মেয়ে হয়ে জন্মানোয় শিশুকে জঙ্গলে ফেলে দিলেন মা!
প্রকাশ : ১৮ জুলাই ২০১৭, ১৫:৩১
মেয়ে হয়ে জন্ম নেয়ার ‘অপরাধে’ খোদ জন্মদানকারী মা-ই সদ্যজাত শিশুকন্যাকে জঙ্গলে ফেলে দিয়েছেন। বংশে বাতি দিতে ছেলে চাই। আর এমন ভাবনা থেকেই নাকি এ কাণ্ড করেছেন মা। আর এমন ন্যাক্কারজনক কাজে জন্মদাত্রী মাকে সহায়তা করেছেন তার নিজ মা!
জানা যায়, এ বছর জানুয়ারিতে দ্বিতীয়বার মা হন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দুর্গাপুরের এক নারী। পায়ে টিউমার নিয়ে জন্ম নেয়া শিশুটি জন্মানোর পর থেকেই অসুস্থ; তাই ভূমিষ্ঠ হবার পর থেকেই হাসপাতালেই কাটছিল তার দিন।
এদিকে আবার কন্যা সন্তানের জন্ম হওয়ায় মন খারাপ মায়ের। তার ওপর অসুস্থ ছিল শিশুটি। এমন অবস্থায় গত ১০ জুলাই বাঁকুড়া মেডিকেল কলেজে হাসপাতাল থেকে বন্ড দিয়ে শিশুটিকে ছাড়িয়ে নেন মা। কিন্তু মায়ের কোলে পরম মমতার পরিবর্তে নিজের সন্তানকে সুযোগ বুঝে রাতের অন্ধকারে আমড়াতলা শাল জঙ্গলে ফেলে দেন তিনি। আর এই জঘন্য কাজে সহযোগিতা করে শিশুটির নানি। দুই মা তাদের এমন কান্ড চেপে গিয়ে সবাইকে বলেন মেয়ে মারা গেছে।
তবে, ভিন্ন কিছু অপেক্ষা করছিল শিশুটির কপালে। জঙ্গলে ফেলে আসার দুদিন পর ভোরে তাকে উদ্ধার করেন ক্ষুদ্র জাতিসত্তার কিছু নারী। জঙ্গলের জন্তুজানোয়ারেরা তাকে আঁচড় দিলেও সে বেঁচে ছিল। তাকে আবারও নিয়ে আসা হয় বাঁকুড়া মেডিকেল কলেজে।
চিকিৎসক ও জেলার প্রশাসনের চেষ্টায় খুঁজে বের করা হয় তার বাবা-মাকে। শিশুটির বাবা দুর্গাপুরের বাসিন্দা এবং পেশায় দুধের ব্যবসায়ী।
জিজ্ঞাসাবাদে শিশুটির মা বলেন, ‘ছেলে চেয়েছিলাম। ছেলের মা হলে সংসারে আলাদা খাতির হবে। কিন্তু আবার মেয়ে হয়। তার ওপরে অসুস্থ। সহ্য হচ্ছিল না। তাই ফেলে এসেছিলাম।’ তবে, এখন বুঝতে পারছি, ভুল করেছিলাম। আসলে মাথার ঠিক ছিল না।’
বাঁকুড়া মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ পার্থপ্রতিম প্রধান এবং অর্থোপেডিকস বিভাগীয় প্রধান রণদেব বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, মা মন থেকে শিশুটিকে মেনে নিতে পারছেন না। তাকে দুধও খাওয়াচ্ছেন না। তবে, এখন ঐ মাকে কাউন্সেলিং করা হচ্ছে।
সূত্র: আনন্দবাজার