করোনায় আতংকিত নয়, জেনে নিন কাদের পরীক্ষা করা প্রয়োজন?

প্রকাশ : ২৯ মার্চ ২০২০, ০০:৩১

জাগরণীয়া ডেস্ক

চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহর থেকে উৎপত্তি হওয়া মরণঘাতী করোনা ভাইরাসের সংক্রামণে আজ স্থবির পুরো বিশ্ব। এই ভাইরাস প্রাণ নিয়েছে ২৮ হাজারেরও বেশি মানুষের। তবে কোভিড-১৯ প্রতিরোধে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকাই একমাত্র উপায়। কেউ আক্রান্ত কিনা সে বিষয়ে নিশ্চিত হতে হলে প্রয়োজন পরীক্ষা করার। কিন্তু সাধারণ সর্দি-কাশির মতো লক্ষণ দেখা দিলেই মানুষ বিচলিত হয়ে পড়ছেন। অল্পতেই আতংকিত না হয়ে জেনে নিন কাদের এই পরীক্ষা করা প্রয়োজন-

বয়স্কদের যেসব সাবধানতা নেয়া উচিত:
৬৫ বছরের বেশি বয়সী কারো শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা দেখা দিলে অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া প্রয়োজন। বিশেষ করে যারা বৃদ্ধাশ্রমে থাকেন তাদের ক্ষেত্রে সংক্রমণের আশঙ্কা বেশি থাকে। এই সময়ে বৃদ্ধাবাসগুলিতে বাইরের লোকেদের সঙ্গে সব ধরনের দেখা-সাক্ষাৎ বন্ধ রাখা দরকার। বহিরাগতদের মাধ্যমে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা বেশি থাকে।

এই ভাইরাসের সংক্রমণে বয়স্কদের মৃত্যু হার বেশি কেন:
বয়স্কদের রক্তে শ্বেত কণিকার উপস্থিতি কম থাকায় শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বয়সের সঙ্গে সঙ্গে কমে আসে। তা ছাড়া, শরীরে একাধিক ক্রনিক রোগের উপস্থিতি থাকলে এই ভাইরাস দ্রুত সেই ব্যক্তিকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়। শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা ও সেপ্টেসেমিয়ার কারণে মৃ্ত্যু ঘটে অধিকাংশের।

সর্দি-কাশি হলেই কি করোনা সংক্রমণের পরীক্ষা করা উচিত:
কোনো বয়স্ক ব্যক্তির জ্বর, শুকনো কাশি, গলা ধরার মতো উপসর্গ হলেই দেখতে হবে ওই ব্যক্তি সম্প্রতি দেশে বা দেশের বাইরে সফর করেছিলেন কি না। অথবা তিনি কোনোসংক্রমিত ব্যক্তির সংস্পর্শে এসেছেন কিনা। যদি তা হয়, তা হলে দ্রুত সেই ব্যক্তির পরীক্ষা করা উচিত। যদি ওই ব্যক্তির এক বা একাধিক অঙ্গ খারাপ হওয়ার মতো উপসর্গ, শ্বাসকষ্ট, মূত্রের পরিমাণ কমে যাওয়া, বুকে অস্বস্তি, ডায়েরিয়া ও জ্বরের উপসর্গ থাকে তা হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। তবে এখন যেভাবে ভাইরাস ছড়াচ্ছে, তাতে সংক্রমণ এড়াতে বয়স্ক মানুষদের রুটিন পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে না যাওয়াই বাঞ্ছনীয় ।

এই ভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ে সবার চিন্তার কারণ:
অন্যান্য ফ্লু-র চেয়ে এক মানবদেহ থেকে অন্য মানবদেহে এই ভাইরাসের ছড়িয়ে পড়ার হার অত্যন্ত বেশি। অর্থাৎ এক জন আক্রান্ত ব্যক্তি গড়ে দুই থেকে আড়াই জনকে সংক্রমিত করতে সক্ষম। ৮০ শতাংশ আক্রান্তের দেহে এর উপসর্গ দেখা যায় না অথবা খুব কম উপসর্গ দেখা যায়। উপসর্গ নেই এমন আক্রান্ত ব্যক্তি নিজের অজান্তে ১৪ দিনে ১৬ হাজার মানুষকে সংক্রমিত করতে পারেন। তবে এই ভাইরাসে আক্রান্তদের মৃত্যুহার খুব বেশি নয়, ২-৩ শতাংশ। আক্রান্তদের মধ্যে কেবল ১০-১৫ শতাংশ ব্যক্তিকেই আইসিইউতে ভর্তি করার প্রয়োজন হয়।

কাদের পরীক্ষা করা প্রয়োজন:
* গত দু সপ্তাহে বিদেশ থেকে এসেছেন এবং জ্বর, সর্দি-কাশি, শ্বাসকষ্টের মতো উপসর্গ রয়েছে
* সংক্রমিত ব্যক্তির সংস্পর্শে এসেছেন কিন্তু উপসর্গ নেই এমন ব্যক্তির ৫ এবং ১৪ দিনের মাথায় পরীক্ষা করাতে হবে
* করোনা-সংক্রমিত রোগীর চিকিৎসা করছেন এমন স্বাস্থ্য কর্মী যাদের দেহে উপসর্গ দেখা দিয়েছে
* জ্বর ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন এবং দশ দিন কাশির সমস্যা রয়েছে
* বাড়িতে থাকা সংক্রমিত রোগীর দেখভাল করছেন যারা।

সূত্র: আনন্দবাজার

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত