ঋতুস্রাব হওয়ায় নির্বাসিত, সাপের ছোবলে মৃত্যু
প্রকাশ : ১১ জুলাই ২০১৭, ১৯:৫৮
মানুষের মন এখনও কুসংস্কারের ছোঁয়া পুরোপুরি এড়াতে পারেনি। বিশেষ করে মেয়েদের ঋতুস্রাবের ক্ষেত্রে। ঋতুমতী কন্যাকে আজও অস্পৃশ্য বলেই মনে করা হয় সমাজের বেশিরভাগ ক্ষেত্রে। এই অস্পৃশ্যতার বলি হতে হল নেপালের তুলসী শাহিকে। ঋতুমতী হওয়ার কারণে বাড়ির গোয়ালঘরে ঠাঁই হয়েছিল ১৯ বছরের তরুণীর। সেখানেই বিষাক্ত সাপের কামড়ে মৃত্যু হয় তাঁর।
নেপালের পশ্চিম দাইলাখ এলাকার বাসিন্দা তুলসী। যেখানে আজও প্রচলিত ‘চৌপদি’ নামে এক পুরনো প্রথা। এই প্রথা অনুযায়ী কোনও মেয়ের ঋতুস্রাব হলে তাঁকে ‘অপবিত্র’ মনে করা হয়। ঘরের ভিতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হয় না। কোনও কিছু ছুঁতে দেওয়া হয় না। এমনকী তাঁকে যাতে সবার ছোঁয়া থেকে দূরে রাখা যায়, সে কারণে কোনও পরিত্যক্ত স্থানে নির্বাসিত করা হয়। ২০০৫ সালে এই প্রথাকে বেআইনি বলে ঘোষণা করেছিল নেপাল সরকার। কিন্তু আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়েই পাহাড়ি দেশের বিভিন্ন জায়গায় আজও এই প্রথা প্রচলিত।
এই প্রথারই বলি হতে হল তুলসীকে। স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৯ বছরের যুবতীকে একপ্রকার জোর করেই ঋতুস্রাবের সময় গোয়ালঘরে থাকতে বাধ্য করেছিল তাঁর কাকা। এমনকী, সাপের ছোবলে আহত হওয়ার পরও তাঁকে সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়নি। বাড়িতেই ঘরোয়া পদ্ধতিতে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। পরে যখন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তখন আর তুলসীকে বাঁচানোর কোনও উপায় ছিল না বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। ঘটনার তদন্তে নেমেছে স্থানীয় পুলিশ। অভিযোগ প্রমাণিত হলে জরিমানার পাশাপাশি কারাদণ্ডেরও শাস্তি অভিযুক্তের বরাদ্দ বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।
সূত্র: সংবাদ প্রতিদিন