আজ আমার কোন আফসোস নেই
প্রকাশ : ২৫ জানুয়ারি ২০১৮, ২২:১৩
আমার সারা জীবন ধরে একটা দুঃখবোধ ছিলো প্রাচ্যের অক্সফোর্ড নামে খ্যাত আমাদের স্বপ্নের উৎস ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে না পারা। কারণ ঢাকায় থাকা বা খোঁজ খবর রাখার মতো স্বজন এই শহরে না থাকা। আজ কালের পরিক্রমায় ঢাকাতে অনেক আপনজন চাকুরী সূত্রে অবস্থান করছেন। আমাকেও প্রায়ই প্রয়োজনে বা অপ্রয়োজনেও বেড়াতে এলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় মনে মনে আফসোস হতো।
কিন্তু আজ মনে হচ্ছে যা হয়েছে ভালোই হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার কাউকে পড়াতে হয়নি সেটাই এখন মন্দের ভালো। কেননা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এখন ছাত্র-ছাত্রী-লীগ উৎপাদন করে। এখানে শুধু ছাত্ররাই নয় ছাত্রীরাও মেয়েদের ওড়না কেড়ে নেয়। শরীরে খামছে দিয়ে নিজেদের কর্তৃত্ব জাহির করে। এদেশের সাধারণ মানুষের ট্যাক্সের টাকায় পরিচালিত প্রতিষ্ঠানে এখন নারীখাদকের পদচারণায় মাটি কম্পিত হয়।
যে শিক্ষকের নাম শুনলেই শ্রদ্ধায় মাথা নুইয়ে আসে, আজ সেই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকবৃন্দ নিজেদের কর্তৃত্ব টিকিয়ে রাখতে ছাত্রের পিছনে ছাত্র লেলিয়ে দিচ্ছেন। আজ আমার আর কোন আফসোস নেই, এমন প্রতিষ্ঠানে আমার কেউ আজ পড়ে না। ভবিষ্যতে আর পাঠাবো এই বাসনাও রাখি না। ঢাকা ভার্সিটিতে এখন পড়াশোনা করেন এবং ছাত্রলীগের সাথে সম্পর্ক রাখেন এমন কেউ যদি আমার বন্ধুদের মাঝে থাকেন, আপনাদের সাহচর্য আমাকে কাটার ন্যায় বিঁধবে।
আমি সেই মেয়েদের সাথে নিজের অবস্থান মিলিয়ে অত্যন্ত লজ্জা বোধ করছি। যে সন্তানেরা তার সহপাঠি মেয়েটির পরিধেয় পোশাক কেড়ে নিয়ে, ছিড়ে দিয়ে, শরীরে পদাঘাত করে উল্লাসিত হয়। সেই সকল সন্তানের মায়েরা লজ্জা বোধ করছেন কি? এমন নির্লজ্জদের প্রতি ঘৃণা প্রকাশের কোন ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না। এদের জন্য একটাই উচ্চারণ ছিঃ!
স্বপ্না দে'র ফেসবুক থেকে