সন্ত্রাসী হামলার সতর্কতা দিয়েছিল ভারত
প্রকাশ : ০৪ জুলাই ২০১৬, ১২:৪৪
ঢাকায় আইএসের হামলার ঝুঁকির আশঙ্কার কথা আগেই জানিয়েছিল ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা। গত মাসে দুই দেশের মধ্যে গোয়েন্দা তথ্য বিনিময়ের সময় এই সতর্কবার্তা জানানো হয়েছিল।
বাংলাদেশের ঊর্ধ্বতন একজন নিরাপত্তা কর্মকর্তার বরাত দিয়ে এ খবর জানায় সেদেশের প্রভাবশালী সংবাদ মাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস। খবরে বলা হয়, ভারতীয় গোয়েন্দারা বাংলাদেশে আইএসের প্রোপাগান্ডা জোরদারের বিষয়ে সতর্ক করেছিলেন বাংলাদেশকে।
খবরে আরো বলা হয়, শুক্রবারের (০১ জুলাই) হামলা প্রতিরোধ করার মতো সরাসরি কোনো তথ্য ছিল না ভারতীয় গোয়েন্দাদের কাছে। তবে ভারতের মাটিতে বাংলাদেশি উগ্রপন্থিরা প্রশিক্ষণ গ্রহণ করছেন বলে প্রমাণ দিয়েছিলেন তারা।
বাংলাদেশের ওই নিরাপত্তা কর্মকর্তা বলেন, ‘ভারতীয় গোয়েন্দাদের শেয়ার করা নানা তথ্যের মধ্যে এই সতর্কবার্তাও ছিল যে জিহাদিরা বড় ধরনের কোনো কার্যক্রমের পরিকল্পনা করছে। আমাদের কাছে এর অল্প কিছু তথ্যই ছিল। কিন্তু তাদের পরিকল্পনা ধরে ফেলার মতো পর্যাপ্ত তথ্য ছিল না আমাদের হাতে।’
ঢাকা হামলার তদন্তকারী আরেক কর্মকর্তা বলেছেন, তারা এখন হামলাকারী সন্ত্রাসীদের প্রশিক্ষণ ও গোলাবারুদ সরবরাহের উৎস সম্পর্কে জানার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন।
এর আগে এপ্রিলে আইএসের নিজস্ব ম্যাগাজিন দাবিক’এ ভবিষ্যতে বাংলাদেশে হামলার হুমকি দেওয়া হয়েছিল।
২০১৪ সাল থেকে বাংলাদেশের প্রধান সন্ত্রাসী সংগঠন জেএমবি বেশকিছু হত্যাকাণ্ড পরিচালনা করেছে। এর বেশিরভাগই করা হয়েছে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে বা গলা কেটে, যেসব হামলার শিকার হয়েছেন বিদেশি দাতা সংস্থার কর্মী, ধর্মীয় সংখ্যালঘু ও প্রগতিশীল রাজনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা। জেএমবিই বর্তমানে আইএসে রূপান্তরিত হয়েছে। এরা কিছু বোমা হামলাও করেছে, যেসব বোমা পশ্চিমবঙ্গের বুর্দোয়ানের একটি গোপন কারখানায় তৈরি বলে অভিযোগ রয়েছে।
ভারতের ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সির (এনআইএ) গোয়েন্দারা বুর্দোয়ানের ওই কারখানায় একটি বোমা বিস্ফোরণের তদন্তে জানিয়েছিলেন, বোমা তৈরির প্রশিক্ষণের জন্য সেখানে বেশ কয়েকজন নিয়োজিত ছিলেন। ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে পুলিশ দাউখানগরে একটি প্রশিক্ষণ ক্যাম্পের খোঁজ পায়। ওই ক্যাম্পে জেএমবির সদস্যদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হতো। এ বছরের এপ্রিলে আসাম পুলিশ চিরাং জেলা থেকে সাত জনকে গ্রেপ্তার করে। এরা আমগুড়ি গ্রামে জেএমবির একটি প্রশিক্ষণ ক্যাম্প পরিচালনা করতেন অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয় তাদের। স্থানীয় আলেম জয়নাল আবেদিন আশেপাশের গ্রাম থেকে ওই ক্যাম্পে তরুণদের প্রশিক্ষণের জন্য সংগ্রহ করে বেড়াতেন বলে জানায় পুলিশ।
আসামের একজন পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে সকলের নজর এড়িয়েই দীর্ঘদিন ধরে সশস্ত্র প্রশিক্ষণ পরিচালনা করার মতো বড় জায়গা রয়েছে। এই এলাকায় বেশকিছু অপরাধী চক্র থাকায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে। এসব অপরাধীরাই প্রশিক্ষণের জন্য অস্ত্র সরবরাহ করতে সক্ষম।