আমের যত গুণ
প্রকাশ : ০৯ জুন ২০২০, ২৩:৪৬
চলছে আমের মৌসুম। বাজারে কাঁচা-পাকা আমে ভরে গেছে। ফলের রাজা আম শুধু সুস্বাদু ও রসালো নয়, পুষ্টিগুণেও অতুলনীয়। পাকা আমে প্রচুর ভিটামিন এ, বি, সি, থায়ামিন, রিবোফ্লাভিন প্রভৃতি নানা উপাদান রয়েছে। সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত আম খেলে শরীরে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমতে শুরু করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা কমে যায়। শুধু তাই নয়, মরণব্যাধি ক্যান্সারসহ একাধিক রোগ থেকে থেকে দূরে থাকতেও সাহায্য করে আম।
ক্যান্সার প্রতিরোধ করে
গবেষণায় দেখা গেছে, আমে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান বিশেষ করে কুয়ারসেটিন, আইসোকুয়ারসিট্রিন, অ্যাস্টাগ্যালিন, ফিসটিন, গ্যালিক অ্যাসিড এবং মিথাইলগ্যালাটসহ আরও অনেক এনজাইম রয়েছে। এই উপাদানগুলো আমাদের কোলন, ব্রেস্ট, লিউকেমিয়া এবং প্রোটেস্ট ক্যান্সারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে সাহায্য করে।
কোলেস্টেরল কমায়
আমে উচ্চমাত্রার তন্তু, পেকটিন এবং ভিটামিন সি রয়েছে যা খারাপ কোলেস্টেরল কমিয়ে আনতে ভূমিকা রাখে।
ত্বকের যত্নে
ভেতর থেকে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে সাহায্য করে আম। নিয়মিত আম খেলে ত্বকের ভেতরে পুষ্টির ঘাটতি পূরণ হয়। সেই সঙ্গে ত্বকের বন্ধ হওয়া ছিদ্রগুলো খুলতে শুরু করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ে।
চোখের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়
প্রতিদিন এক কাপ পরিমাণ আমের টুকরো খেলে তা দৈনিক প্রয়োজনীয় ভিটামিন এ এর শতকরা ২৫ ভাগ পূরণ করে থাকে। এর ফলে দৃষ্টিশক্তির উন্নতি ঘটে। একইসঙ্গে রাতকানা রোগ সহজেই প্রতিরোধ করা যায়।
শরীরে অ্যাসিডের ভারসাম্য বজায় রাখে
আমের মধ্যে থাকা টার্টেরিক, ম্যালিক এবং সাইট্রিক অ্যাসিড শরীরের ভেতরে 'অ্যালকালাইন ব্যালেন্স' ঠিক রাখতে ভূমিকা রাখে। আর শরীরকে সুস্থ রাখতে অ্যাসিডের ভারসাম্য ঠিক রাখাটা অনেক জরুরি।
ডায়াবেটিসের মতো রোগকে দূরে রাখে
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, টানা ১২ সপ্তাহ এক পিস করে আম খাওয়া শুরু করলে রক্তে শর্করার মাত্রা কমতে শুরু করে। ফলে ডায়াবেটিসের মতো রোগ ধারে কাছেও ঘেঁষতে পারে না। আমে উপস্থিত ফাইবার এবং অন্যান্য অ্যান্টি-ডায়াবেটিক বৈশিষ্ট্য এক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
হজম ক্ষমতা বাড়ায়
আমে এমন এক ধরনের এনজাইম উপস্থিত রয়েছে, যা ঠিকভাবে খাবার হজম করতে সাহায্য করে। চিকিৎসকদের মতে, আমের মধ্যে থাকা ফাইবাবের কারণে হজম ক্ষমতা বাড়ে।
গর্ভবতী নারীদের জন্য উপকারী
বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, গর্ভকালীন সময় প্রতিদিন একটা করে আম খাওয়া শুরু করলে মায়ের শরীরে আয়রন, ভিটামিন এ, সি এবং বি৬-এর মাত্রা বাড়তে শুরু করে। এই উপাদানগুলো শুধু মায়ের শরীরের উন্নতি ঘটায় না, সেই সঙ্গে বাচ্চার শরীরের ক্ষমতাও বাড়ায়। ফলে প্রসবকালীন কোনো সমস্যা হওয়ার আশঙ্কাও কমে যায়।
স্বাস্থ্য উপকারিতা সত্ত্বেও খুব বেশি আম না খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। তারা জানিয়েছেন, পাকা আম খাওয়া ভালো তবে খুব বেশি খাওয়া ঠিক নয়। পাকা আমে চিনির পরিমাণ বেশি থাকায় এটি রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। ফলে যাদের ডায়াবেটিস আছে বা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে তাদের জন্য আম খাওয়া শরীরের জন্য ক্ষতিকর। তাই এসব মানুষদের বেশি পরিমাণে আম খাওয়া খেতে বিরত থাকার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা।