যুক্তরাষ্ট্রের নারী মেরিন সেনাদের নগ্ন ছবি ফেসবুকে!
প্রকাশ : ০৮ মার্চ ২০১৭, ০৪:৪২
গোপনে নারী সহকর্মীদের ছবি তুলে সেসব ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে দিয়েছেন কয়েকজন মেরিন সেনা। সাবেক ও বর্তমান মেরিন সেনাদের ৩০ হাজারের বেশী সদস্য সংখ্যার ঐ ফেসবুক গ্রুপে এসব ছবি পোস্ট নিয়ে শুরু হয়েছে তদন্ত। ‘মেরিন ইউনাইটেড’ নামে ফেসবুকের গ্রুপে এসব নগ্ন ছবিগুলি অন্যান্য সামাজিক মাধ্যমগুলিতেও ছড়িয়ে পড়ছে।
এসব ছবি ‘কুরুচিপূর্ণ’ এবং অত্যন্ত আক্রমনাত্মক ‘যৌনতাসংক্রান্ত’ মেসেজযুক্ত, বলা হয়েছে বিবিসির এক প্রতিবেদনে। অবশ্য অবসরপ্রাপ্ত মেরিন কর্মকর্তা থমাস ব্রেনান কর্তৃক চালিত ‘ওয়্যার হর্স’ নামের অলাভজনক এক সংবাদদাতা প্রতিষ্ঠান এই গ্রুপের এমন অসামাজিক কার্যকলাপ সর্বপ্রথম উন্মোচন করেন।
জানা গেছে, ‘মেরিনস ইউনাইটেড’ নামে ওই গ্রুপেই জানুয়ারি মাসে প্রথমবারের মতো নগ্ন ছবিগুলো শেয়ার করা হয়েছিল।
যুদ্ধক্ষেত্রে বা অনুশীলনের সময় প্রায়ই মহিলা কম্যান্ডোদের পোশাক বদলানো, স্নান কিংবা শৌচকর্মের জন্য যথাযথ পরিকাঠামো দেওয়া যায় না। সেই সুযোগের অপব্যবহার করেই বেশির ভাগ ছবি তোলা হয়েছে বলে দাবি করেছে ‘ওয়্যার হর্স’ নামের ওয়েবসাইটটি।
এই ঘটনায় ছবি প্রকাশ হয়েছে এমন পাঁচ নারীর সঙ্গে কথা বলেছে ওয়্যার হর্স। তাদের মধ্যে দুইজন- ‘তাদের সাবেক সঙ্গী’ এসব ছবি ফাঁস করতে পারেন বলে ধারণা করছেন। আর কারও কারও ধারণা তাদের অ্যাকাউন্ট হয়তো হ্যাক হয়েছে।
মেরিন বিভাগের মুখপাত্র রায়ান অ্যালভিস বলেছেন, ‘অত্যন্ত নিন্দনীয় ঘটনা। আমরা তদন্ত শুরু করেছি। দোষীদের ছাড়া হবে না। মেরিনদের কাজ শৃঙ্খলা বজায় রেখে লড়াই করা। এ ধরনের বিশৃঙ্খলাকে আমরা জঘন্য অপরাধ হিসাবেই দেখব।’ এর বাইরেও মহিলা কম্যান্ডোদের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট থেকে তাঁদের সম্মতি ছাড়াই ছবি নিয়ে বিকৃতভাবে ব্যবহার করা হয়েছে।
মেরিন -এর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা সার্জেন্ট মেজর ডোনাল্ড গ্রিন লিখিত বক্তব্যে বলেছেন, ‘এমন কার্যকলাপ আমাদের নীতি আর ঐতিহ্যবিরোধী। এমন আচরণ ভুক্তভোগী মেরিন সদস্য, তাদের পরিবার আর অসামরিকদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে’।
নেভাল ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেটিভ সার্ভিস (এনসিআইএস)-ও এ নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে। ইতোমধ্যে ‘মেরিনস ইউনাইটেড’ নামের ঐ ফেসবুক গ্রুপটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
সাইবার অপরাধের শিকার লেন্স কর্পোরাল মেরিসা ওয়েটেক মার্কিন দৈনিক ওয়াশিংটন পোস্ট-কে জানিয়েছেন, ‘ছবিগুলো তার ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট থেকে নেওয়া হয়েছে এবং তার অনুমতি ছাড়াই মেরিনস ইউনাইটেড পেইজে পোস্ট করে দেওয়া হয়েছে’।
তিনি বলেন, ‘স্বপ্নেও ভাবতে পারি না, যাঁদের সঙ্গে দাঁড়িয়ে আমরা দেশের শত্রুদের বিরুদ্ধে লড়ি, জীবন মৃত্যুর বাজি ধরে নিজেদের কর্তব্যপালন করি, তাঁরা এমন কাজ করতে পারেন। দোষীদের কড়া শাস্তি চাই’।
মেরিন কর্পস-এর মুখপাত্র ক্যাপ্টেন রিয়ান ই আলভিস বলেন, ‘থমাস ব্রেনান এর প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ, যিনি মেরিন ইউনাইটেড পেইজের এসব কর্মকাণ্ড সম্পর্কে মেরিন কর্পস আর এনসিআইএস-কে অবহিত করেছেন’।