'সন্ত্রাসীদের জন্য নির্দোষ রোহিঙ্গা যেন বিপদে না পড়ে'
প্রকাশ : ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ১৯:০৩
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, তার দেশে অবস্থান করা সব রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী কাজের সঙ্গে যুক্ত নয়। তাই সন্ত্রাসীদের জন্য কোনো নির্দোষ রোহিঙ্গা যেন বিপদে না পড়ে, সেদিকে কেন্দ্রীয় সরকারকে নজর দিতে হবে। ১৮ সেপ্টেম্বর (সোমবার) রাতে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে নিজ কার্যালয়ে এসব কথা বলেন মমতা।
ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার ১৮ সেপ্টেম্বর (সোমবার) বলেছিল, রোহিঙ্গারা দেশের নিরাপত্তার জন্য মারাত্মক হুমকি। দেশটির সুপ্রিম কোর্টের কাছে দেওয়া সরকারের লিখিত বক্তব্যে (এফিডেভিট) এ কথা উল্লেখ করা হয়।
এর জবাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার রোহিঙ্গাদের তালিকা তৈরি করে আমাদের পাঠাতে বলেছে। সন্ত্রাসবাদীদের জন্য সাধারণ মানুষকে যেন ভোগান্তি পোহাতে না হয়। রোহিঙ্গাদের কারো সঙ্গে জঙ্গিদের সঙ্গে যোগাযোগ প্রমাণ হলে ব্যবস্থা নিক কেন্দ্র। কিন্তু রোহিঙ্গা প্রসঙ্গে সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলা করার নামে কোনো নির্দোষ সাধারণ মানুষ যেন বিপদে না পড়ে। সেদিকে কেন্দ্রের সতর্ক নজর রাখা উচিত।’
‘রোহিঙ্গাদের বিষয়টি নিয়ে কোর্টে যখন একটা কেইস (মামলা) চলছে, তখন আমি কোর্টের কেইস নিয়ে কিছু বলতে পারি না। বলা ঠিকও নয়। তবে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার আমাদের বলেছে, রোহিঙ্গারা যারা এসেছে, বাচ্চা থেকে বড়, ওদের তালিকা করে পাঠিয়ে দেওয়ার জন্য। আমাদের ইনস্টিটিউশন অব চাইল্ড কমিশন আছে, তারা কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে সহমত নয়।’
পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমি মনে করি, সব সাধারণ মানুষই জঙ্গি নয়। কেউ কেউ জঙ্গি থাকতে পারে। জঙ্গিরা জঙ্গি হিসেবেই চিহ্নিত হবে। জঙ্গিদের সঙ্গে সাধারণ মানুষের একটা পার্থক্য আছে। প্রতিটি সম্প্রদায়ে কেউ ভালো হতে পারে, কেউ খারাপ হতে পারে। আমরা জঙ্গি আন্দোলন নিয়ে আপস করছি না।’
‘যদি কোনো জঙ্গি আন্দোলন হয়, সরকার তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে। কিন্তু সাধারণ মানুষকে যেন ভোগান্তি না পোহাতে হয়। যদি সাধারণ মানুষকে ভোগান্তি পোহাতে হয়, তাহলে মানবতাকে ভোগান্তি পোহাতে হবে। রাষ্ট্রসংঘের নির্দেশ অনুযায়ী, আমরা মানবতাকে বর্জন করতে পারি না।’
গতকাল কলকাতায় বাংলাদেশের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের সঙ্গে বৈঠক হয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। এ সময় মমতা জানান, মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশের শরণার্থীদের মানবিক বিবেচনায় আশ্রয় দিয়েছিল। তেমনি মানবিকতার দিক থেকেই এখন রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বাংলাদেশে আশ্রয় দিয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার।