বাঁশখালী হানাদারমুক্ত হয় এদিনে
প্রকাশ : ১২ ডিসেম্বর ২০১৬, ২০:৫৫
বাঁশখালী হানাদারমুক্ত দিবস ১২ ডিসেম্বর। চূড়ান্ত বিজয়ের মাত্র চারদিন আগে ১৯৭১ সালের এদিনে বাঁশখালীতে হানাদারদের রুঁখে দিয়ে প্রথমবারের মতো স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করে মুক্তিকামী জনতা। এর মধ্যে দিয়ে বিজয়ের স্বাদ পায় বাঁশখালীবাসী।
মুক্তিযোদ্ধারা জানান, বাঁশখালীতে চারটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা করা হয়। এই চারটি গ্রুপের হয়ে নেতৃত্ব দেন মুক্তিযোদ্ধা মৌলভি ছৈয়দ ও সাবেক সাংসদ সুলতান উল কবির চৌধুরী, শফিকুর রহমান, ডা. আবু ইউসুফ চৌধুরী ও ছমিউদ্দিন। এর মধ্যে শফিকুর রহমানের গ্রুপে ৩৫ জন, মৌলভী ছৈয়দ ও সুলতান উল কবির চৌধুরী গ্রুপে ৬৫ জন, ডা. আবু ইউসুফ চৌধুরী গ্রুপে ১২ জন এবং ছমিউদ্দিনের গ্রুপে ৩০জন মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন।
সেইদিনের বর্ণনা দিতে গিয়ে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, চট্টগ্রাম জেলার সহ কমান্ডার (অর্থ) মুহাম্মদ আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘যতই দেশের বিজয় ঘনিয়ে আসছিল ততই উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় রাজকাররা তাবু গুটিয়ে একজায়গায় একত্রিত হচ্ছিল। শেষ পর্যন্ত তারা গুণাগরির ওয়াপদা বিল্ডিংয়ে ঘাঁটি গাড়ে। এই ঘাঁটিতে ২৫০ থেকে ৩০০জন রাজাকার ছিল।
তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের চারটি গ্রুপ একত্রিত হয়ে ১৯৭১ এর ১০ ডিসেম্বর রাজাকারদের ঘাঁটি ওয়াপদা বিল্ডিং এ অ্যাকশন শুরু করে। গোলাগুলির মধ্যে বেশ কিছু রাজাকার অস্ত্রশস্ত্র ফেলে পালিয়ে যায়। তাদের সঙ্গে যুদ্ধ চলে টানা দুইদিন। অবশেষে ১২ডিসেম্বর সকালে ৭৫ জন রাজাকার আত্মসমর্পণ করে। এরপর ওয়াপদা বিল্ডিংয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করা হয়। পরে মুক্তিযোদ্ধারাসহ মুক্তিকামী জনতা একত্রিত হয়ে মিছিল সহকারে বর্তমানে বাঁশখালী থানা এলাকায় পতাকা উত্তোলন করেন। এর মধ্যে দিয়েই মূলত হানাদারমুক্ত হয় এই উপজেলা।
মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে আটক হওয়া রাজকারদের বিচারে গণআদালতের ডাক দিয়ে ১৩ তারিখ মাইকিং করা হয়। এরপর ১৪ ডিসেম্বর বাণীগ্রাম হাইস্কুল মাঠে রাজকারদের বিচারে আতাউর রহমান খান কায়সারের নেতৃত্বে গণআদালত বসে। জনতার স্বাক্ষ্য প্রমাণে ২০জনের বিরুদ্ধে অপরাধ না পাওয়ায় তাদের খালাস দেওয়া হয়। বাকি রাজাকারদের শাস্তি দেওয়া হয়।