পিরিয়ড নিয়ে লজ্জা ভাঙুন

প্রকাশ : ১৪ জুন ২০১৬, ১৭:৪১

রোজার মাসে একটা কমন প্রশ্ন, আপনি কি রোজা? মেয়েদেরকে সাধারণত এই ধরণের প্রশ্ন করা হয়। ‘না’ উত্তর শুনে ‘না’ এর কারণটা কল্পনা করে অনেকে সুখ পায়। কী নোংরা আমাদের মানসিকতা! পিরিয়ডের মত স্বাভাবিক একটি বিষয়কে ট্যাবু বানিয়ে রেখেছি। 

আমাদের কলেজে স্টুডেন্টদের জন্য বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবার ব্যবস্থা ছিল। এক বান্ধবীর পিরিয়ড হলে আমরা মেডিকেলে গেলাম প্যাড আনতে। মেডিকেল রুমে ডাক্তারের সামনে বসে ছিল আমাদেরই একজন ছেলে সহপাঠী। তার মাথা ব্যথা জাতীয় কোন সমস্যা। নার্সকে জানালাম প্যাড লাগবে। উনি আমাদেরকে চুপ থাকতে বললেন। ওই ছেলে চলে যাওয়ার পরই নার্স প্যাড দিলেন। ওই ছেলের সামনে প্যাড হাতে নিতে তিনি লজ্জা পাচ্ছিলেন।

প্রতি মাসে মেয়েদের শরীরে একাধিক ডিম্বাণু বড় হতে থাকে এবং মাসের মাঝামাঝি সময়ে একটি পরিণত অবস্থায় স্ফুরিত হয়। ডিম্বাশয় থেকে বের হয়ে আসা ডিম্বাণু শুক্রাণু দ্বারা নিষিক্ত হলে ভ্রূণ তৈরি হয়, আর তা না হলে ডিম্বাণু ধীরে ধীরে অকার্যকর হয়ে মিলিয়ে যায়। আবার নতুন ডিম্বাণু বড় হতে থাকে। ডিম্বাশয় থেকে ডিম্বাণুটি বের হওয়ার সময় কিছুটা তরল পদার্থ বের হয়ে আসে, সেটিই পিরিয়ড। আর এই স্বাভাবিক ব্যাপারটা নিয়ে যারা মুচকি হাসতে পছন্দ করে, আপনি বরং তাদের অজ্ঞতা নিয়ে হাসতে পারেন। রোজা রেখেছেন কিনা জিজ্ঞেস করলে অনেকে বিব্রত হয়ে যান। সবচেয়ে ভালো হয় ধর্মমুক্ত হয়ে এসব ট্যাবুর বিরুদ্ধে যাওয়া, কারণ এসব ট্যাবু ধর্ম ও পুরুষতন্ত্রের সৃষ্টি। যদি তা না পারেন অন্তত স্পষ্ট কন্ঠে জানান, আপনার পিরিয়ড চলছে। পিরিয়ড চলাকালে অনেকে পরিবারের সাথে সেহেরী খেতে উঠে। সারাদিন কিছু খায় না। কারণ পরিবারের বাবা-ভাইয়েরা যদি বুঝতে পারে যে, সে আসলে রোজা রাখে নি, তার পিরিয়ড চলছে। তবে এটা খুব লজ্জার ব্যাপার হবে। লজ্জা ভাঙুন। পিরিয়ড নিয়ে লুকোচুরি খেলা বন্ধ করুন।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত