সঙ্গমের সময় নারীদের ব্যথা লাগার ৮টি কারন
প্রকাশ : ০৪ জুলাই ২০১৭, ২২:১৩
প্রথমবার মিলনের সময় নারীদের ব্যথা লাগার পিছনে স্বাভাবিক শারীরিক কারণ রয়েছে। কিন্তু অনেকক্ষেত্রে দেখা যায়, বিবাহ পরবর্তী জীবনে বেশ কয়েকবার মিলনের পরেও সঙ্গমের সময় নারীদের ব্যথা লাগে। নিউ ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এমডি রাকুয়েল ডার্ডিক জানাচ্ছেন, এমনটা হলে কিন্তু বেশ চিন্তার বিষয়। কিন্তু কেন একাধিকবার মিলনের পরও অন্তরঙ্গ মুহূর্তে ব্যথা পান নারীরা, পড়ুন ৮টি কারণ।
১. অনেক সময় সেক্স পজিশনের জন্য নারীদের ব্যথা লাগে, এমনটাই মত বিশেষজ্ঞদের। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে পুরুষরা আনাড়িদের মতো নারীর নরম, স্পর্শকাতর অংশে আঘাত করে বসেন, তখন ব্যথা লাগাটাই স্বাভাবিক! তবে কোনও একটি নির্দিষ্ট সেক্স পজিশনে ব্যথা লাগলে, অন্য পজিশন ট্রাই করুন। নারীদের গোপনাঙ্গ স্পর্শ করার সময় পুরুষদের অতিরিক্ত সতর্ক থাকার পরমার্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
২. ‘সেক্সুয়াল পেন’-এর অন্যতম প্রধান কারণ লুব্রিকেশনের অভাব। এমনিতে যৌন মিলনের ইচ্ছে জাগলে নারীদের গোপনাঙ্গ লুব্রিকেট বা পিচ্ছিল হয়ে ওঠে। কিন্তু ধরা যাক কোনও নারী মিলনের সময় অন্য কিছু ভাবছেন, সেক্ষেত্রে তাঁর বিশেষ অঙ্গে পিচ্ছিলতার অভাব দেখা দিতেই পারে। ডাক্তাররা বলছেন, ঘনিষ্ঠ মুহূর্তে সকালে উঠে কত বাসন মাজতে হবে বা কাজের মাসি কাল আসবে কি না, এই সব হাবিজাবি কথা ভাববেন না একদম! আর যদি এমনটাই করেন, তাহলে মিলনের সময় ওয়াটার বেসড লুব্রিকেন্ট ব্যবহার করুন।
৩. তবে ‘ভ্যাজাইনাল ড্রাইনেস’ বা যোনিতে শুষ্কভাব কিন্তু একটি জটিল অসুখ। নর্থওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক এমডি লরি স্ট্রেচার বলছেন, খুব কম সংখ্যক হলেও কিছু নারী এমন অস্বাভাবিকত্ব নিয়ে জন্মান।
৪. ইস্ট ইনফেকশন থেকেও মিলনের সময় ব্যথা অনুভব করতে পারেন নারীরা। সুগন্ধীযুক্ত সাবান, অ্যালকোহল যুক্ত ডিও থেকে এই জাতীয় সংক্রমণ হতে পারে। প্রথমে যোনির বাইরের অংশে চুলকানি, পরে ব্যথা ও জ্বালা করে। এমনটা টের পেলে অবিলম্বে ডাক্তারের কাছে যেতে বলছেন বিশেষজ্ঞরা। নিজে থেকে কখনই কোনও ওষুধ খাবেন না যেন।
৫. অনেক নারী মিলনের সময় যোনিতে শুধু যে জ্বালা ও ব্যথা অনুভব করেন তাই নয়, অনেকের নাকি জ্বর এসে যাওয়ার মতো পরিস্থিতিও তৈরি হয়। মিলনের সময় তাঁরা তলপেটে ব্যথা অনুভব করেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ধরনের নারীরা সেক্সুয়ালি খুব একটা অ্যাক্টিভ নন। তাঁদের মনে যৌনাকাঙ্খা কম। এক্ষেত্রে প্রয়োজনে মনোবিদের পরামর্শ নেওয়া যেতে পারে।
৬. অনেক সময় নারীদের যোনিতে শারীরিক কিছু সমস্যা দেখা যায়। Vaginismus-এর মতো রোগে যে পেশীগুলি সঙ্গমের সময় নমনীয় হওয়ার দরকার, সেগুলি স্বাভাবিক আচরণ করে না। ছোটবেলায় যাঁরা কোনও বড় শারীরিক বা মানসিক আঘাত পেয়েছেন, তাঁদের মধ্যে এই রোগের আধিক্য দেখা যায়। এমনটা হলে অবশ্যই এক স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞকে দেখাতে হবে।
৭. পিরিয়ডসের সময় যাঁদের অস্বাভাবিক ব্যথা হয়, সেই সব নারী Endometriosis নামে এক ধরনের অস্বাভাবিকত্বে ভুগতে পারেন। সঙ্গমের সময় তাঁদের যোনির পেশিতে ‘ক্রনিক পেন’ হয়। একটানা ব্যথা হতে থাকলে Pelvic inflammatory-ও হতে পারে। এক্ষেত্রে নারীদের গোপনাঙ্গে অস্বাভাবিক জ্বালা করে।
৮. ওভারিতে সিস্ট হলেও সঙ্গমের সময় ব্যথা লাগতে পারে, বলছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে সিস্ট থাকলেও নারীরা অনেক সময় বুঝতে পারেন না। আগেভাগেই সতর্ক হতে আল্ট্রাসাউন্ড পরীক্ষা করাতে হবে। অন্তরঙ্গ মুহূর্তে UTI-তে আঘাত লাগলেও নারীরা অত্যাধিক ব্যথা অনুভব করতে পারেন। যাঁদের ব্লাডারে কোনও ইনফেকশন রয়েছে, তাঁরা যেন মিলনের সময় অতিরিক্ত সতর্ক থাকেন।
তবে স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞরা একটা কথা বারবারই বলছেন, যে খুব সহজ কয়েকটি স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সতর্কতা মেনে চললে অনেক রোগ-ব্যাধিই দূরে সরিয়ে রাখা যায়। মিলনের পর পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন শৌচাগারে মূত্রত্যাগ করতে হবে। সাফসুতরো রাখতে হবে যোনিকে। পরিষ্কার অন্তর্বাস পরতে হবে। আর কোনও সমস্যা হলে সঙ্গীর কাছে সেটা লুকিয়ে রাখা চলবে না। মুখ ফুটে সমস্যার কথা বলতে হবে। প্রয়োজনে নিতে হবে মেডিকেল পরমার্শ।
সূত্র: সংবাদ প্রতিদিন