বাইপাস অপারেশনের পর যা মেনে চলা জরুরি
প্রকাশ : ২২ জুন ২০১৭, ০২:০৪
১. অপারেশন পরবর্তী সময়ে সার্জন এর পরামর্শ অনুযায়ি নির্দিষ্ট পরিমান পানি পান করতে হবে, অতিরিক্ত পানি বা তরল জাতীয় খাদ্য গ্রহন করা যাবেনা।
২. পরামর্শ পত্র অনুযায়ী অবশ্যই নিয়মিত ওষুধ সেবন করতে হবে।
৩. অপারেশনের ৩/৪ দিন পর থেকে হাটতে পারবেন। একবারে বেশি হাটা যাবেনা, ক্লান্ত হবার আগেই বিশ্রাম নিন। আহারের পরপরই হাটাহাটি করা যাবেনা।
৪. এক সপ্তাহ পর পর হাঁটার সময় বাড়াবেন। অপারেশনের ৬ সপ্তাহ পর অন্য কোনো অসুবিধা না থাকলে দিনে ৩০ মিনিট থেকে এক ঘন্টা পরিমান হাঁটার চেষ্টা করুন। ক্লান্ত হলে সাথে সাথে বিশ্রাম নিন, ধীরে ধীরে সিঁড়ি ভাঙ্গার চেষ্টা করতে পারেন।
৫. ভারী পরিশ্রম পরিহার করুন, টিউবওয়েল চাপা যাবে না, তিন কিলোগ্রামের বেশি ওজন বহন করা থেকে বিরত থাকুন। সংসারের হাল্কা কাজ করা যেতে পারে। অপারেশন পরবর্তী প্রথম ৬ থেকে ৮ সপ্তাহ এই নিয়ম মেনে চলতে হবে।
৬. ওজন নিয়ন্ত্রনের ব্যপারে সতর্ক থাকুন।
৭. ধূমপান, জর্দা, তামাক পাতা, গুল জাতীয় পদার্থ চিরতরে পরিহার করুন।
৮. অপারশনের পর পর প্রথম দিকে সহবাস থেকে বিরত থাকুন, যখন বিনা ক্লান্তিতে ১ থেক ২ মাইল পথ হাটতে পারবেন অথবা দুইতালা সিঁড়ি ভাঙ্গতে পারবেন তখন সহবাস শুরু করতে পারবেন। সব কিছু স্বাভাবিক থাকলে সাধারনত অপারশনের ৬ থেকে ৮ সপ্তাহ পরে সহবাসের আসন পরিবর্তন করে সুবিধা মত নিয়মে সহবাস শুরু করা যায়। তবে খাবার পর পর বা দুশ্চিন্তাগ্রস্থ অবস্থায় সহবাস করা উচিত হবে না।
৯. বুকে চাপ বা ব্যথা অনুভব করলে অথবা শ্বাসকষ্ট হলে দ্রুত জিহবার নীচে জিটিএন স্প্রে (GTN spray) ব্যবহার করুন এবং সাথে সাথে হৃদরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
খাদ্য নির্দেশনা
বাইপাস করা রোগীদের খাদ্য তালিকা করোনারি রোগীদের খাদ্য তালিকার অনুরুপ।
পরিহার করতে হবে
কোলেস্টেরলসমৃদ্ধ ও সম্পৃক্ত চর্বি (saturated fat) যুক্ত খাবার, যেমন -ডিমের কুসুম, কলিজা, মাছের ডিম, খাসি বা গরুর চর্বিযুক্ত মাংস, হাস-মুরগির চামড়া, হাড়ের মজ্জা, ঘি, মাখন, ডালডা, মার্জারিন, গলদা চিংড়ি, নারিকেল এবং উপরোক্ত উপকরণ দিয়ে তৈরী খাবার।
বেশি করে খেতে হবে
আঁশ যুক্ত খাবার, যেমন সব রকমের শাক, সব রকমের সবজি (বিশেষ করে খোসা সহ সবজি যেমন ঢেড়স, বরবটি, শিম, কচুর লতি ইত্যাদি) , সব রকমের ডাল, সব ধরনের ফল বিশেষ করে টক জাতীয় ফল। সব রকমের সমুদ্রের মাছ, ছোটো মাছ, মাছের তেল। সব রকমের উদ্ভিজ তেল, যেমন কর্ণ অয়েল, সানফ্লাওয়ার অয়েল, সয়াবিন অয়েল (পাম বা নারিকেল তেল নয়)।
হিসাব করে খেতে হবে
শর্করা জাতীয় খাবার যেমন ভাত, রুটি, আলু, চিনি ইত্যাদি। মিষ্টি ফল যেমন পাকা আম, পাকা কলা, পাকা পেপে ইত্যাদি। দুধ ও দুধের তৈরী খাবার।
পরিহার করতে হবে
বিভিন্ন ধরনের ফাস্ট ফুড, যেমন বার্গার, স্যান্ডউয়িচ, কেক, পুডিং, আইসক্রিম, বোতলজাত কোমল পানিয় ইত্যাদি। মনে রাখতে হবে এলকোহল বা তামাক জাতীয় দ্রব্য কোনো খাদ্য নয়, তাই এইসব পদার্থ থেকে যেকোনো মুল্যে দূরে থাকতে হবে।
ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত রোগীরা তাদের জন্য নির্ধারিত খাদ্য তালিকা দেখে উপরের তালিকার সঙ্গে মিলিয়ে খাদ্য তালিকা তৈরী করে নিতে পারেন। রক্তে সুগার বেড়ে যায় এমন যেকোনো খাবার হৃদরোগের জন্যও পরিহার করা আবশ্যকীয়।