয়েছিলেন বলেও দাবি করেছেন ওমর।

এদিকে, কাতারের আদালত ওমরকে অবৈধ যৌনমিলনের অভিযোগে ১০০ বার বেত্রাঘাত এবং মদ্যপানের অভিযোগে ৪০ বার বেত্রাঘাতের শাস্তি ঘোষণা করেন৷ আদালতের আদেশে আরও বলা হয়, বেত্রাঘাতের ধকল সহ্য করার স্বাস্থ্যগত সামর্থ আছে কিনা তা পরীক্ষা করেই ওমরের শাস্তি কার্যকর করা হবে৷ এরপর তাকে সিরিয়ায় ফেরত পাঠানো হবে।

পাশাপাশি লাউরার বিরুদ্ধেও শাস্তি ঘোষণা করেছে কাতারের আদালত। গত ১৪ মার্চ তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে ব্যভিচারের অভিযোগে তাঁকে ৩ হাজার কাতারি রিয়াল (৭১০ ইউরো) জরিমানা করে কাতারের আদালত৷ আদেশে আরো বলা হয়, একই ‘অপরাধ’ আবার করলে লাউরাকে এক বছর কারাভোগ করতে হবে। অবশ্য লাউরা এখন মুক্ত। জরিমানার টাকা পরিশোধ করলেই দেশে ফিরতে পারবেন তিনি।

এদিকে লাউরাকে গ্রেপ্তারের পর থেকেই হ্যাশট্যাগফ্রিলরা (#FreeLaura)-র মাধ্যমে প্রতিবাদের ঝড় উঠে এবং তাঁর মুক্তির দাবি ওঠে। ধর্ষণের উপযুক্ত শাস্তি না দিয়ে ধর্ষিতাকেই কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর অদ্ভুত আইনের সমালোচনা করেছেন অনেকেই।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত