মরণঘাতী গেইমে আসক্তি, মা-বাবা-বোনকে হত্যা

প্রকাশ : ১৬ অক্টোবর ২০১৮, ০১:৩৩

জাগরণীয়া ডেস্ক

মরণঘাতী সাইকোলজিক্যালে গেইমে আসক্ত হয়ে মা- বাবা এবং বোনকে হত্যা করেছে সুরজ ভার্মা নামের ১৯ বছরের এক ভারতীয় তরুণ।

গত ১০ অক্টোবর (বুধবার) দিল্লিতে এ ঘটনা ঘটে, ঐ দিন বিকেলে ঐ কিশোরকে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশের বরাত দিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম জানায়, স্বপ্ন পূরণে সুরজ সারনামকে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ভর্তি করিয়েছিল বাবা। কিন্তু ছেলে কিছুদিনের মধ্যেই জনপ্রিয় হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে অনলাইন গেইম ‘পিইউবিজি (প্লেয়ার আননোনস ব্যাটেলগ্রাউন্ডস)’-এ আসক্ত হয়ে পড়ে।

পুলিশ জানায়, ঐ কিশোর দারুণ সাইকোলজিক্যাল গেইম পিইউবিজিতে এতটাই আসক্ত হয়ে পড়েছিল যে সে  বন্ধুর ভাড়া করা রুমে সকাল ৭টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সে এই গেম খেলত। ভার্সিটির ক্লাস ফাঁকি দিয়ে ৯ থেকে ১০ জনের একটা গ্রুপ হোয়াটসঅ্যাপে এ খেলা খেলতোছিল। 

পুলিশ আরও জানায়, প্রথমে তার বাবা মীথিলেশ, মা সিয়া এবং বোনকে হত্যা করার পর সুরজ ঘরের সব কিছু উলটপালট এবং ভাঙচুর করে রাখে, যাতে এটা ডাকাতের কাণ্ড সন্দেহ করে তাকে ধরা না পড়তে হয়। পরে দিল্লি পুলিশ তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে।

পরিবারের বরাত দিয়ে পুলিশ জানিয়েছে, সবাই জানতো, সুরাজ শান্ত এবং চুপচাপ। তবে প্রতিবেশীরা উল্লেখ করেছেন, সুরাজের বাসা থেকে প্রায়ই উচ্চস্বরে ঝগড়া এবং সুরাজকে বকাঝকা করা হচ্ছে এমন আওয়াজ শোনা যেতো।

সুরাজ পুলিশকে জানিয়েছে, তার বাবা তাকে তার কন্ট্রাকটর বানাতে সিভিলের ডিপ্লোমা কোর্সে ভর্তি করে দিয়েছিল, যা তার পছন্দ নয়। তার মা তাকে দ্বাদশ শ্রেণীতে ফেল করায় অনেক বকাঝকা করেছিল, যার কারণে সে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিল। তার ছোটবোনকে তার তুলনায় বেশি আদর -ভালোবাসা দেয়া হতো, সেজন্য ছোটবোনের উপর তার ক্ষোভ ছিল। তাছাড়া তার ছোটবোন প্রায়ই তার ব্যক্তিগত বিষয়গুলো পরিবারকে জানিয়ে দিতো, সেকারণে ওর উপর বিরক্ত ছিল। এসব কারণেই ঐ ঘটনার পর কিশোরের কোন অনুশোচনা নেই।

জানা গেছে, কয়েক বছর আগে সুরাজ তার নিজের ফেইক কিডন্যাপ কেস সাজিয়েছিল, তার বাবা-মাকে বিপদে ফেলার জন্যে। 

এর আগে ২০১৭ সালে আত্মঘাতি গেম ‘ব্লু-হোয়েল’ ঝড় উঠেছিল। ব্লু-হোয়েলের আতঙ্ক থেকে বের হতে না হতেই আবার নতুন করে ইন্টারনেট জগতে ঝড় তুলে এই গেম। অনলাইনে এ ধরনের গেমগুলোকে মরণঘাতী সাইকোলজিক্যাল গেম বলে উল্লেখ করছেন বিশ্লেষকরা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মেসেজের মাধ্যমে এ গেম খেলার আমন্ত্রণ দেয়া হয়ে থাকে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত