রঙ ফর্সাকারী ক্রিমে হতে পারে ক্যান্সার!
প্রকাশ : ২২ জুন ২০১৭, ২১:২৪
‘ইস! গায়ের রঙটা যদি আর একটু ফর্সা হতো’- এমন সুপ্ত বাসনা কম-বেশি সবারই আছে। এ কারণে গত কয়েক দশকে বিশ্বজুড়ে ফর্সাকারী ক্রিমের চাহিদাও বেড়ে গেছে। আর বাজারেও দেদার বিক্রি হচ্ছে নানা ধরনের ফেস হোয়াইটনিং ক্রিম। কিন্তু আপনি জানেন কী, এগুলো ত্বকের জন্য ঠিক কতটা ভালো? একাধিক কেস স্টাডি করে দেখা গেছে, বাজারের বেশিরভাগ ফর্সা হাওয়ার ক্রিমেই এমন সব উপাদান ব্যবহার করা হচ্ছে, যা ত্বক ভালো করার চেয়ে ক্ষতিই করে বেশি। মাত্রাতিরিক্ত এসব ক্রিম ব্যবহার ত্বকের নানা সমস্যার জন্য দায়ী।
তাই ত্বকের সুরক্ষায় নিয়ম মেনে রং ফর্সাকারী এই ক্রিমগুলো ব্যবহার করা উচিত। ফর্সা হওয়ার ক্রিম মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহারে ত্বকের যে সাত ধরনের ক্ষতি হয়:
স্কিন ক্যান্সারের আশঙ্কা বাড়ে: ফর্সা হওয়ার ক্রিমে হাইড্রোকুইনান এবং মারকিউর নামে এই দুটি ক্যামিকেল ব্যবহার করা উচিত। কিন্তু বাজারের বেশিরভাগ ক্রিমেই এই দুই উপাদানের পাশাপাশি অনিয়ন্ত্রিতভাবে স্টেরোয়েড এবং ট্রেটিনোইন নামে দুটি উপাদান মেশান হয়, যা কার্সিজেনিক। অর্থাৎ এই দুটি উপাদানের থেকে স্কিন ক্যান্সার হওয়ার আশঙ্কা থাকে। সেই সঙ্গে লিভারের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনাও বেড়ে যায়।
হাইপারপিগমেন্টটেশন: যেসব ফর্সা হওয়ার ক্রিমে ২ শতাংশের বেশি হাইড্রোকুইনান থাকে, সেসব ক্রিম টানা তিন মাস মুখে লাগালে মুখ ফর্সা হওয়ার পরিবর্তে কালো হয়ে যেতে পারে। সেই সঙ্গে মুখের পাশাপাশি সারা শরীরে হাইপারপিগমেন্টটেশনের মতো ত্বকের রোগ হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে।
চামড়া শক্ত হয়ে যায়: একাধিক কেস স্টাডি করে দেখা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে নানা ক্যামিকেল দিয়ে তৈরি এসব ক্রিম মুখে লাগালে ত্বক তার সৌন্দর্য হারাতে শুরু করে। সেই সঙ্গে চামড়া মোটা হয়ে যাওয়া, স্ট্রেচ মার্কসহ ত্বকের নানা সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে।
ক্ষত সারানোর ক্ষমতা হারায়: সুস্থ ত্বকের নিজের ক্ষত সারিয়ে নেয়ার ক্ষমতা রয়েছে। এই কাজটি স্কিন চারটি ধাপে করে থাকে। যেমন- হেমোস্টেসিস (ব্লাড ক্লটিং), ইনফ্লেমেশন, প্রলিফেরেশন এবং মেটুরেশন। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে ক্ষতিকর ক্যামিকেল দেয়া ফর্সা হওয়ার ক্রিম মুখে লাগালে ত্বকের ক্ষত সারানোর ক্ষমতা একেবারে নষ্ট হয়ে যায়। ফলে ত্বকের নানা রোগের প্রকোপও বৃদ্ধি পায়।
চুলকানি: হাইড্রাকুউনানের প্রভাবে চুলকানি, কালো ছোপ, মুখ লাল হয়ে যাওয়া, ড্রাই স্কিন এবং প্রচণ্ড জ্বালা হওয়ার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে।
ত্বকের সংক্রমণ বেড়ে যায়: ২০০৩ সালে ব্রিটিশ জার্নাল অব ডার্মাটোলজিতে প্রকাশিত এক রিপোর্ট অনুসারে, যারা ব্রণ, ডার্মাটাইটিস এবং একজিমার মতো ত্বকের রোগে ভুগছেন তারা যদি ফর্সা হাওয়ার ক্রিম ব্যবহার করেন, তাহলে এসব রোগের প্রকোপ আরও বৃদ্ধি পায়। ফলে মুখের সৌন্দর্য বাড়ার পরিবর্তে চোখে পরার মতো কমে যেতে শুরু করে।
নানা রোগের আশঙ্কা বাড়ে: যেসব রং ফর্সাকারী ক্রিমে মার্কারি রয়েছে, এমন ক্রিম বেশি ব্যবহারে কিডনির মারাত্মক ক্ষতি হয়। সেই সঙ্গে চুলকানি, ত্বকের রং খারাপ হয়ে যাওয়া এবং সংক্রমণের মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়।