কক্সবাজার মুক্ত দিবস ১২ ডিসেম্বর
প্রকাশ : ১২ ডিসেম্বর ২০১৬, ১৪:২৬
আজ ১২ ডিসেম্বর কক্সবাজার মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাক হানাদার মুক্ত হয় কক্সবাজার। ১৯৭১ সালের এই দিনে কক্সবাজার শহরের পাবলিক হল মাঠে (শহীদ দৌলত ময়দান) একদল মুক্তিযোদ্ধা আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে কক্সবাজারকে শত্রুমুক্ত ঘোষণা করেন।
কক্সবাজার মুক্ত দিবস উপলক্ষে জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও জেলা প্রশাসন শোভাযাত্রা, বধ্যভূমিতে পুষ্পস্তবক ও আলোচনার সভার আয়োজন করেছে।
মুক্তিযুদ্ধকালীন কক্সবাজারে জয় বাংলা বাহিনীর তৎকালীন অধিনায়ক কামাল হোসেন চৌধুরী জানান, ১৯৭১ সালের ৯ ডিসেম্বর তার নেতৃত্বে একদল মুক্তিযোদ্ধা বার্মার (মিয়ানমার) শরণার্থী ক্যাম্প থেকে নাফ নদী পার হয়ে বাংলাদেশে ফিরেন। ১০ ডিসেম্বর তারা উখিয়ায় অবস্থান নেন। সেখান থেকে ১২ ডিসেম্বর সকালে সশস্ত্র অবস্থায় চারটি জিপ গাড়িতে করে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিতে দিতে তারা কক্সবাজার শহরে পৌঁছান। সকাল ১০টায় শহরের ঐতিহাসিক পাবলিক হল মাঠে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে কক্সবাজারকে শক্রমুক্ত ঘোষণা করেন মুক্তিযোদ্ধারা।
মুক্তিযোদ্ধা সংসদ জেলা ইউনিট কমান্ডার রমজান আলী বাহাদুর জানান, ৪ ডিসেম্বর মিত্র বাহিনীর ভারতীয় বিমান সেনারা কক্সবাজার বিমানবন্দরে পাকিস্তানের হানাদার বাহিনীর ক্যাম্পে বোমা হামলা চালায়। এতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বেশ কয়েকজন হতাহত হয়। ৫ ডিসেম্বর আবারও হামলার আশঙ্কায় হানাদার বাহিনী কক্সবাজার ত্যাগ করে। ওই দিন থেকেই কার্যত কক্সবাজার শত্রুমুক্ত হয়।
মুক্তিযুদ্ধে কক্সবাজারে শহীদদের পূর্ণাঙ্গ কোনো তালিকা না থাকলেও পাকবাহিনী ও তাদের এদেশীয় দোসরদের হাতে তৎকালীন ছাত্রনেতা শহীদ সুভাষ, ফরহাদ, ইলিয়াছ মাস্টার, জ্ঞানেন্দ্র লাল চৌধুরী, সতীশ মহাজন দে, সিপাহী জোনাব আলী, শিক্ষক বশির আহমদ, শশাঙ্ক বড়ুয়া ও ভট্টা মহাজনসহ আরও অনেকে শহীদ হন।
কক্সবাজারে পাকবাহিনী ও তাদের এ দেশীয় দোসরদের নৃশংসতার সাক্ষী ৫টি গণকবর। এগুলো হচ্ছে-কক্সবাজার শহরের পুরাতন রেস্টহাউজ সংলগ্ন বালুচরের বধ্যভূমি, টেকনাফ উপজেলার নাইট্যং পাহাড়ের পাদদেশের বধ্যভূমি ও মহেশখালীর আদিনাথ মন্দির পাহাড়ের পাদদেশের ৩টি বধ্যভূমি।
এছাড়াও কক্সবাজার শহরের মধ্যম নুনিয়ারছড়া, কুতুবদিয়া পাড়ার ফদনার ডেইল ও উত্তর নুনিয়ারছড়ার গোলার ছড়া এলাকায় বেশ কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যা করা হয়। এর মধ্যে মধ্যম নুনিয়ারছড়ায় ৭ জন মুক্তিকামী জনতাকে হত্যা করা হয়।