আমাদের প্রতিবাদের ভাষার পরিবর্তন ঘটুক
প্রকাশ : ০৫ নভেম্বর ২০১৬, ২৩:০৮
একজন বুদ্ধি প্রতিবন্ধী মানুষ মালাউনের বাচ্চা নামে একটি শব্দ উচ্চারণ করলো আর আমরা সকলে আমি মালাউন নামে ফেসবুকে পোষ্ট দিতে শুরু করলাম। এই মালাউন নাম নিয়ে যে অস্থিরতার মধ্যে আমরা পড়লাম এতে করে কি এই সাম্প্রদায়িক হামলার ধারাবাহিক ঘটনার বিরুদ্ধে আমাদের প্রতিবাদের তীব্রতা কমতে শুরু করলো নাকি বাড়লো? নাকি এই ঘটনাগুলো পেছনে পড়ে পশুমন্ত্রীরা আমাদের মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসলো? তাহলে রাজনীতি জিতে গেলো না?
যারা ক্ষোভে দুঃখে যন্ত্রনা আর পরাজয়ের গ্লানিতে নিজেদের মালাউন বলছেন তাদের আবেগকে খাটো করছি না। কিন্তু আর একটু যুক্তিবাদী হতে ক্ষতি কি? মালাউন শব্দের মানে খুঁজে পাওয়া গেছে। অভিশপ্ত। যারা জঙ্গীবাদ সাম্প্রদায়িকতার মত বিষ গিলে বসে আছেন তারা কি বুদ্ধি প্রতিবন্ধী নয়? অভিশপ্ত নয়? তাহলে যারা মন্দির ভাঙে, প্রতিমা ভাঙে, অন্য ধর্মের মানুষের জান মাল নিজের সম্পত্তি ভাবে তাদের থেকে বড় মালাউন কে আছে?
আমাদের প্রতিবাদের ভাষার তবে পরিবর্তন ঘটুক। আমরা বলি আজ মন্দির ভেঙেছে এতগুলো মালাউন, আজ জঙ্গীবাদে জড়িত থাকার কারনে এতগুলো মালাউন ধরা পড়েছে, আমাদের অমুক মন্ত্রী তমুক সাংসদ মালাউন। জাতীয় গণমাধ্যম তো আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারবো না, তাদের ভাষাও আমরা ঠিক করে দিতে পারবো না। বর্তমানে যখন ফেসবুক যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম তাই ফেসবুকে আমি এখন থেকে এই ভাষাতেই তাদের সম্বোধন করতে চাই। কারন ঘটনার তীব্রতা আমাদের যতই বিমুঢ় করে দিক প্রতিবাদ বন্ধ করে অভিমানে মুখ ফিরিয়ে রাখার সুযোগ নেই।
যে সব মালাউনরা সাম্প্রদায়িক হামলাকে রাজনীতির হাতিয়ার করে, তাদেরকে এটা মাথায় রাখতে হবে চাইলেই নানা ধরনের নাটকের জন্ম দিয়ে মানুষকে মূল সচেতনতার জায়গা থেকে সরিয়ে দেওয়া যায় না। এরা তবু বাঙালী আদিবাসী কিংবা যে কোন সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে সব হামলার প্রতিবাদে রাস্তায় নামবে। সুন্দরবন রক্ষার আন্দোলনের কথাও ভুলবে না।
মৌমিতা জান্নাত এর ফেসবুক থেকে