শরণার্থীদের লাথি মারা সেই নারী সাংবাদিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন
প্রকাশ : ০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬, ১৫:৫৪
হাঙ্গেরিতে ২০১৫ সালের ৮ সেপ্টেম্বর সংবাদ সংগ্রহের সময় সিরীয় শরণার্থীদের লাথি মেরে দুনিয়াজুড়ে নিন্দার ঝড় তোলেন আলোচিত নারী ফটোসাংবাদিক পেত্রা লাসজলো। এবার গত বুধবার (৭ সেপ্টেম্বর) তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছে দেশটির প্রসিকিউটররা। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
শরণার্থীদের লাথি মারা ঘটনায় পেত্রা লাসজলো’র বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ আনা হয়েছে। তবে তার বিরুদ্ধে বর্ণবাদী চিন্তাভাবনা থেকে এমন আচরণের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন প্রসিকিউটররা।
অভিযুক্ত ওই নারী সাংবাদিক ঘটনার সময় হাঙ্গেরির এন ওয়ান টিভি’র ফটোসাংবাদিক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ২০১৫ সালের ৮ সেপ্টেম্বর তিনি হাঙ্গেরিতে পুলিশের ধাওয়ায় পলায়নরত শরণার্থীদের দৃশ্য ধারণ করছিলেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে দিগ্বিদিক ছুটে যাওয়া শরণার্থীদের ধাক্কা লাগে। আর এতে চরম ক্ষুব্ধ হন এই নারী ফটোসাংবাদিক।
ক্ষুব্ধ পেত্রা লাসজলো প্রথমে দুই শিশুকে লাথি মারেন। তারপর সন্তানকে কোলে নিয়ে পুলিশের হাত থেকে পলায়নরত এক বাবাকে লাথি মারেন। এতে সন্তানসহ মাটিতে লুটিয়ে পড়েন ওই বাবা। অন্যান্য সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরায় বিষয়টি ধরা পড়লে সোশ্যাল মিডিয়ায় এটি দ্রুত ভাইরাল হয়। দুনিয়াজুড়ে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেয় এই ঘটনা। সমালোচনার পরিপ্রেক্ষিতে পেত্রাকে চাকরিচ্যুত করে টেলিভিশন কর্তৃপক্ষ।
এন ১ টিভি’র প্রধান সম্পাদক জাবোলকস কিসবার্ক সে সময় জানিয়েছিলেন, আমাদের এক সহকর্মী রোসজকি’র ত্রাণ সংগ্রহ পয়েন্টে শরণার্থীদের সাথে অগ্রহণযোগ্য আচরণ করায় তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।
ফটোসাংবাদিক পেত্রা লাসজলো’ই শুধু নয়, শরণার্থীদের প্রতি হাঙ্গেরি সরকারের আচরণও বেশ রূঢ়। গতবছর প্রকাশিত এক ফুটেজে দেখা গেছে, চিড়িয়াখানার পশুদের মতো বাইরে থেকে শরণার্থীদের দিকে খাবারের ব্যাগ ছুড়ে মারা হচ্ছে।
ওই ভিডিওটি ধারণ করেন এক অস্ট্রীয় নারী। তিনি বলেন, আশ্রয়শিবিরে শরণার্থীদের সঙ্গে পশুর মতো আচরণ করা হচ্ছে।
চলতি বছরের মার্চে হাঙ্গেরির পুলিশের একজন মুখপাত্র জানান, হাঙ্গেরি-সার্বিয়া সীমান্তে কয়েকটি ফাটল রয়েছে। প্রতিদিন সীমান্ত পারাপারের সময় প্রায় ১০০ থেকে ২০০ জন মানুষকে পুলিশ আটক করে।
গত বছর ১ লাখ ৭৭ হাজার ১৩৫ জন আশ্রয় লাভের জন্য আবেদন করলেও কেবলমাত্র ১৪৬ জনের আবেদন গ্রহণ করা হয়। আরও ৩৬২ জনকে অস্থায়ীভাবে সেখানে থাকার অনুমতি দেওয়া হয়।
সূত্র: আল জাজিরা।