রামপাল নিয়ে জেদাজেদির শেষ কোথায়?

প্রকাশ : ০৩ আগস্ট ২০১৬, ১৭:০১

বাংলাদেশে প্রস্তাবিত রামপাল নিয়ে শুরু থেকেই একদল মানুষ সোচ্চার ছিল। তাঁদের যুক্তি ছিল, এটা আমাদের অন্যতম জাতীয় সম্পদ “সুন্দরবনের প্রাকৃতিক পরিবেশ” এর  জন্যে হুমকি স্বরূপ। এরপর থেকে বিচ্ছিন্ন ভাবে দেখে আসছি পরিবেশবাদী কিছু মানুষের কার্যক্রম।

সম্প্রতি বিষয়টি চূড়ান্ত পর্যায়ে যাচ্ছে বলেই গণমাধ্যম জানাচ্ছে। এই মুহূর্তে বিশেষ করে ফেসবুকে বাংলাদেশের প্রস্তাবিত রামপাল প্রজেক্ট নিয়ে বিতর্ক দেখছি, পড়ছি এবং দিন শেষে নিজের মত করে কষ্ট পাচ্ছি। এই ইস্যুতেও বর্তমান সরকারকে খুব বেশী আত্মবিশ্বাসী মনে হচ্ছে। আমরা যারা দলান্ধ নই বলাই বাহুল্য বর্তমান সরকার কে অনেক ইস্যুতে (অনেক সময় নিতান্তই বাধ্য হয়ে) নীরব সমর্থন দিয়েই যাচ্ছি।

স্বাধীনতা বিরোধী চক্র, জঙ্গিবাদ, দুর্নীতি এই সব নিয়ে হাসিনা সরকার কিছু করতে চাইলে বিরোধিতা করছিনা, প্রশ্নই উঠেনা। দেশে কোন যোগ্য বিরোধী দল বা নেতা নেই সেই সত্য নিম তিতা-নিশিন্দা তিতা’র মত গিলতে বাধ্য হচ্ছি এবং মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষে থাকা অসাম্প্রদায়িক চেতনায় উদ্বুদ্ধ দারুণ চৌকশ, জনসমর্থন পুষ্ট একটা রাজনৈতিক দলের বড্ড অভাব বোধ করছি বাংলাদেশে… যারা আওয়ামীলীগ কে রাজনৈতিক ভাবে মোকাবেলা করার মত রাজনৈতিক প্রজ্ঞা এবং সাহস রাখে।

আওয়ামীলীগ এর প্রতি সবটুকু শ্রদ্ধা রেখেই বলছি, তাঁরা জনগণকে যা ইচ্ছে তাই কেন গেলাবেন, কতদিনই বা গেলাবেন, একমাত্র রাজনৈতিক দলই যদি থাকতে চান তাহলেও তো কিছু জনগণের মনের ভাষা বুঝার চেষ্টা করবেন। পরবাস জীবন যাপন করছি তাই এখন ‘বাংলাদেশ নিয়ে চাওয়াটাও অন্য রকম ভাবে বদলে গেছে’!

যেভাবেই হোক ভালো থাকুক প্রিয় স্বদেশ, বিশ্ব মানচিত্রে বাংলাদেশের নাম হোক ‘গৌরব’ এই চাওয়া নিয়েই নিজের মত করে আছি আমার জন্মভুমির সাথে প্রতিটা মুহূর্ত। কিন্তু এই প্রথম মনে হচ্ছে, সরকার কে তাঁর আত্মবিশ্বাস কোথায় নিয়ে দাড় করায় এটা দেখার দিন বোধ হয় আর বেশী দূরে নেই।

ঝকঝকে-তকতকে-সুন্দর চিন্তার এক তারন্য এখনও হাল ছেড়ে দেয়নি, এই জাগ্রত জনগোষ্ঠীই একদিন কোটি মানুষকে নূতন স্বপ্ন দেখাবে, বাংলাদেশ ৫২, ৬৯, ৭১ ও ৯০  জন্ম দিয়েছে, সেই চেতনায় মানুষ জাগবেই, সরকার যদি এখন বুঝতে পারে আজকের জনগন কে কোনঠাসা করা ব্যাপার না, অবশ্যই ব্যাপার না, তবে ইতিহাসে আপনাদের কথা স্বর্ণাক্ষরে লেখাতে চান না কয়লা দিয়ে সেটাই দেখার বিষয়!

সরকার সমর্থক অনেক ব্যাক্তি এবং প্রতিষ্ঠান থেকে বলা হচ্ছে, সরকার এই বিষয়টিতে যথেষ্টই আন্তরিক, হোম ওয়ার্ক যা করার ইতিমধ্যেই তা সম্পন্ন করেছেন। সুন্দরবন পরিবেশ রক্ষা করেই এই প্রকল্প করা হচ্ছে, সরকার যদি সবটুক আত্মবিশ্বাসী হয়েই থাকে তাহলে এই বিষয়ে বিতর্ক অবসানে কেন জাতীয় সংলাপ বা সবকটি জাতীয় গণ মাধ্যমে আমরা যারা এটার বিরোধিতা করছে তা ভুল প্রমাণ করতে উদ্যোগ নিচ্ছেন না।

এই সরকার ক্ষমতায় আসার আগে থেকেই যারা বলে আসছিল “দেশ ভারতের কাছে বিক্রি হয়ে যাবে” সেই প্রোপাগান্ডা বিশ্বাস করার লোক যেমন  বাংলাদেশে আছে তার বাইরেও কিন্তু নিখাদ বাংলাদেশ প্রেমী আছেন, সরকার সেই জনগোষ্ঠী কে কেন একদমই আমলে নিচ্ছেন না। কেউ তো বলছে না “কালকেই সুন্দরবন শেষ হয়ে যাবে” যা বলা হচ্ছে  তা হচ্ছে এটা একটা দীর্ঘ মেয়াদি ধ্বংস কার্যক্রম এর সূচনা মাত্র।

অনেক অনেক কিছুর এখন পর্যন্ত আওয়ামীলীগ এবং কিছু সময় বাংলাদেশের সব ভরসার জায়গা হয়ে উঠছেন সেই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই, আচ্ছা উনি কি এই বিষয়ের সকল খুঁটিনাটি বিষয়ে অবহিত আছেন আদৌ, এটা কি জানা সম্ভব কোন ভাবে।

আমি এই বিষয়টিতে বিশেষজ্ঞ নই , তাই শেষমেশ যে বিশেষজ্ঞ মতটি উঠে আসবে বা প্রতিষ্ঠিত হবে সেটিই মেনে নেব। চাওয়া তো একটাই বাংলাদেশের ভালো হোক।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত