অভিনন্দন তাসকিন!
প্রকাশ : ০১ নভেম্বর ২০১৭, ১৫:২৬
ক্রিকেটার তাসকিন বিয়ে করেছেন, নতুন জীবন শুরু করেছেন। উচিত ছিল তাঁকে অভিনন্দন জানানো, ভালবাসা আর শুভকামনা জানানো। সেটা বাদ দিয়ে অসংখ্য মেয়ে পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত ছবির নিচে দেখলাম কমেন্ট করেছে- তাসকিনের বউ কালো, তাসকিনের বউ সুন্দর না...ইত্যাদি। কেন রে বাবা, অন্যের সৌন্দর্যের স্কেল ঠিক করার তুমি কে? তোমার সুন্দর লাগছেনা ভালো, কিন্তু নবদম্পতির বিয়ের ছবির নিচে তির্যক মন্তব্য করাটাই বা কতটুকু সুন্দর?
নারীদের জন্য এদেশে মেধার প্রতিযোগিতা হয়না, হয় সুন্দরী প্রতিযোগিতা। আমি নিজে লাক্স চ্যানেল আই সুপার স্টারের দুই-তিনটা এপিসোড দেখেছি। দেখেছি ইউটিউবের প্রতিষ্ঠাতাদের মাঝে বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত কে, কোন মেয়ে প্রথম মহাশুন্যে পা রেখেছিল সেই প্রশ্নের উত্তর পারেনা, অথচ তাতে তারা কেউ প্রতিযোগিতা থেকে বাদ পড়েনা! বাদ পড়ে আরেকটু কেন সাদা লাগলো না, আরেকটু কেন ফিগারটা শার্প হলোনা। মেয়েদের মাথাতেই ঢুকে গেছে সুন্দর কেবল সাদাই হতে পারে! সুন্দর কেবল লিকলিকে জিরো ফিগারই হতে পারে!
ছেলেরা যখন মেয়েদের সুন্দর না হওয়ার জন্য রঙের কথা বলে তখন আমার হস্যকর লাগে, কোনো মেয়ে যখন কালো রঙ অসুন্দর বলে তখন আরও বেশি হাস্যকর লাগে। কারণ অভিজাত কোনো কিছু বেছে নিতে বললে চট করে কালো বেল্টের ঘড়ি, কালো জুতো, কালো স্যুট, কালো গাড়ি...এগুলির কথাই প্রথমে মাথায় আসে! তাহলে কে শেখালো কালো মানেই অসুন্দর? কালো মানেই অশুভ? কালো মানেই কুৎসিত?
মেয়ে ও ছেলে, চিন্তাভাবনা বদলাও। দৃষ্টি নয়, দৃষ্টিভঙ্গির ওপর নির্ভর করে কোনটা সুন্দর। রাত কালো না হলে কি ফকফকে সাদা জোছনা সুন্দর লাগতো? আমার তো বেশ সুন্দর লেগেছে প্রিয় ক্রিকেটারের বউটিকে। আর তাসকিনের ক্ষেত্রে ভালো লেগেছে- সে কালো সাদার কমপ্লেক্সে ভুগছে না দেখে! অভিনন্দন তাসকিন!
হয়তো এই বিয়েটির কারণেই এই ফেয়ার এন্ড লাভলির যুগে ‘কৃষ্ণকলি আমি তারেই বলি’ গাইতে শিখবে কোনো যুবক। কোনো যুবতী মিথ্যে সাদা হওয়ার ইচ্ছে থেকে দূরে গিয়ে অপেক্ষায় থাকবে সেই যুবকটির জন্য, যে বুঝবে- সৌন্দর্য ও দূরত্ব কালো-সাদায় হয়না। সৌন্দর্য হয় ভালো লাগায়, দূরত্ব হয় কেবল ভালবাসা থাকা না থাকায়!