মিয়ানমারকে জাতিসংঘের সতর্কবার্তা
প্রকাশ : ১৭ ডিসেম্বর ২০১৬, ১৭:১৩
রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ে মিয়ানমার সরকারের 'গা ছাড়া' ভাব বড় ধরনের ক্ষতির কারণ হতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনার জেইদ রা'দ আল হুসেন।
দেশটির ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী নেত্রী নোবেলজয়ী অং সান সু চিকে বিরোধপূর্ণ উত্তরাঞ্চল পরিদর্শনের আহ্বান জানানোর সপ্তাহখানেক পর এক সতর্কবার্তায় এ শঙ্কা প্রকাশ করেন হাই কমিশনার।
রবিবার (৯ অক্টোবর) মিয়ানমারের তিনটি সীমান্ত পোস্টে 'বিচ্ছিন্নতাবাদীদের' হামলায় নয় সীমান্ত পুলিশ নিহত হওয়ার পর সেনা অভিযান শুরু হয় রাখাইন রাজ্যের রোহিঙ্গা অধ্যুষিত জেলাগুলোতে। এরপর থেকে সহিংসতায় বহু রোহিঙ্গা নিহত হয়েছে, সহিংসতা থেকে বাঁচতে কয়েক হাজার রোহিঙ্গা পালিয়ে ঢুকেছে বাংলাদেশে।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, ২০১২ সালে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় শতাধিক মারা যাওয়ার পর এ দফাই এত বেশি রোহিঙ্গা উদ্বাস্তু ছুটছে বাংলাদেশ সীমান্ত পানে।
বিরোধপূর্ণ ওই এলাকায় বিদেশি সাংবাদিক ও ত্রাণকর্মীদের ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না, যা নিয়ে সন্দেহ পোষণ করেন জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক কমিশনের প্রধান জেইদ।
এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, মিয়ানমার সরকার যদি সেখানকার পরিস্থিতিকে 'হালকা, নিষ্ফল বা গাছাড়া' ভাব নিয়ে দেখে তাহলে তা দীর্ঘমেয়াদে বড় ধরনের ক্ষতি ডেকে আনতে পারে ওই অঞ্চলে।
জেইদ বলেন, "রাখাইনে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগকে ভিত্তিহীন ও জালিয়াতি অ্যাখ্যা দিয়ে সেখানে নিরপেক্ষ পর্যবেক্ষকদের প্রবেশের আবেদন ধারাবাহিক খারিজ করা হচ্ছে, যা নির্যাতিতদের জন্য অপমানস্বরূপ এবং আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।"
বিরোধপূর্ণ উত্তর রাখাইনে শান্তি ফেরাতে দেশটির সরকারকে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে জমে থাকা দীর্ঘদিনের ক্ষোভ নিরসনে ব্যবস্থা নিতেও অনুরোধ জানান তিনি।
রাখাইন পরিস্থিতি নিয়ে মিয়ানমার সরকারের তদন্ত কমিশন গঠন করার কথা উল্লেখ করে নিরপেক্ষ পর্যবেক্ষকদের শর্তহীনভাবে বিরোধপূর্ণ ওই অঞ্চল পরিদর্শনে অনুমতি দেয়ার ওপর জোর দেন জেইদ।
তিনি আরও বলেন, "মিয়ানমার সরকারকে বিপজ্জনক ও অসহনীয় রাখাইন সঙ্কট, যা এরই মধ্যে বিস্তৃত হয়ে অঞ্চলজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে তার সমাধানে আন্তর্জাতিক সহায়তা গ্রহণের অনুরোধ জানাচ্ছি।"