স্ত্রীকে নিয়ে নেদারল্যান্ডস ফিরতে চান শামীমার স্বামী

প্রকাশ : ০৪ মার্চ ২০১৯, ০০:১৯

জাগরণীয়া ডেস্ক

সিরিয়ায় জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটে (আইএস) যোগ দেওয়ার চার বছর পর সন্তানকে নিয়ে দেশে ফিরতে চাওয়া যুক্তরাজ্যের শামীমা বেগমকে নিয়ে এবারে নেদারল্যান্ডসে ফিরে যেতে চান তার স্বামী ইয়াগো রিদাইক। এছাড়াও আইএস এর জীবন, শামীমার সাথে পরিচয় ও বিয়ে নিয়ে বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ইয়াগো কথা বলেন।

আইএস এর জন্য যুদ্ধ করা ২৭ বছর বয়সী ইয়াগো বর্তমানে সিরিয়ায় উত্তর-পূর্বাঞ্চলে কুর্দি বাহিনীর হাতে আটক আছেন। তবে এখন স্ত্রী শামীমা ও সন্তানকে নিয়ে নেদারল্যান্ডসে নিজের বাড়িতে ফিরতে চান তিনি।  ২০১৫ সালে শামীমা সিরিয়ায় আইএসের নিয়ন্ত্রিত এলাকায় যাওয়ার কিছুদিনের মধ্যে তাঁদের বিয়ে হয়।  এসব তথ্য জানান। যদিও দেশে ফিরলে সন্ত্রাসী সংগঠনে যোগ দেওয়ায় তার ছয় বছরের কারাদণ্ড হতে পারে।

বিবিসির মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক প্রতিবেদক কুয়েনটিন সামারভিলকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ইয়াগা বলেন, তিনি আইএসকে প্রত্যাখ্যান করেছেন। ৩৯ হাজার লোকের সঙ্গে সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে আল-হাওয়াল শরণার্থীশিবিরে এক গ্রুপ সিরিয়ান যোদ্ধাদের কাছে ইয়াগো, শামীমা ও তাদের নবজাতক জারাহ আত্মসমর্পণ করেন। তারা এই গোষ্ঠীকে ছেড়ে আসতে চেষ্টা করেছেন। এমনকি জঙ্গিরা তাকে ডাচ্‌ গোয়েন্দা দাবি করে রাকায় কারাবন্দী করে নির্যাতন করে বলেও দাবি করেন তিনি।

শামীমার সাথে তার সম্পর্কের ব্যাপারে ইয়াগো বলেন, ১৫ বছর বয়সী শামীমাকে যখন বিয়ে করি, তখন আমার বয়স ছিল ২৩ বছর। আমার এক বন্ধু এসে বলল, এখানে একটি মেয়ে আছে, যে বিয়ে করতে আগ্রহী। কিন্তু মেয়েটি ছোট হওয়ায় আমি আগ্রহ দেখাইনি। পরে যেকোনোভাবেই হোক আমি প্রস্তাবটি গ্রহণ করি। বিয়ে করার ব্যাপারটি শামীমার নিজস্ব সিদ্ধান্ত ছিল। সে একজন সঙ্গী খুঁজছিল। তবে শামীমার বয়স এত কম ছিল যে সে চাইলে কিছুটা অপেক্ষা করতে পারতো, সে তা করেনি। সে বিয়ের সিদ্ধান্ত নেয় এবং আমি তাকে বিয়ে করি। আর এতে ভুল কিছু ছিল না।

উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে পূর্ব লন্ডনের বেথনাল গ্রিন একাডেমির ছাত্রী শামীমা তার স্কুলের দুই বন্ধু খাদিজা সুলতানা ও আমিরা আবাসের সঙ্গে যুক্তরাজ্য থেকে পালিয়ে আইএসে যোগ দিতে সিরিয়া চলে যান। সম্প্রতি শামীমা তার সন্তানের নিরাপত্তার স্বার্থে নিজ দেশ যুক্তরাজ্যে ফেরার আকুতি  জানান। তবে ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাজিদ জাভিদ তাকে যুক্তরাজ্যের জন্য হুমকি হিসেবে উল্লেখ করে তার ব্রিটিশ নাগরিকত্ব বাতিলের নির্দেশ দেন।

এদিকে গত ১ মার্চ (শুক্রবার) শামীমার পরিবারের আইনজীবী তাসনিম আখুঞ্জির বরাত দিয়ে যুক্তরাজ্যের গার্ডিয়ান পত্রিকা এক খবরে বলেছে, নিজের দুর্দশার কথা প্রকাশ করায় জঙ্গিরা শামীমাকে হত্যার হুমকি দিয়েছে। আর তাই নিজের ও নবাগত সন্তানের নিরাপত্তার কথা ভেবে সন্তানকে নিয়ে সিরিয়ার ঐ শরণার্থী শিবির থেকে পালিয়েছেন শামীমা।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত