শিশু জয়নব হত্যাকাণ্ড: আসামির মৃত্যুদণ্ড উচ্চ আদালতে বহাল

পাকিস্তানে ছয় বছরের শিশুকন্যা জয়নব ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের প্রধান আসামি ইমরান আলির জামিন আবেদন নাকচ করে দিয়ে তার মৃত্যুদণ্ডের রায় বহাল রেখেছে সুপ্রিম কোর্ট। খবর জিও টিভি এর।

গত ১২ জুন (মঙ্গলবার) আসিফ সাইদ খোসা, মঞ্জুর আহমেদ মালিক এবং মনসুর আহমেদ শাহ নিয়ে গঠিত ৩ সদস্যের বিচারপতির একটি বেঞ্চ এ রায় দেন।

উল্লেখ্য, চলতি বছরের ৪ জানুয়ারি কোরআন ক্লাস শেষে ফেরার পথে নিখোঁজ হয় পাঞ্জাবের কাসুরের সাত বছরের শিশু জয়নাব আনসারি। বাবা-মা সৌদিতে ওমরাহ পালনে যাওয়ায় কয়েক দিনের জন্য খালার বাড়িতে থাকা শিশুটির মরদেহ ৯ জানুয়ারি শহরের একটি আবর্জনার স্তূপে পাওয়া যায়। ময়নাতদন্তে নিশ্চিত হওয়া যায় ধর্ষণের পর হত্যার শিকার সে। এক বছরের মধ্যে ১২ তম শিশু হিসেবে ধর্ষণের শিকার হওয়া জয়নাবের মৃত্যুতে শুরু হয় বিক্ষোভ। কাসুরের বিক্ষোভে পুলিশের গুলিতে দুজন নিহত হলে পাকিস্তানের বিভিন্ন শহরে সেই বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।

গত ১৭ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের শিশু জয়নাবকে ধর্ষণের পর হত্যাকারী ইমরান আলীকে ফাঁসির আদেশ দেয় দেশটির আদালত। সন্ত্রাস-বিরোধী আদালত চারটি অভিযোগ আমলে নিয়ে এই দণ্ড দিয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছে সেদেশের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম। পাঞ্জাব প্রদেশের কাসুরের এক কারাগারের অভ্যন্তরে সন্ত্রাস-বিরোধী আদালতের বিচারক সাজ্জাদ আহমেদ এই দণ্ড ঘোষণা করেন।

ফরেনসিক পরীক্ষায় জানা যায়, জয়নাবের শরীরে পাওয়া সন্দেহভাজন অপরাধীর ডিএনএ নমুনাটি আগে ধর্ষণের শিকার হওয়া সাতটি শিশুর শরীরেও পাওয়া গিয়েছিলো। গত ২৩ জানুয়ারি ওই নমুনার সঙ্গে এক সন্দেহভাজনের নমুনা মিলে যাওয়ার পর পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ সংবাদ সম্মেলনে ঘোষণা করেন ইমরান আলী হলেন সেই অপরাধী। সন্ত্রাসবিরোধী আদালতে শুরু হয় তার বিচার। এ ঘটনায় জয়নাবের চাচা ও ভাইসহ মোট ৫৬ জন সাক্ষ্য দেন। প্রসিকিউটর জানান, ফরেনসিক রিপোর্ট ও পলিগ্রাফিক পরীক্ষায়ও প্রমাণ হয়েছে ইমরানই জয়নবকে হত্যা করে।

এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের খবরে বলা হয়েছে, চারটি অভিযোগ আমলে নিয়ে ইমরানের ফাঁসির দণ্ড দেওয়া হয়েছে। তাকে শিশু হত্যা, শিশু অপহরণ, শিশু ধর্ষণ এবং শিশুর সঙ্গে অস্বাভাবিক কর্মকাণ্ডের দায়ে অভিযুক্ত করা হয়। এছাড়া শিশুর দেহ উন্মুক্ত করে নির্যাতন চালানোর দায়ে ইমরানকে আরও সাত বছরের কারাদণ্ড ও দশ লাখ টাকা জরিমানার দণ্ড দেয়া হয়।